‘কারার ঐ লৌহ কপাট’ গানে সুর বিকৃতি
প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১৪ নভেম্বর ২০২৩ ০২:৫৬ এএম
আপডেট : ১৪ নভেম্বর ২০২৩ ১৭:৩৫ পিএম
পিপ্পা ছবির জন্য কাজী নজরুল ইসলামের বিখ্যাত ‘কারার ঐ লৌহ কপাট’ গানটিতে নতুন করে সুরারোপ করেন উপমহাদেশের জনপ্রিয় সংগীত পরিচালক এ আর রহমান।
চাপের মুখে ক্ষমা চাইল টিম পিপ্পা। বিতর্ক থেকে বেরিয়ে আসতে ক্ষমা চাইলেও ‘কারার ঐ লৌহ কপাট’ গানের সুর পরিবর্তনের দায় কাজী নজরুলের পরিবারের ওপরই চাপিয়েছে প্রযোজনা সংস্থাটি।
পিপ্পা ছবির জন্য কাজী নজরুল ইসলামের বিখ্যাত ‘কারার ঐ লৌহ কপাট’ গানটিতে নতুন করে সুরারোপ করেন উপমহাদেশের জনপ্রিয় সংগীত পরিচালক এ আর রহমান। কিন্তু তার দেওয়া নতুন সুর গানটির মূল স্পিরিটকেই হত্যা করছে বলে মনে করেন বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গের সংগীতজ্ঞ থেকে শুরু করে সারা বিশ্বের বাংলা ভাষাভাষী সংগীতপ্রিয় মানুষ। গানের সুর বিকৃতি কাণ্ডে কয়েক দিন ধরেই বিশ্বজুড়ে বাঙালির মধ্যে বয়ে চলেছে সমালোচনার ঝড়।
অবস্থা বেগতিকে প্রযোজনা সংস্থা রয় কাপুর ফিল্মস ক্ষমা চেয়ে একটি বিবৃতি প্রকাশ করেছে। যেখানে প্রযোজনা সংস্থা দাবি করেছে, কপিরাইট-সংক্রান্ত যাবতীয় নিয়মবিধি মেনেই কাজ করা হয়েছে, অনুমতি নিয়েই এ গান রিমেক করেছেন তারা। নজরুল ইসলামের উত্তরসূরিরা চুক্তিবদ্ধ হয়েছিলেন পিপ্পা টিমের সঙ্গে। তাদের দাবি, নজরুল ইসলামের পুত্রবধূ প্রয়াত কল্যাণী কাজী তাদের সঙ্গে চুক্তি করেন, যার সাক্ষী অনির্বাণ কাজী। জানানো হয়, কাজী নজরুল ইসলামের লেখা অপরিবর্তিত রেখে নতুন সুর দেওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়েছে সেখানে।
তবে নজরুল ইসলামের সুরারোপিত গানের প্রতি দুই বাংলার যে আত্মিক টান রয়েছে তা স্বীকার করে প্রযোজনা সংস্থার বক্তব্য, কারও ভাবাবেগে আঘাত লেগে থাকলে তার জন্য টিম টিপ্পা ক্ষমাপ্রার্থী।
বিবৃতিতে তারা লিখেছেন, ‘কাজী নজরুল ইসলামের আসল সুরের প্রতি আমাদের অগাধ শ্রদ্ধা রয়েছে। ভারতীয় উপমহাদেশে সংগীত জগতে, সমাজ ও রাজনীতিতে কাজী নজরুল ইসলামের অবদান অনস্বীকার্য। একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সময় স্বাধীনতা, শান্তি ও ন্যায়ের জন্য যারা সংগ্রাম করেছিলেন, তাদের সম্মান জানাতেই এ অ্যালবাম তৈরি হয়েছে।’
তারা আরও জানিয়েছেন, ‘আমরা প্রয়াত কল্যাণী কাজীর কাছে অনুমতি চেয়েছিলাম এ গানের কথা এবং স্পিরিট অক্ষুণ্ন রেখে বিশ্বস্তভাবে সেটি নির্মাণ করার। তার চুক্তিও হয়েছিল। সই করেছিলেন প্রয়াত কল্যাণী কাজী, সাক্ষী ছিলেন অনির্বাণ কাজী।’
সবশেষে পিপ্পার নির্মাতারা উল্লেখ করেন, ‘অরিজিন্যাল কম্পোজিশনের প্রতি দর্শকের যে আত্মিক টান রয়েছে সেটা আমরা বুঝতে পেরেছি, তবে শিল্প সর্বদাই ব্যক্তিগত দৃষ্টিভঙ্গি দিয়ে দেখার বিষয়। আমাদের কাজ যদি কারও ভাবাবেগে আঘাত দেয় কিংবা কোনো সমস্যার সৃষ্টি করে থাকে তাহলে আমরা ক্ষমাপ্রার্থী।'
অনির্বাণ কাজী আগেই সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছিলেন চুক্তি করেই তার মা এ গান ব্যবহারের অনুমতি দিয়েছিলেন। তবে গান অবিকৃত রাখার কথা নির্মাতারা জানিয়েছিলেন। এমনকি গান রেকর্ড করার পর তা শোনানোর কথাও কল্যাণী দেবী বলেছিলেন, যা করা হয়নি।