জনপ্রিয়তা ও দক্ষতা দুটোই প্রয়োজন : তানজিন তিশা

হালের জনপ্রিয় অভিনেত্রী তানজিন তিশা। তার নাটক মানেই মিলিয়ন ভিউয়ের নিশ্চয়তা। তাকে নিয়ে নির্ভার থাকেন প্রযোজক ও পরিচালকরা। যার ফলে কয়েক বছর ধরেই নাটকে চাহিদার শীর্ষে থাকা অভিনেত্রীদের অন্যতম তিনি। আসছে রোজার ঈদ। এ উপলক্ষে নাটক ও ওটিটির কাজে ব্যস্ততা বেড়েছে তিশার। কাজের ফাঁকে তিনি কথা বলেছেন প্রতিদিনের বাংলাদেশের সঙ্গে। তাকে নিয়ে লিখেছেন লিমন আহমেদ-

নতুন বছরে একটু কি কম দেখা যাচ্ছে নাটকে?

কাজের পরিমাণ কিছুটা কমেছে বটে। তবে আমি মনে করি, মানটা বেড়েছে। এ বছর যে কাজগুলো এসেছে এখন পর্যন্ত, ভালো সাড়া পেয়েছি। এগুলোর গল্প ও চরিত্র মনে ধরেছে। কাজ করেও আরাম পেয়েছি। 

এ বছর কাজের পরিকল্পনা কেমন?

আমি মনে করি পরিকল্পনা কিংবা একটি গোল ফিক্স না করলে আসলে কিছু করা যায় না। আমিও পরিকল্পনা করে কাজ করি। এ বছর নিয়েও অনেক পরিকল্পনা রয়েছে। ক্যারিয়ার নিয়ে নতুন করে ভাবছি, নতুন উদ্যমে আবার কাজ শুরু করব। এখন ফোকাস থাকবে শুধু কাজের দিকে। আমি বিশ্বাস করি, আমার এই ক্যারিয়ারে দর্শকদের অনেক কিছু দেওয়া বাকি, তাদের জন্য অনেক কিছু করা বাকি। নিজেকে নতুনভাবে উপস্থাপন করতে চাই। বলার চেয়ে কাজে দেখানোটাই শ্রেয়। এই বছর সেটাই দেখতে পাবে দর্শক। 

অনেক দিন ধরেই জনপ্রিয়তা নিয়ে কাজ করে যাচ্ছেন। জনপ্রিয় এবং ভালো অভিনেত্রী; দুই পরিচয়ের কোনটিকে আপনি বেশি গুরুত্ব দেন?

আমার কাছে দুটোই গুরুত্বপূর্ণ। একজন অভিনেত্রীকে যেমন দক্ষ হতে হয়, তেমনি তার জনপ্রিয়তারও প্রয়োজন আছে। কাজ করে তখনই তৃপ্তি আসে, যখন দর্শক সেটা দেখেন, উপভোগ করেন। ভালো-মন্দ প্রতিক্রিয়া দেন। সেদিক থেকে জনপ্রিয়তাকে এড়ানোর সুযোগ নেই। পাশাপাশি নানাভাবেই জনপ্রিয় হওয়াটা এখন সহজ। তাই জনপ্রিয় হলেই হবে না, নিজের দক্ষতা বাড়ানোর প্রতিও মনোযোগী হওয়া উচিত।

আপনি নিজেকে কতটুকু ইম্প্রুভ করতে পেরেছেন বলে মনে হয়?

আমি প্রতিনিয়ত চেষ্টা করি ভালো কাজ করার। আজকের চেয়ে আগামীকালের কাজটি যেন আরও বেটার হয়, সেটা ভাবি। একটা ভালো গল্প, চরিত্র, টিম দক্ষ কাজে হেল্প করে। এজন্য কোনো কাজ শুরুর ক্ষেত্রে আমি বিষয়গুলো মাথায় রাখি। সম্প্রতি নারীকেন্দ্রিক গল্পে কিছু কাজ করেছিলাম যেগুলো থেকে অনেক বেশি ইতিবাচক সাড়া পেয়েছি। আমরা তো দর্শকদের জন্যই কাজ করি, কোনো কাজ যখন তারা পছন্দ করেন, সেগুলো নিয়ে ইতিবাচক মন্তব্য করেন, তখনই কিন্তু কাজটার সার্থকতা। আমার মনে হয়, কিছুটা হলেও অভিনয়ে দক্ষ হতে পেরেছি। তবে শিল্পী কখনও তৃপ্ত হয় না। প্রতিটি কাজ দেখার সময় ভাবনা কাজ করে যে, আরও অনেক ভালো কিছু করা যেত। এই যে তাড়নাটা এটাই আসলে প্রেরণা।

অভিনয়ের ক্ষেত্রে সহ-অভিনেতা কে, সেটাকে গুরুত্ব দেন?

না। আমি শিল্পী, যার সঙ্গে কাজ করব তিনিও শিল্পী। গল্প ও চরিত্রের সঙ্গে মানানসই হলে যেকোনো অভিনেতার সঙ্গেই কাজ করি আমি। তবে অনেকে এমন আছেন যাদের সঙ্গে অনেক কাজ করা হয়েছে। একটা বোঝাপড়া তৈরি হয়েছে। তাদের সঙ্গে কাজ করলে একটা ইজি জোনে আছি মনে হয়। সেটা অনেক পরিচালকের বেলায়ও প্রযোজ্য, অনেক টিমের বেলায়ও। 

ব্যক্তিগত নানা ঝামেলায় আপনাকে দেখা গেছে। সেগুলোর প্রভাব কি কাজের ক্ষেত্রে পড়ে না?

নানা রকম চাপ থাকলে প্রভাবটা পড়ে যায়। এজন্য চেষ্টা করি নিজেকে সব রকম বিতর্কের বাইরে রাখতে। কাজটা মন দিয়ে করে যেতে চাই। যখন শুটিংয়ে থাকি, তখন সেটাতেই মনোনিবেশ করার চেষ্টা করি। ঝামেলা সবার জীবনেই থাকে। সেগুলো পাশ কাটিয়েই চলতে হয়।

সম্প্রতি ‘পয়জন’ নামের একটি ওয়েব ফিল্মে কাজ করেছেন। সে কাজটি সম্পর্কে জানতে চাই

দীপ্ত প্লের বেশ কয়েকটি প্রজেক্ট নিয়ে কথাবার্তা চূড়ান্ত হয়েছে। তাদের কয়েকটি প্রজেক্ট করছি আমি। এর মধ্যে ‘পয়জন’ একটি। এটি একটি নারীর সার্ভাইভালের গল্প বা নারীর টিকে থাকার গল্প। একজন নারী সমাজে চলতে গিয়ে কত কিছুর মুখোমুখি হয় এবং সেগুলো কীভাবে প্রতিকার করে, সেসব নিয়েই এই ওয়েব ফিল্ম। এখানে আমার যে চরিত্রটা সেটা অবশ্যই অনেক চ্যালেঞ্জিং এবং আই ট্রাইড মাই বেস্ট। এখানে আমার চরিত্রের অনেকগুলো লেয়ার দেখতে পাবে দর্শক। এখনই কিছু বলতে চাই না। তবে টিজার এলে দর্শকরা নিজেরাই বুঝতে পারবে। সঞ্জয় দাদার সঙ্গে এর আগেও আমার বেশ কয়েকটি কাজ হয়েছে। এ রকম একটি গল্প এবং চরিত্রে আমাকে সুযোগ দেওয়ার জন্য উনাকে কৃতজ্ঞতা। উনার টিমটা অনেক বেশি গোছানো, যার কারণে কাজ করেও অনেক ভালো লাগে।

ভক্তরা আপনাকে সিনেমায় কবে দেখবে?

অনেক গুঞ্জন নানা সময় ছড়িয়েছে সিনেমায় কাজ করা প্রসঙ্গে। কিন্তু সবই আসলে গুজব। ওটিটি দিয়েই নতুন বছরটা শুরু করেছি। কয়েকটি প্রজেক্ট চূড়ান্ত হয়েছে। এখন শুধু শুটিং শুরু করার পালা। আর সিনেমা নিয়ে যদি বলি তাহলে বলব, আমার দর্শকদের জন্য সারপ্রাইজ আছে। এই বছরেই সিনেমা করব। একদিক থেকে আমিই মনে হয় অনেক বেশি ভাগ্যবতী, যার অনেক ভক্ত কিংবা দর্শক চায় যে, আমি সিনেমা করি। সেজন্যই একটু দেখেশুনে বড়পর্দায় পা রাখতে চাই।