প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ১৫:৩৭ পিএম
আপডেট : ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ১৫:৩৯ পিএম
চলচ্চিত্রের কারখানা বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশন (বিএফডিসি)। কিন্তু কয়েক বছর ধরে ব্যস্ততা কম এখানে। নেই আগের মতো শুটিং, তারকাদের আনাগোনা। এফডিসি-সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সংগঠন-সমিতিও আগের মতো আর মুখরিত হয় না আড্ডা-আয়োজনে। সংগঠন-সমিতির নির্বাচন এলে কিছুটা জমজমাট চেহারা ফিরে পায় বটে। নানা মুখরোচক প্রতিশ্রুতি দিয়ে নির্বাচন শেষ হলে আবার সুনসান নীরবতায় ঢাকা পড়ে সিনেমা উৎপাদনের জন্য জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হাতে গড়া এফডিসি।
এখন শুরু হচ্ছে সেই মৌসুম। এফডিসির চারদিকে নির্বাচনের আমেজ। এ মুহূর্তে ফিল্ম ক্লাবের নির্বাচন চলছে। এ ক্লাবের অবস্থান এফডিসির বাইরে। তবে নায়ক, নায়িকা, প্রযোজক, পরিচালক থেকে শুরু করে সিনেমার নানা বিভাগের মানুষ এ ক্লাবের সদস্য। তাই তাদের রোজকার নির্বাচনী আড্ডার একটা বড় অংশ চলে এফডিসিতে। সেখানে বিকাল থেকেই জড়ো হন অনেকে। চলে আড্ডা, প্রচার।
এ নির্বাচন কেন্দ্র করে অন্য সংগঠন-সমিতিগুলোও নিজেদের নির্বাচনের প্রস্তুতি সেরে নিচ্ছে, চালাচ্ছে প্রচার। যার মধ্যে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচন উল্লেখযোগ্য। চলচ্চিত্র-শিল্প-সংশ্লিষ্টদের সংগঠন বাংলাদেশ ফিল্ম ক্লাব লিমিটেডের নির্বাচন ১৬ ফেব্রুয়ারি। বিএফডিসিতেই এ নির্বাচন হবে। এবারের নির্বাচনে অংশ নেবে দুটি প্যানেল। একটি লিপু-নাদিম পরিষদ। এ প্যানেলে লড়বেন ১০ জন নির্বাহী সদস্য। তারা হলেন আসিকুর রহমান নাদিম, রশিদুল ইসলাম হলি, আলমগীর বাচ্চু, নজরুল ইসলাম, সাফি উদ্দিন সাফি, পলি, জাহান এম এ রহমান, এনামুল হক শাহ্ ও জসিম আহমেদ।
এ প্যানেল থেকে কার্যনির্বাহী সদস্য পদে নির্বাচন করছেন চিত্রনায়িকা পলি। প্রচারে বেশ সরব এ নায়িকা নির্বাচনে অংশ নেওয়া প্রসঙ্গে বলেন, ‘আমি ব্যক্তিগতভাবে ফিল্ম ক্লাবসহ ইন্ডিয়া বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ ক্লাব, ক্যাপিটাল ক্লাব, জয়ন্টা ক্লাব, লেডিস ক্লাব, কুষ্টিয়া ক্লাব ও খুলনা ক্লাবের মেম্বার। ক্লাব কালচার আমি খুব এনজয় করি। আর যেহেতু ফিল্ম ক্লাব আমাদের চলচ্চিত্রসংশ্লিষ্ট লোকজনের প্রতিষ্ঠান, অতীতে এখানে নায়িকা মৌসুমী, পপি ও রত্না নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন। তাই ভাবলাম এবার আমিও নির্বাচন করি। ১৬ ফেব্রুয়ারি হবে এ নির্বাচন। আশা করি সবাই আমার পাশে থাকবেন।’
আরেক প্যানেল হলো সামসুল আলম-ইকবাল পরিষদ। এখানে সভাপতি পদে লড়বেন প্রযোজক নেতা সামসুল আলম ও কার্যনির্বাহী সদস্য পদে মো. ইকবাল হোসেন জয়। ২০১১ সাল থেকে শুরু করে ২০১৪ সাল পর্যন্ত একটানা চারবার ফিল্ম ক্লাবের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন সামসুল আলম। তিনি বলেন, ‘আমার আমলেই ক্লাবের সাফল্য বেশি। কারণ ক্লাবের সুন্দর একটি মনোরম পরিবেশ থেকে শুরু করে সদস্যদের স্বার্থরক্ষায় সব ধরনের কাজ করেছি। মাঝে চলচ্চিত্র প্রযোজক সমিতি নিয়ে ব্যস্ত থাকায় ফিল্ম ক্লাবের নির্বাচনে অংশ না নিলেও সবার সঙ্গেই ছিলাম। ক্লাবের স্বার্থে আবারও নির্বাচনে অংশ নেওয়া। ক্লাবটি ফের নতুন করে ঢেলে সাজাতে চাই। আশা করি সাধারণ সদস্যরা আমাদের প্যানেল নির্বাচিত করে সে সুযোগ করে দেবেন।’
জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী জানিয়ে মো. ইকবাল বলেন, ‘কথায় না আমি কাজে বিশ্বাসী। কাজ দিয়ে প্রমাণ দিতে চাই। যেটা বিগত দিনেও দিয়েছি। আমাদের প্যানেল নির্বাচিত হলে ক্লাবকে নতুন একটি রূপ দেওয়া হবে।’
এ প্যানেলে আরও আছেন দেলোয়ার জাহান ঝন্টু, মোজাহারুল ইসলাম ওবায়েদ, এম এ কামাল, আবদুল্লাহ জেয়াদ, শবনম পারভীন, আলেকজান্ডার বো, কামালউদ্দিন আহমেদ, রকিবুল আলম রকিব, জাহাঙ্গীর শিকদার।
প্রযোজক, পরিচালক, অভিনেতা, অভিনেত্রীসহ চলচ্চিত্রের বিভিন্ন অঙ্গনের মানুষ ক্লাবটির সঙ্গে যুক্ত। এবার ফিল্ম ক্লাবের মোট ভোটার ৬৫৯ জন। বাংলাদেশ ফিল্ম ক্লাব লিমিটেডের সদস্যরা ভোটাধিকার প্রয়োগের মাধ্যমে এক বছরের জন্য নেতা নির্বাচন করেন।
এদিকে শিল্পী সমিতির নির্বাচন নিয়েও আলোচনা বেশ সরব। এ সমিতির ২০২৪-২৫ মেয়াদের দ্বিবার্ষিক নির্বাচন চলতি বছরের ১৯ এপ্রিল। নিপুণের প্যানেলে সভাপতি পদে এবার থাকছেন না ইলিয়াস কাঞ্চন। এ অভিনেতা নিজেই এ ঘোষণা দিয়েছেন। তাই এবার নিপুণের সঙ্গে সভাপতি পদে দেখা যেতে পারে ঢাকাই সিনেমার শীর্ষ নায়ক শাকিব খানকে। এর আগেও ২০১১ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত টানা তিনবার সভাপতি পদে নির্বাচিত হয়েছিলেন তিনি।
অন্যদিকে গুঞ্জন উঠেছে এক প্যানেলে নির্বাচন করতে যাচ্ছেন ঢাকাই চলচ্চিত্রের জনপ্রিয় দুই অভিনেতা ডিপজল ও মিশা সওদাগর। তবে সে ক্ষেত্রে সভাপতি প্রার্থী কে হবেন, তা নিয়ে চলছে জল্পনাকল্পনা। জায়েদ খানও আছেন আলোচনায়। তিনি অবশ্য সময় নিয়েছেন। এখনই কোনো কিছু চূড়ান্ত নয় বলে জানিয়েছেন।
এদিকে বছরের শেষ দিকে শুরু হবে চলচ্চিত্র পরিচালকদের নির্বাচনী দৌড়ঝাঁপ।