প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২৯ নভেম্বর ২০২৩ ১৫:৪৯ পিএম
আপডেট : ২৯ নভেম্বর ২০২৩ ১৬:১৪ পিএম
বাংলাদেশের জনপ্রিয় নায়িকা অপু বিশ্বাস। সম্প্রতি নানা কারণেই তিনি রয়েছেন আলোচনায়। তাকে নিয়ে দীর্ঘ এক সাক্ষাৎকার ছেপেছে কলকাতার গণমাধ্যম আনন্দবাজার। সেখানে এক প্রশ্নের জবাবে অপু দাবি করেন, সন্তান থাকলে কোনো মেয়েরই দ্বিতীয় বিয়ে করা উচিত নয়। তিনি এরকমটা কখনোই করবেন না। সেইসঙ্গে ২০০৯ সাল থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত এই ছয় বছর কোনো নায়িকাই তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে পারেননি বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
শাকিব খানের প্রাক্তন, না কি বর্তমান স্ত্রী- অপু বিশ্বাসকে ঘিরে এই আলোচনা এখন তুঙ্গে। নায়িকাও বিষয়টি খোলাশা করেন না। আনন্দবাজারে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ‘সম্প্রতি আপনি বুবলিকে নিয়ে একটি মন্তব্য করে জানান, আপনি তাকে ঘৃণা করেন। হঠাৎ এমন সরাসরি আক্রমণ করলেন?’- এমন প্রশ্নের উত্তরে অপু বলেন, ‘আমি আসলে এটা নিয়ে কোনো মন্তব্য করব না। আমি একজন তারকা এবং পাবলিক ফিগার। একজন হিন্দু বাড়ির মেয়ে। আমার মা এখন আর নেই। তবে, কিছু জিনিস শিখিয়ে গিয়েছেন আমাকে। সেটা আমি মেনে চলি। কিছু সীমারেখা থাকে। সেটাকে অতিক্রম করা উচিত নয়। আর যে মানুষকে নিয়ে কথা উঠল, কলকাতায় আমার কাজের জায়গা, সেখানে বসে এসব নিয়ে মন্তব্য করলে অলক্ষ্মী হতে পারে। তাই কোনো মন্তব্য করব না।
শাকিবের সঙ্গে বৈরী সম্পর্কের উন্নতি হয়েছে কি না জানতে চাইলে অপু বলেন, ‘আমি চাই না, আমার সন্তান কোনো ভাঙা পরিবারে বেড়ে উঠুক। আমি আমার সন্তানকে নিয়ে ভীষণ সচেতন। যে কোনো সন্তানের কাছে পরিবার খুব গুরুত্বপূর্ণ। বাবা-মা হিসেবে সন্তানকে একটা সুনিশ্চিত জীবন দেওয়া আমাদের কর্তব্য। আমার মনে হয়, পরিবারের অশান্তিগুলো আমাদের মধ্যেই থাকা উচিত। সন্তানকে যাতে কোনো অশান্তি ছুঁতে না পারে। এই জিনিসটা জয় কখনও বুঝতেই পারে না। কারণ আমি, আমার শ্বশুর-শাশুড়ি, শাকিব সকলেই ভীষণ সচেতন। আমার ছেলের কাছে বিষয়টা- আমার মা কাজ করে, আমার বাবা কাজ করে। ব্যস্ত বলে দূরত্ব রয়েছে। কিন্তু ‘ব্রোকেন’ শব্দটার সঙ্গে ও পরিচিত নয়।’
মা হওয়ার পর শাকিবের সঙ্গে সম্পর্কছেদ। কখনও দ্বিতীয় বিয়ের কথা ভেবেছেন কি না এমন প্রশ্নের জবাবে অপু বলেন, ‘না, কখনও ভাবিনি। দ্বিতীয় বিয়ের দরকারটা কী? বাংলাদেশে আমার এমন একটা জায়গা রয়েছে, যেখানে সকলে ভাবেন অপু যা-ই করবেন তার মধ্যে একটা বার্তা থাকবে। সেইদিক থেকে দর্শকের কাছে খুবই কৃতজ্ঞ। একটা মেয়ে, যার সন্তান আছে সে কেন দ্বিতীয় বিয়ে করবে? দ্বিতীয় বিয়েতে সে হয়তো স্বামী পাবে, তার সামাজিক পরিচিতি পাবে। কিন্তু সন্তানটা? সে কি একজন সৎ বাবা পাবে! সন্তানের প্রতি ওই বাবা যে সমান ভালোবাসা দেবে, তা তো নয়। তাই আমি মনে করি, দ্বিতীয় বিয়েই করব না! তা হলে সন্তান তার নিজের বাবাকেই পাবে, অন্য কাউকে বাবা বলতে হবে না। তাই যেকোনো এক জনকে আত্মত্যাগ করতেই হয়, তাতে ভুল কিছু নেই। মা হিসেবে আত্মত্যাগ করাটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।’
সেখানে শাকিব খানের দ্বিতীয় বিয়ে প্রসঙ্গে জোরে হেসে তিনি ব্যাপারটা উড়িয়ে দেন। নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হওয়া নিয়ে অপু বলেন, ‘আমি গত বছর সংরক্ষিত মহিলা আসন নিয়েছিলাম বগুড়া থেকে। কারণ, আমি সেখানকার মেয়ে। আমি মনেপ্রাণে আওয়ামী লীগ করি, এটাই আমার বিশ্বাস। তবে এ বছরের মতো সুযোগ নেই আর।’
এক প্রশ্নের জবাবে অপু বলেন তার ২০০৯ সাল থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত কোনো নায়িকা তার সঙ্গে পাল্লা দিতে পারেনি। তিনি বলেন, ‘আসলে আমি যখন যে কাজটা করি, মন দিয়ে করি। অন্য কাউকে আমার জায়গায় ঢুকতে দিই না। ২০০৭-এ আমি শুরু করি। ২০০৯ থেকে ২০১৫ অবধি কোনো নায়িকাকে ঢুকতে দিইনি। ১২ মাসে ২৪টা শুটিং করেছি। আমি যখন যেটা করি, সেখানে আমি অন্য কাউকে খুব বেশি কিছু করতে দিই না। এটা আমার যোগ্যতা। ওই সময়ে বাংলাদেশে আর কোনো নায়িকাকে দেখা যায়নি যে, আমার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে কাজ করছে। তার পর আমি মা হই। সেই সময় অনেক ওজন বেড়ে যায়। গত দুবছর ধরে ব্র্যান্ডিংয়ের কাজ, ওপেনিং, ফোটোশুট নানা ধরনের কাজ করছি। সেই জায়গায় এখন আর কাউকে ঢুকতে দিচ্ছি না। অনেকে অবশ্য অসাধু উপায়ে আমার সমালোচনা করে। তাতে আমি পাত্তা দিই না।’
বিভিন্ন শোরুম ওপেনিংকে ফিতা কাটা বলে হেয় করা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘হ্যাঁ, অনেকে এটা বলেন। তবে আমি এই ‘ফিতা কাটা’র বিনিময়ে ভালো একটা পারিশ্রমিক পাই। এটা আমার কাজ। সেটা করি। আর সমালোচকদের ধন্যবাদ জানাব। তারা যত সমালোচনা করবেন, ততই আমার কাজ দর্শকের কাছে পৌঁছবে। সমালোচকরা না থাকলে আমার কাজের জায়গাটাই এত বিস্তৃত হতো না।
আবার শাকিব খানের সঙ্গে দেখা যাবে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘এখনই বলতে পারছি না। সময়ের ওপর ছেড়ে দিলাম।’