× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

আমি চ্যালেঞ্জ জিতেছি

প্রবা প্রতিবেদক

প্রকাশ : ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ১২:৩১ পিএম

আপডেট : ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ১২:৪০ পিএম

অনন্ত জলিল

অনন্ত জলিল

দেশের জনপ্রিয় অভিনেতা, প্রযোজক অনন্ত জলিল। ব্যবসায়ের পাশাপাশি তিনি সিনেমাতেও নিয়মিত দীর্ঘদিন ধরে। সম্প্রতি যুক্ত হয়েছেন ‘অপারেশন জ্যাকপট’-এর মতো বিগ বাজেটের সিনেমায়। তবে জাজ মাল্টিমিডিয়ার ‘চিতা’ সিনেমায় মাসুদ রানা চরিত্রে চুক্তিবদ্ধ হয়ে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছেন তিনি।

সিনেমা নিয়ে তার ব্যস্ততা ও সমসাময়িক নানা প্রসঙ্গে প্রতিদিনের বাংলাদেশের সঙ্গে কথা বলেছেন অনন্ত। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন লিমন আহমেদÑ

 

এ দেশের কয়েক প্রজন্মের কাছে মাসুদ রানা একটা ফ্যান্টাসি, ইমোশন। সেই চরিত্রে অভিনয়ের সুযোগ পাওয়ার অনুভূতিটা কেমন?

এটা আমার কাছে স্পেশাল একটি কাজ। মাসুদ রানার একটা অন্যরকম ব্যাপাার আছে। কিশোর থেকে বৃদ্ধ, সবার কাছে চরিত্রটি পছন্দের। অনেক জনপ্রিয়। বলা চলে বাংলার জেমস বন্ড সে। তার চরিত্রে কাজ করার সুযোগ পাওয়াটা আনন্দের। জাজ মাল্টিমিডিয়া ও আব্দুল আজিজ ভাইকে ধন্যবাদ আমাকে বেছে নেওয়ার জন্য। অলরেডি প্রচুর রেসপন্স পাচ্ছি আমি। সবাই শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন নতুন মাসুদ রানাকে। আমার খুব ভালো লাগছে।

 

কেমন প্রস্তুতি নিচ্ছেন?

‘অপারেশন চিতা’ গল্প থেকে চিতা সিনেমাটি বানানো হবে। আমি বইটি পড়েছি কয়েকবার। এই গল্পটা কমান্ডো টাইপ। জঙ্গলের অনেক অভিযান আছে। রহস্য, রোমাঞ্চ, রোমান্স; সব আছে। সেভাবেই আমাকে প্রস্তুতি নিতে হবে। আমি তৈরি হচ্ছি। মাসুদ রানা দেখতে কেমন, তার আচরণ, স্পেশালিটি কী কী সব খুঁটিনাটি জানার চেষ্টা করছি। তারপর গল্পে অ্যাকশনগুলো কেমন হবে সেটা নিয়ে টিমের সঙ্গে আলোচনা করছি। মানসিক এবং বডি ফিটনেসের দিক থেকে প্রস্তুতি নিচ্ছি। কমান্ডো রিলেটেড কিছু সিনেমা দেখছি। একটা ব্যাপার নিশ্চিত যে আমাকে অনেক পরিশ্রম করতে হবে। এই চরিত্রে কাজ করে সফল হয়েছেন কিংবদন্তি সোহেল রানা ভাই। আমিও সফল হতে চাই। তাই চরিত্রটি ফুটিয়ে তুলতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করব।

 

গেল বছর ৮৩ কোটি টাকায় হলিউড-বলিউডের শিল্পীদের নিয়ে মাসুদ রানা সিরিজের ‘এমআর নাইন’ বানানো হয়েছে। সেটি সাফল্য পায়নি। আপনি কি পারবেন সাফল্যের দেখা পেতে?

আগের ছবিটি জাজ মাল্টিমিডিয়া বানিয়েছিল। এবার চিতাও তারা বানাচ্ছে। আমার ধারণা তারা এমআরনাইন বানিয়ে সন্তুষ্ট বলেই নতুন আরেকটি গল্প নিয়ে কাজ করতে যাচ্ছে। অনেক সময় সবকিছু ভালো হওয়ার পর ফলাফলটা ভালো আসে না। ব্যর্থ হয়ে থেমে গেলে তো হবে না। সেই প্রত্যাশা নিয়েই আমরা চিতায় কাজ করছি। এই সিনেমার গল্পটা সুন্দর। জঙ্গল আছে, অ্যাকশন আছে, একটা থ্রিল আছে। ভালো টিম আছে। আর এ ধরনের অ্যাকশন-অ্যাডভেঞ্চার গল্প এখন দর্শক খুব পছন্দ করছে। আমি আশাবাদী চিতা সফল হবে।

 

আপনি তো সব সময়ই অ্যাকশন লুকে এ ঘরানার ছবিই করেন। চরিত্র নিয়ে একঘেয়েমি লাগে না?

না। কারণ আমার জনরাই এটা। আমি অ্যাকশন স্টাইলেই নিজেকে ভাবতে পছন্দ করি। অনেক অভিনেতাই আছেন বিশ্বজুড়ে যারা একটা জনরাতেই কাজ করে খ্যাতি পেয়েছেন। আর এখানে একঘেয়েমি লাগে না, কারণ প্রতিটি চরিত্র কিন্তু আলাদা। গল্প, লোকেশন, ভাবনা আলাদা।

 

আগে তো বছরে একটা সিনেমার কাজ করতেন। এখন তো অনেক ছবি আপনার হাতেÑ

হ্যাঁ, অনেকগুলো ছবি নিয়ে ব্যস্ত থাকতে হবে এ বছর। তবে আমি একসঙ্গে অনেক কাজ করতে চাই না। একটা একটা শেষ করে আরেকটা ধরতে চাই। কারণ আমাকে ব্যবসায়ের ফাঁকে কাজগুলো শেষ করতে হবে।

 

একটা সমালোচনা হতো যে অন্যরা আপনার সঙ্গে কাজ করতে চায় না বলেই আপনি নিজে প্রযোজনা করে অভিনয় করেন। কিন্তু এখন আপনার সব সিনেমাই বাইরের প্রযোজনা। বিষয়টা কি চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছেন?

চ্যালেঞ্জ বলতে পারেন। সমস্যা নেই। আমি সেই চ্যালেঞ্জ জিতেছি। আমাদের দেশে দেখবেন সবকিছু নিয়েই নেগেটিভ আলোচনা বেশি হয়। আমাকে নিয়েও অনেক হয়েছে। তাই আমিও দেখতে চেয়েছি নিজের প্রযোজনার বাইরে যদি কাজ করি আমার চাহিদা কেমন হয়। আশা করি যারা সমালোচনা করতেন তারা সেই জবাবটা পেয়েছেন। চাইলে আমি অনেক ছবি করতে পারি। কিন্তু আমি ব্যবসায়ী মানুষ, সিনেমায় বেশি মনোযোগী হলে ব্যবসায়ের ক্ষতি হয়। তাই নিজের পরিকল্পনামতো আমি কাজ করতে চেয়েছি। সেজন্য নিজের প্রযোজনার বাইরে কাজ করতাম না। কিন্তু আমি দেখেছি ইন্ডাস্ট্রির সবাই চায় আমি যেন অন্যদের সঙ্গেও কাজ করি। এখানে আমি দীর্ঘদিন ধরে আছি। সবার সঙ্গে একটা সম্পর্ক তৈরি হয়েছে। সেই সম্পর্কটাকেও গুরুত্ব দিতে হয়। তাই মোহাম্মাদ ইকবাল ভাইয়ের ‘কিল হিম’ সিনেমাটা আমি করেছিলাম। এরপর তো অনেক প্রস্তাব এসেছে। সেখান থেকে যেটা ভালো লাগছে করছি।

 

কেউ কেউ এই আলোচনাও করেন যে আপনি যেসব সিনেমায় অভিনয় করছেন আড়ালে সবগুলোর প্রযোজক আপনিই। এ নিয়ে কিছু বলবেন?

দেখুন, আমি আগেই বলেছি আমরা নেগেটিভ আলোচনা বেশি করি। নেগেটিভ চিন্তাগুলো আমাদের বেশি ভাবায়। আমি যদি প্রযোজনা করিই তবে সেটা আড়ালে করতে হবে কেন? এটা তো আমি প্রকাশ্যেই করতে পারি। যারা সব সময় ভালো কাজ থামিয়ে রাখতে চায়, নিজেদের জন্য কোনো কাজ পায় না তারাই এসব চিন্তা করে। আমি অপারেশন জ্যাকপট সিনেমায় কাজ করছি। সবাই জানেন এটার প্রযোজক কে। চিতা বানাচ্ছে দেশের স্বনামধন্য প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান জাজ। তাহলে এখানে আমার প্রশ্ন কেন আসে।

 

সাধারণত দেখা যায় আপনি এবং বর্ষা দুজনের বাইরে আর কারও সঙ্গে কাজ করেন না। সেটা কেন? অন্যদের সঙ্গে কাজ করায় ইনসিকিউরড ফিল করেন নাকি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন না?

এখানে আসলে ইনসিকিউরড ফিল করার কিছু নেই। এ বিষয়ে অনেকবার আমি বলেছি। আমরা ফ্যামিলির কথা ভেবেই একসঙ্গে কাজ করি। দুজন একসঙ্গে আসি, একসঙ্গে ফিরে যাই। ছেলেরা আমাদের একসঙ্গে পায়। এ ছাড়া কোনো কারণ নেই। এখন চিতায় দুজন নায়িকা রয়েছে। একজন বর্ষা আরেকজন এমআরনাইনে ছিলেন যিনি তিনি। যদি বর্ষা ছাড়া অন্যদের সঙ্গে কাজের সমস্যা হতো তাহলে দুই নায়িকা নিয়ে কাজ করছি কীভাবে? বর্ষাও যেকোনো সিনেমায় দুজন নায়ক হলে আমি ছাড়া অন্য কারও সঙ্গে কাজ করবে। সমস্যার তো কিছু নেই। আমরা মূলত নিজেদের সুবিধার জন্য, পরিবার, ব্যবসায়িক ব্যস্ততা ও শিডিউল ভেবে চলি বলেই অন্যদের সঙ্গে কাজ কম হয়। কারণ আমরা একজন আরেকজনের সঙ্গে শিডিউলটা মেলাতে পারি, অন্যদের সঙ্গে কিন্তু মিলবে না। তখন দেখা যাবে দুজনের টাইম আলাদা হয়ে যাচ্ছে।

 

একজন বড় ব্যবসায়ী, সিনেমার বড় তারকা। তবু সোশ্যাল মিডিয়ায় আপনাকে নিয়ে অনেক ট্রল, মিমের ছড়াছড়ি দেখা যায়। এসব দেখে মন খারাপ হয় না কখনও?

কখনোই না। এসব ছোটখাটো বিষয় নিয়ে আমি ভাবিই না। আমি মনে করি যারা আমাদের নিয়ে ট্রল করেন তারাও আমাদের ভালোবাসেন। হয়তো তাদের প্রকাশটা হয় ফানি। আপনি বিদেশে যান, প্রবাসীরা একটা অনুষ্ঠান করলেই সেখানে ঢাকার পোলা গানটা বাজে। যিনি একটু আগেই আমার গানের সঙ্গে নাচলেন তিনিই ফেসবুকে বসে ট্রল করছেন বা দেখছেন। আমি মনে করি সবই প্রচার। তবে হ্যাঁ, দুই-চারজন লোক আছেন, যারা রেষারেষিতে জড়াতে চান, অন্যকে খাটো করতে চান, তাদের নিয়ে আমার কিছু বলার নেই। তারা সুস্থ মানুষ নন। সুস্থ লোক কখনও অন্যকে অপমান করে না।

 

আপনি সব সময়ই পজিটিভ চিন্তা নিয়ে থাকেন। এটা একটা বড় গুণ। এত পজিটিভ থাকার রহস্য কী?

আমি সব সময় ভাবি একদিন আমাকে এই পৃথিবী থেকে চলে যেতে হবে। আমি অমর নই। তাহলে কিসের জন্য এত নেগেটিভ চিন্তাভাবনা করব। কেন অন্যকে কষ্ট দেব, অপমান করব। আমি নিজে সবার সঙ্গে সুন্দর সম্পর্ক নিয়ে বাঁচতে চাই। আমার সঙ্গে যারা চলেন-ফিরেন তাদেরও সেই পরামর্শ দিই। আপনারা সবাই দেখেন কিছুদিন আগে গুণী পরিচালক মালেক আফসারী ভাই ও প্রযোজক ইকবাল ভাইয়ের মধ্যে খুব কথা-কাটাকাটি হয়েছে। একে অন্যকে ভিডিওতে নানা রকম মন্দ কথা বলেছেন। আমি ইকবাল ভাইকে যেদিন পেলাম সামনে সরাসরি পরামর্শ দিয়েছি এসব থেকে বিরত থাকতে। তিনি কিন্তু সরে এসেছেন। মালেক আফসারী ভাই মুরব্বি মানুষ, তার সঙ্গে দেখা হলে তাকেও বলব। লাভ কী নিজেদের মধ্যে কাদা-ছোড়াছুড়ি করে। ইন্ডাস্ট্রির আরও অনেকে এগুলো করেন। কেউ ভিউয়ের জন্য করেন। কিন্তু এটা উচিত নয়। আমরা সংস্কৃতিজগতের মানুষ। আমাদের সেভাবেই চলা উচিত।

 

আপনার সিনেমাটিক শিডিউল ও ব্যস্ততা সম্পর্কে জানতে চাই। এ বছর কী কী ছবি মুক্তি পাবে?

অনেকগুলো ছবিই তো হাতে আছে। এর মধ্যে অপারেশন জ্যাকপটের কাজ সবার আগে শেষ হবে। সেটিই হয়তো আগে মুক্তি পাবে। দারুণ একটা সিনেমা। আমি খুবই এক্সাইটেড এ সিনেমাটি নিয়ে। এরপর আমার নিজের প্রযোজনার ‘নেত্রী : দ্য লিডার সিনেমার কাজ শেষ করতে চাই। কিছু শুটিং বাকি আছে। রোজার ঈদের আগে আগে সেটা শেষ করব। মুক্তির দিন-তারিখ এখনও ঠিক করিনি। তারপর ইকবাল ভাইয়ের ‘কিল হিম ২’ ও চিতা সেনেমার কাজ শেষ করব।

 

 

 

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা