প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০৫ মার্চ ২০২৪ ১১:৫৮ এএম
তৌকীর আহমেদ
মঞ্চ ও টেলিভিশনে তার অভিনয় মুগ্ধ করেছে তিন দশকের দর্শককে। এক দশক ধরে তিনি নির্মাতা হিসেবেও নির্মাণের মুনশিয়ানার প্রমাণ রেখেছেন। নাটক নির্মাণের পাশাপাশি চলচ্চিত্র নির্মাণেও পেয়েছেন সাফল্য। সর্বশেষ ‘স্ফুলিঙ্গ’ সিনেমা দিয়ে তিনি রাঙিয়েছেন দর্শকের মন। বলছি সবার প্রিয়মুখ তৌকীর আহমেদের কথা। আজ এ অভিনেতা-পরিচালকের ৫৯তম জন্মদিন।
তৌকীর আহমেদের জন্ম ১৯৬৬ সালের ৫ মার্চ। তিনি ঝিনাইদহ ক্যাডেট কলেজ থেকে এসএসসি ও এইচএসসি সম্পন্ন করেন। তারপর স্থাপত্যে স্নাতক অর্জন করেন বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) থেকে। তৌকীর আহমেদ ১৯৯৯ সালে ভালোবেসে বিয়ে করেন নন্দিত মডেল, অভিনেত্রী ও চিত্রশিল্পী বিপাশা হায়াতকে। সেই সুখের দাম্পত্য জীবন আলোকিত করে রেখেছে তাদের এক কন্যা আরিশা আহমেদ ও পুত্র আরীব আহমেদ। তার শ্বশুর কিংবদন্তি অভিনেতা আবুল হায়াত। শ্যালিকা অভিনেত্রী নাতাশা হায়াত। নাতাশা বিয়ে করেছেন আরেক জনপ্রিয় অভিনেতা শাহেদ শরীফ খানকে।
স্থাপত্য নিয়ে পড়াশোনা করলেও অভিনয় ও নির্মাণের স্বপ্ন ছিল তৌকীরের হৃদয়ের গহিনে। তাই নিজেকে ছাত্রাবস্থায়ই তৈরি করেছিলেন মঞ্চে। ঝিনাইদহ ক্যাডেট কলেজে পড়াকালে মঞ্চনাটকে অভিনয় শুরু করেন। এরপর ১৯৯৫ সালে লন্ডনের রয়্যাল কোর্ট থিয়েটার থেকে মঞ্চনাটক পরিচালনার প্রশিক্ষণ নেন এবং ২০০২ সালে নিউইয়র্ক ফিল্ম একাডেমি থেকে চলচ্চিত্রে ডিপ্লোমা সম্পন্ন করেন।
তৌকীর আহমেদ আশির দশকের মাঝামাঝি বিটিভিতে প্রচারিত নাটকগুলোর রোমান্টিক চরিত্রের শীর্ষ অভিনেতা হিসেবে প্রতিষ্ঠা লাভ করেন। ১৯৯৬ সালে তানভীর মোকাম্মেল পরিচালিত বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক ‘নদীর নাম মধুমতী’ চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন। একই বছর আবুল হায়াত পরিচালিত প্রথম নাটক ‘হারজিত’-এ অভিনয় করেন। এতে তার বিপরীতে অভিনয় করেন স্ত্রী বিপাশা হায়াত।
পরে তানভীর মোকাম্মেল পরিচালিত দেশ বিভাগের প্রেক্ষাপটে নির্মিত ‘চিত্রা নদীর পারে’ (১৯৯৯) ও সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহর বিখ্যাত উপন্যাস অবলম্বনে নির্মিত ‘লাল সালু’ (২০০১) চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন। এ ছাড়া নিজের পরিচালিত ‘জয়যাত্রা’ ছবিতে ট্রাকড্রাইভারের চরিত্রে অভিনয় করেন।
২০০০ সালের পর অভিনয়ের পাশাপাশি তিনি নাট্য ও চলচ্চিত্র পরিচালক হিসেবেও আত্মপ্রকাশ করেন। চলচ্চিত্রে পরিচালক
হিসেবে তার অভিষেক ঘটে ২০০৪ সালে জয়যাত্রা পরিচালনার মাধ্যমে। চলচ্চিত্রটি আমজাদ হোসেন রচিত ‘একই’ নামের উপন্যাস অবলম্বনে নির্মিত। এ চলচ্চিত্র পরিচালনার মাধ্যমে তিনি ২০০৮ সালে প্রদত্ত জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে শ্রেষ্ঠ প্রযোজক, শ্রেষ্ঠ পরিচালক ও শ্রেষ্ঠ চিত্রনাট্যকার বিভাগে পুরস্কার অর্জন করেন।
সম্প্রতি তিনি মঞ্চে নতুন নাটক নিয়ে ব্যস্ত রয়েছেন। এবারের প্রকল্প ‘তীর্থযাত্রী’। হুমায়ূন কবির রচিত ‘তীর্থযাত্রী তিনজন তার্কিক’ বই অবলম্বনে নাটকটির উদ্বোধনী প্রদর্শনী হয়েছে নিউইয়র্কের কুইন্স থিয়েটারের মূল মঞ্চে। নাটকটি নির্মাণ করছে নক্ষত্র।
সর্বশেষ তৌকীর আহমেদকে অভিনয় করতে দেখা গেছে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বায়োপিকে। শ্যাম বেনেগাল পরিচালিত সিনেমাটিতে তৌকীর অভিনয়ের মুনশিয়ানা দেখিয়েছেন হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর চরিত্রে।