প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ১৪:২৪ পিএম
১৯৯৭ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি প্রাচ্যনাটের যাত্রা। এ দীর্ঘ পথচলায় দলটি ৩৬টি প্রযোজনা উপহার দেয় যা দর্শক ও সুধীমহলে বেশ প্রশংসিত হয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো সার্কাস সার্কাস, এ ম্যান ফর অল সিজনস, কইন্যা, রাজা এবং অন্যান্য, কিনু কাহারের থেটার, পুলসিরাত ও খোয়াবনামা।
এবারে নাট্যদলটির ২৭ বছর পূর্ণ হবে। এ উপলক্ষে ২১ ফেব্রুয়ারি মঞ্চে আসবে পুলসিরাত। এটি প্রাচ্যনাটের ৩৫তম প্রযোজনা। ফিলিস্তিনি লেখক ঘাসান কানাফানির উপন্যাস ম্যান ইন দ্য সান অবলম্বনে পুলসিরাত অনুবাদ করেছেন মাসুমুল আলম। এর নাট্যরূপ দিয়েছেন মনিরুল ইসলাম রুবেল, নির্দেশনায় আছেন কাজী তৌফিকুল ইসলাম ইমন।
২১ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যা ৭টা ৩০ মিনিটে মহিলা সমিতির ড. নীলিমা ইব্রাহিম মিলনায়তনে নাটকটি মঞ্চস্থ হবে। টিকিট বুকিং শুরু হয়েছে। টিকিটের জন্য যোগাযোগ করা যাবে ০১৩১৩৭৭৪৪০০ নম্বরে।
এ নাটকের গল্পে দেখা যাবে : অসংখ্য ভাগ্যবিড়ম্বিত মানুষের মতোই ওরা তিনজনÑআবু কায়েস, আসাদ ও মারওয়ান নিজেদের ভাগ্যান্বেষণের জন্য ফিলিস্তিন থেকে স্বপ্নের কুয়েতে পাড়ি জমাতে চায়। তিনজন বয়সে এবং প্রজন্মে আলাদা হলেও এক জায়গায় মিল- সবাই বিড়ম্বিত উদ্বাস্তু।
আবু কায়েস তার দুই সন্তান ও এক স্ত্রী রেখে বন্ধুর পরামর্শে নতুন এক স্বচ্ছন্দময় সচ্ছল জীবনের আকাঙ্ক্ষা নিয়ে কুয়েত পাড়ি দিতে চায়। তার স্বপ্ন তার সন্তানরা স্কুলে পড়াশোনা করতে পারবে। বয়সের কারণেই হোক বা চরিত্রগত বৈশিষ্ট্য, স্বভাবে বেশ নরম ও কিছুটা ভীতু আবু কায়েস। তার ঠিক বিপরীত চরিত্রের আসাদ। বয়সে সে তরুণ। কিছুটা রাগী এবং স্বভাবে বেশ কৌশলী। সে এর আগেও সীমান্ত পার হয়ে অবৈধ পথে কুয়েত যেতে চেষ্টা করেছিল। নিশ্চিত ও উন্নত ভবিষ্যৎ, চাচাতো বোনকে বিয়ে করার স্বপ্ন; একই সঙ্গে চাচার করা অপমান তাকে যুগপৎ তাড়িত করে। অন্য দিকে ১৬ বছরের মারওয়ান স্কুলের পড়াশোনা ছেড়ে নিজের পরিবারের দায়িত্বের চাপে পাড়ি দিতে চায় স্বপ্নের কুয়েতে। নিজের বড় ভাই কুয়েত থাকে। সেখানে সে কাজ করে দেশে পরিবারের জন্য টাকা পাঠাত। কিন্তু বিয়ে করে টাকা পাঠানো বন্ধ করে দেয়। তার বাবা সন্তানদের ভরণপোষণে অপারগ হয়ে নিজের সচ্চল জীবনের স্বপ্নপূরণে এক পঙ্গু মহিলাকে বিয়ে করে আলাদা হয়ে যায়। মারওয়ান তাই পরিবারকে বাঁচাতে অর্থ উপার্জনের স্বপ্ন নিয়ে পাড়ি দিতে চায় কুয়েত।
তারা সবাই ঘটনাক্রমে আবুল খাইজুরানের শরণাপন্ন হয়। আবুল খাইজুরান পানিবাহী ট্যাংকলরির ড্রাইভার। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে সে ব্রিটিশ বাহিনীর হয়ে লড়েছে। আবার ফিলিস্তিন প্রতিরোধ যোদ্ধাদের সঙ্গেও কাঁধ মিলিয়েছে। সেখানে একবার আকস্মিক হামলায় সে বোমা বিস্ফোরণের শিকার হয়। এ আবুল খাইজুরান কায়েস, আসাদ আর মারওয়ানকে স্বপ্নের কুয়েত পর্যন্ত নিয়ে যেতে এগিয়ে আসে। বিনিময়ে তিনজনের থেকে ১০ দিনার করে নেবে। তার পানিবাহী লরিতে করে সে সীমান্ত পাড়ি দেবে তিনজনকে নিয়ে। খাইজুরানের জন্য সেটা কোনো কষ্টকর কিছু না। আগস্টের প্রচণ্ড গরমে রোদে পুড়ে মরুভূমির পথে লরিটি এগিয়ে যায়। তিনটি হতভাগ্য বিড়ম্বিত জীবন ছুটে চলে স্বপ্নময় এক নতুন সচ্ছল জীবনের প্রত্যাশায়। পাড়ি দিতে ছুটে চলে এক পুলসিরাত!