আলাপন
প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০৬ মার্চ ২০২৪ ১৪:৫০ পিএম
ইমরান মাহমুদুল
২০০৮ সালে চ্যানেল আই সেরা কণ্ঠের মাধ্যমে সংগীতে পদার্পণ করেন ইমরান মাহমুদুল। তারপর বলা চলে, এলেন-দেখলেন-জয় করলেন। সংগীতের প্রায় সব মাধ্যমেই একের পর এক কাজ করে চলেছেন। সম্প্রতি এসেছে হাবিব ওয়াহিদের সঙ্গে তার নতুন গান। ইমরানের সংগীতচর্চা ও নানা বিষয় নিয়ে সাক্ষাৎকারটি লিখেছেন লিমন আহমেদ-
নতুন গানের ফিডব্যাক কেমন?
‘বোকামন’ গানটি দারুণ মিষ্টি করে গেয়েছেন হাবিব ভাই। ভালোবাসা দিবসের জন্য পারফেক্ট গান। আর ভারতের রজত ঘোষ কথাগুলো লিখেছেন দারুণ। সৈকত রেজা এ গানের ভিডিওটিও করেছেন দৃষ্টিনন্দন। খুব ভালো সাড়া পাচ্ছি গানটি নিয়ে। আজকাল সিনেমার গানই বেশি উপভোগ করেন শ্রোতারা। তবে ভালো গান হলে অডিও গানও কিন্তু খুব ভালো রেসপন্স পায়। আমাদের বোকামন তেমনই একটি গান।
হাবিবের সঙ্গে গান করার অভিজ্ঞতা কেমন ছিল?
এক কথায় অসাধারণ। ক্যারিয়ারের শুরুতেই হাবিব ভাইকে গুরু মানি আমি। অনেক কিছু শেখার সুযোগ হয়েছে তার সান্নিধ্যে। নিজের প্রিয় শিল্পীর জন্য সুর-সংগীত করার অভিজ্ঞতা আসলে বর্ণনা করার মতো নয়। হাবিব ভাই আমার গুরু। তার কম্পোজিশনে আমি ক্যারিয়ারের শুরুতে গেয়েছি। তিনি আমার কম্পোজিশনে গাইবেন, এটা আমার কাছে ছিল স্বপ্নের মতো। আজ আমি যত বড় হই না কেন, ওনার কাছে তো ছোট্ট শিশু। ফলে সে অনুভূতি বা সম্মান নিয়েই কাজটি করার চেষ্টা করেছি। এটা ছিল আমার ড্রিম প্রজেক্ট। এক থেকে দেড় বছরের বেশি সময় নিয়ে প্রজেক্টটি করেছি।
নতুন বছরের অনেকটা সময় তো কেটে গেল। কাজের ব্যস্ততা কেমন? শ্রোতা-দর্শক নতুন কী পেতে যাচ্ছে?
জানুয়ারির পুরোটাই স্টেজ শোর ব্যস্ততা নিয়ে কেটেছে। ফেব্রুয়ারিতেও ভালো ব্যস্ততা ছিল। এখন টানা শো রয়েছে। এর বাইরে সিনেমার গান নিয়ে ব্যস্ততা আছে। নিজে সুর-সংগীত যেমন করছি, অন্যদের আয়োজনেও গান গাইছি।
অডিও নাটক সিনেমা- তিন আঙিনায়ই নিয়মিত কাজ করছেন। কোথায় কাজ করতে বেশি স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন?
আমার কাছে গান করতে পারাটাই আনন্দের। সব সময় গান করতে চাই। নতুন নতুন সুর আবিষ্কার করতে চাই। শ্রোতাদের মুগ্ধ করতে চাই। প্ল্যাটফর্ম যা-ই হোক। তবে সিনেমার গানে রেসপন্সটা একটু বেশি থাকে। আর মাধ্যম হিসেবে সিনেমা সব সময়ই বড়। আমার বেসিকটাই হচ্ছে সিনেমার গান। তবে আমি সব জায়গায়ই প্যারালালভাবে কাজ করছি। নাটকের গান আমার সচরাচর করা হতো না। সম্প্রতি অনেক নাটকের গানেই ভয়েস দিয়েছি।
গায়কের পাশাপাশি সুর ও সংগীত পরিচালনাও করেন। এতে কাজটি নিয়ে বেশি চাপ তৈরি হয় কি?
দায়িত্ব বেশি হলে চাপ তো বেশি নিতেই হয়। যখন আমি গানটির সুর ও সংগীত করছি এবং নিজে গাইছি তখন তিনটি বিভাগের সাফল্য বা ব্যর্থতার চ্যালেঞ্জ থাকে। তবে আমি এটাকে পজিটিভলি নিই। উপভোগ করি। কাজের প্রেশার থাকলে আমার ভালো লাগে। মনে হয় আমি তখন ভালো থাকি।
গেল কয়েক বছরে অডিও গানের সংখ্যা কমেছে, অস্তিত্ব হারাচ্ছে বলে মনে করছেন অনেকে। আপনার কী মনে হয়?
আমার জায়গা থেকে প্রয়োজন বা চাহিদা কমেছে কি না কখনও অনুভব করিনি। আমার যারা ভক্ত রয়েছেন, তারা যেভাবে আমাকে চান সেভাবেই পান বা আমি যেভাবে দিই তারাও সেভাবেই গ্রহণ করেন। প্রতি বছরই আমার তিন-চারটা অডিও এবং দু-তিনটা সিনেমার গান থাকে। যার কারণে সেভাবে আমি কখনও কমতি অনুভব করিনি। সার্বিকভাবে কমছে কি না, ঠিক বলতে পারব না। তবে মনে হচ্ছে সিনেমার গানের আবেদনটা বেড়েছে আগের তুলনায়।
গানের মডেলের পাশাপাশি বিজ্ঞাপনেও আপনাকে পাওয়া যায়। নাটক-সিনেমায় অভিনয়ে কখনও দেখা যেতে পারে কি?
গানের মডেল হওয়া একরকম আবার বিজ্ঞাপনের মডেল হওয়া আরেক রকম অভিজ্ঞতা। অভিনয়টা আমাকে টানে না। বুঝি না, শিখিওনি কখনও। তবে দেখতে ভালোবাসি অনেক, সেটা নাটক হোক কিংবা সিনেমা। আমি সময় পেলেই দেখি। কিন্তু নাটক-সিনেমায় অভিনয় করা নিয়ে কোনো পরিকল্পনা নেই।
একটা গান টিকে থাকার মূলমন্ত্র কী বলে আপনি মনে করেন?
একটা গান টিকে থাকার মূলমন্ত্র আমার মনে হয় তিনটি। গানের গায়কী, সুর এবং কথা। অনেক গানই জনপ্রিয় হয় কিংবা হচ্ছে, সেটা ভিন্ন বিষয়। কিন্তু যদি কোনো গান টিকে থাকার প্রশ্ন আসে, সে ক্ষেত্রে অবশ্যই এ তিনটি বিষয় খুব খেয়াল করতে হবে। কারণ একটা গান কত দিন টিকবে তা গানের কথা, সুর, গায়কী থেকেই বোঝা যায়। হিট হলেই গান কালজয়ী হয় না।