প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ১২:০৩ পিএম
আপডেট : ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ১২:০৪ পিএম
রিয়াজ-শাবনূর
ঢাকাই সিনেমার নন্দিত জুটি রিয়াজ-শাবনূর। ৪০টির মতো সিনেমায় তারা জুটি হয়ে কাজ করেছেন। তার মধ্যে ‘বিয়ের ফুল’, ‘নারীর মন’, ‘ভালোবাসি তোমাকে’, ‘শ্বশুরবাড়ি জিন্দাবাদ’, ‘প্রেমের তাজমহল’ ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। দুজনেই এখন অভিনয়ে নিয়মিত নন। শাবনূর তো দীর্ঘদিন রয়েছেন সিনেমার বাইরে। অস্ট্রেলিয়ায় থিতু হয়েছেন সন্তান ও পরিবার নিয়ে। সম্প্রতি দেশে ফিরেছেন। দেশে এসেই জানান, সাত বছরের বিরতি ভেঙে সিনেমায় ফিরছেন তিনি। দু-তিনটি সিনেমায় যুক্তও হয়েছেন।
শাবনূরের এ প্রত্যাবর্তনে বেশ খুশি ভক্তরা। সিনেমাপাড়ার মানুষও সফল এ নায়িকাকে অভিনন্দন ও স্বাগত জানাচ্ছেন। মুখ খুলেছেন নায়ক রিয়াজও। তিনি বলেন, ‘শাবনূরের যদি সিনেমা করতে হয় তবে সেটা যেন ভালো কিছু হয়। সব সময় তার জন্য আমার পক্ষ থেকে শুভকামনা আছে। কিছুদিন আগে একটি ঘরোয়া পার্টিতে তার সঙ্গে দেখা হয়েছিল, অভিনন্দন জানিয়েছি। তবে আমি বলব, অনেক সময় আমরা নিজেদের মতো করে সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলি। শাবনূর কেন এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে তা জানি না। যদি সিনেমা করতে চায় বন্ধু হিসেবে আমি শাবনূরের উদ্দেশে বলব, তার উচিত হবে ২০২৪ সালে এসে ২০২৪-এর কনটেন্ট, স্ক্রিপ্ট ও পরিচালক নির্বাচন করে ছবি করা। শাবনূরকে এমনিতেই মানুষ ১০০ বছর মনে রাখবে। তবে সে (শাবনূর) আবার যে ছবি করবে, সে ছবি যেন তাকে পরবর্তীতে আরও ১০০ বছর বাঁচিয়ে রাখে।’
শাবনূরের উদ্দেশে রিয়াজ আরও বলেন, ‘তাকে মনে রাখতে হবে সে যে সময়টা বিরতি নিয়েছিল, এর মাঝে বাংলাদেশের সিনেমা এবং মিডিয়ায় অনেক কিছুর পরিবর্তন হয়েছে। আগের অনেকেই ছিল যারা এখন বেঁচে নেই। তাই যদি শাবনূর স্ক্রিপ্ট, ডিরেক্টরসহ পুরো টিম ঠিকঠাকভাবে সিলেক্ট করে আবার সিনেমা করে তাহলে আমি বলতে চাই, তার সিনেমায় ফিরে আসার সিদ্ধান্ত সঠিক হবে।’
দুজনকে আবার একসঙ্গে দেখা যাবে কি নাÑ সে প্রশ্নের জবাবে রিয়াজ বলেন,
‘এটাও ভালো স্ক্রিপ্ট, গল্প ও কাজের মানের ওপর নির্ভর করছে। যদি শুধু আলোচনার জন্য
হয় তবে আমার মনে হয় দরকার নেই। কিন্তু সত্যিই যদি একটি ভালো সিনেমার পরিকল্পনা দেখি
তবে হতেও পারে। শাবনূরের সঙ্গে সব সময়ই অভিনয় উপভোগ করেছি আমি।’
বলিউডে রিয়াজের সময়কার নব্বইয়ের দশকের অভিনেতারা আজও চলচ্চিত্রে দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন। কেউ কেউ তাদের সিনেমা দিয়ে শত কোটি ক্লাবে পা রাখছেন। অথচ রিয়াজ কেন অনিয়মিত? এ প্রশ্নের উত্তরে মোল্লাবাড়ির বউ, ও প্রিয়া তুমি কোথায়, স্বপ্নের বাসর, শ্বশুড়বাড়ি জিন্দাবাদসহ বহু জনপ্রিয় সিনেমার নায়ক রিয়াজ বলেন, ‘এখনো বাংলা চলচ্চিত্র একজন অভিনেতাকে ইকোনমিক সিকিউরিটি দেওয়ার উপযোগী হয়নি। শুধু অভিনয় করে জীবন কাটানো যাবে এ গ্যারান্টি চলচ্চিত্র দেয়নি। দিনশেষে সার্ভাইভ করতে হয় অথবা প্রধানমন্ত্রীর কাছে চিকিৎসার জন্য সাহায্য চাইতে হয়। আমি এটা পছন্দ করি না। আমি মনে করি এর বাইরে শিল্পীদের উত্তরণে যদি কিছু করতে পারি সেটা ভালো হবে। সেই লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছি।’
এখনকার পরিচালকদের কথা উল্লেখ করে রিয়াজ বলেন, দিলীপ বিশ্বাস, মতিন রহমান, মোহাম্মদ হান্নান, হুমায়ূন আহমেদ স্যারের সঙ্গে কাজ করে আনন্দ পেতাম। কাজ করতে গিয়ে অনেক কিছু শিখতে পারতাম। এখন যারা কাজ করছেন তাদের মধ্যে মেধাবী কম। বেশিরভাগই নাটককে সিনেমা বলে চালাতে চাচ্ছেন। অথবা বিলো স্ট্যান্ডার্ড কনটেন্ট, যেটা আগে একাধিকবার হয়েছে সেটাকে নিয়ে বিশাল কিছু করছেন, এমনটা জানান দিচ্ছে। এসব নিয়ে আবার সোশ্যাল মিডিয়ায় বিভিন্ন প্রতিক্রিয়া প্রকাশ পাচ্ছে। আমার মনে হয় তাদের গভীরতা কম, বাংলা সিনেমার অতীত ইতিহাস তারা সঠিকভাবে জানেন না। এসব নির্মাতার সঙ্গে কাজ করা কঠিন। তা ছাড়া ভালো গল্প, সঠিক প্রেজেন্টেশন পাই না। এ কারণে কাজ করা হয় না।’
চিত্রনায়ক রিয়াজ অভিনীত সর্বশেষ বঙ্গবন্ধুর বায়োপিক ‘মুজিব’ মুক্তি পেয়েছে। এখানে তিনি তাজউদ্দীন আহমদের চরিত্রে অভিনয় করে প্রশংসিত হয়েছেন।
বর্তমানে রিয়াজ চ্যানেল আইয়ের ওটিটি প্ল্যাটফর্ম ‘আই স্ক্রিন’-এর প্রকল্প পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।