প্রার্থীর কথা
মহিউদ্দিন মাহি
প্রকাশ : ২৯ নভেম্বর ২০২৩ ০৯:২১ এএম
আপডেট : ২৯ নভেম্বর ২০২৩ ১৩:১০ পিএম
চিত্রনায়ক ফেরদৌস আহমেদ।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা-১০ আসন থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন চিত্রনায়ক ফেরদৌস আহমেদ। ইতোমধ্যেই নিজের নির্বাচনী এলাকায় প্রচারণার কাজে ব্যস্ত সময় কাটছে তার। দেখা করছেন সর্বস্তরের মানুষের সঙ্গে। কথা বলেছেন নির্বাচনী পরিকল্পনা নিয়ে।
সোমবার (২৭ নভেম্বর) জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানিয়ে নির্বাচনী কার্যক্রম শুরু করেন দেশের জনপ্রিয় এই নায়ক। নির্বাচনের ব্যস্ততা ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে প্রতিদিনের বাংলাদেশের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন মহিউদ্দিন মাহি।
প্রশ্ন : ঢাকা-১০ আসনে নৌকার প্রতিনিধি এবার আপনি। কেমন লাগছে?
ফেরদৌস আহমেদ : আমি আওয়ামী লীগের সব কার্যক্রমে নিজের উপস্থিতি নিশ্চিত করে সাধারণ মানুষের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেছি সব সময়। এই চেষ্টা দীর্ঘদিন ধরেই অব্যাহত ছিল। মনোনয়ন পেয়ে সত্যিই অনেক আনন্দিত। তবে এটা অনেক বড় দায়িত্ব। সামনেই নির্বাচন। নির্বাচনে জয়ী হয়ে এলাকার দায়িত্ব নিতে হবে। সেই সঙ্গে আমি শিল্পীদের প্রতিনিধি হিসেবে এখানে এসেছি। আমাকে ঘিরে আমার সহকর্মীদেরও অনেক প্রত্যাশা থাকবে। সেগুলোর প্রতিও দায়িত্বশীল থাকব। চেষ্টা করব আমার ক্ষুদ্র জায়গা থেকে যতদূর পারা যায় শিল্প-সংস্কৃতি বিশেষ করে সিনেমার জন্য কিছু করতে।
প্রশ্ন : দেশের ঐতিহাসিক এই দলটির হয়ে প্রতিনিধিত্ব করবেন, কেমন লাগছে?
উত্তর : এই ভালো লাগা ভাষায় বর্ণনা করা সম্ভব নয়। মানুষের সেবা করার সুযোগ করে দেওয়ার জন্য প্রথমেই আল্লাহর কাছে কৃতজ্ঞতা জানাই। এরপর ধন্যবাদ জানাই প্রধানমন্ত্রী ও বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনাকে। তিনি আমার ওপর বিশ্বাস রেখেছেন। আমাকে সুযোগ করে দিয়েছেন ঢাকা-১০ আসনের সাধারণ মানুষের সেবা করার। ধন্যবাদ জানাচ্ছি বাবা-মা ও পরিবারকে। একই সঙ্গে ধন্যবাদ জানাচ্ছি সহকর্মী, বন্ধুবান্ধব ও শুভাকাঙ্ক্ষীদের; যারা এত বছর ধরে আমাকে সমর্থন করে আসছেন। আমার বিশ্বাস এবারও তারা আমাকে সমর্থন করবেন। সবার সহযোগিতায় আমরা একত্রিত হয়ে দেশের উন্নয়নের ধারাকে অব্যাহত রাখার পথে হাঁটব। আর এই জায়গা থেকে আমার নতুন পথচলা শুরু হবে।
প্রশ্ন : মনোনয়ন পাওয়ার বিষয়ে কতটা আশাবাদী ছিলেন?
উত্তর : সত্যি কথা বলতে, স্বপ্নেও ভাবিনি মনোনয়ন পাব। মনোনয়নের বিষয়ে ফর্ম তোলার আগে জননেত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করেছি। উনাকে আমার পরিকল্পনার কথা জানাই। তাকে বলি, এবার মনোনয়ন নিতে চাই। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শিল্পী ও শিল্পবান্ধব একজন মানুষ। তিনি আমার মায়ের মতন, আমাকে সন্তানের মতো স্নেহ করেন। তিনিও আমাকে আশ্বস্ত করে বলেনÑ মনোনয়নপত্র কিনো, দেখা যাক কী হয়। অবশেষে এমন গুরুত্বপূর্ণ একটি আসনে মনোনয়ন পেয়ে আমি খুবই আনন্দিত।
প্রশ্ন : মনোনয়ন ঘোষণার পর থেকেই বেশ ব্যস্ত হয়ে উঠেছেন?
উত্তর : মনোনয়ন ঘোষণার আগ থেকেই রাজনৈতিক ব্যস্ততা শুরু হয়েছিল। মনোনয়ন ঘোষণার পর সেই ব্যস্ততা আরও বেড়েছে। সময় তো কম। এলাকার স্থানীয় প্রতিনিধি, সর্বস্তরের মানুষের সঙ্গে দেখা করতে চাই, তাদের কথা শুনতে চাই। তাদের চাহিদা ও ভাবনা থেকেই ঢাকা-১০ আসনের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা করব। নির্বাচিত হলে এই এলাকায় এমন কিছু করতে চাই, যা সবার কাছে স্মরণীয় হয়ে থাকবে। সংগত কারণেই ব্যস্ততা অনেক বেশি। শ্বাস ফেলার মতো সময়ও নেই। যদিও এই ব্যস্ততা উপভোগ করছি। সামনের দিনগুলোয় এভাবেই সাধারণ মানুষ নিয়ে ব্যস্ত থাকতে চাই।
প্রশ্ন : নির্বাচনে জয়ের ব্যাপারে কতটা আশাবাদী?
উত্তর : জয়ের বিষয়ে শতভাগ আশাবাদী। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমার ওপর যে আস্থা রেখেছেন, তার প্রতিদান জয়ের মাধ্যমে দিতে চাই। সেজন্য আমার এলাকাবাসী, সাংবাদিক ভাই-বোন ও বন্ধু থেকে শুরু করে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী সবার সহযোগিতা প্রয়োজন। সবার সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে এই আসনটিকে ঢাকার রোল মডেল হিসেবে গড়ে তুলতে চাই। মানুষের জন্য কল্যাণকর কিছু করতে চাই।
প্রশ্ন : চলচ্চিত্র, শিল্প ও শিল্পীদের ঘিরে কোনো পরিকল্পনা আছে কী?
উত্তর : আমি শিল্পী মানুষ। শিল্পের বিষয়টি আমার নির্বাচিত এলাকায় সব সময়ই প্রাধান্য পাবে। এই এলাকায় অসংখ্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আছে, রবীন্দ্র সরোবর-ধানমন্ডি লেকের মতো বিনোদনকেন্দ্র রয়েছে, নানা রকম গ্যালারি রয়েছে। এগুলোতে মানুষের আনাগোনা যেন আরও বাড়ে, সেজন্য কিছু পরিকল্পনা নিতে চাই। শিল্প ও সংস্কৃতিচর্চার মাধ্যমে সমাজ থেকে অন্ধকার দূর করা সম্ভব। তাই এ বিষয়ে কিছু কাজ করার ইচ্ছে অবশ্যই আছে। তবে তার আগে চাই জয়।
প্রশ্ন : চলচ্চিত্রে কি তাহলে আর দেখা যাবে না আপনাকে?
উত্তর : আমি এখন আর আগের মতো চলচ্চিত্রে নিয়মিত নই। গল্প পছন্দ হলেই শুধুমাত্র সিনেমায় কাজ করছি। মুক্তিযুদ্ধের গল্পেই বেশি অভিনয় করেছি। সামনের দিনগুলোতেও এমন গল্প পেলে কাজ করব। তবে এখন থেকে ফুলটাইম রাজনীতিতে সময় দেব। তার ফাঁকে সিনেমার কাজ করব। আমার আসনের সাধারণ মানুষের কাছ থেকে যে ভালোবাসা পাচ্ছি, এই ভালোবাসাকে সাহস করে এগিয়ে যেতে চাই। সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন। জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু।