× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার ২০২২

৪৮ বছরে দ্বিতীয় রুবাইয়াত হোসেন

প্রবা প্রতিবেদক

প্রকাশ : ০২ নভেম্বর ২০২৩ ১০:৩৯ এএম

আপডেট : ০২ নভেম্বর ২০২৩ ১০:৪৪ এএম

৪৮ বছরে দ্বিতীয় রুবাইয়াত হোসেন

বাংলাদেশে চলচ্চিত্রের একমাত্র রাষ্ট্রীয় ও সর্বোচ্চ পুরস্কার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার। ১৯৭৫ সাল থেকে এ পুরস্কার প্রদান করা হচ্ছে। বাংলাদেশ সরকার চলচ্চিত্রশিল্পের বিকাশ ও উন্নয়নে উল্লেখযোগ্য অবদানের জন্য ব্যক্তিবিশেষ এবং শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র ও প্রামাণ্যচিত্রকে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার প্রদান করে।

১৯৮১ সালে কোনো পুরস্কার দেওয়া হয়নি। কারণ জুরি বোর্ড কোনো চলচ্চিত্রকে পুরস্কার পাওয়ার যোগ্য মনে করেনি। সর্বশেষ ২০২২ সালের পুরস্কারজয়ীদের তালিকা প্রকাশ হয়েছে। এটি হচ্ছে ৪৭তম।

১৯৭৫ থেকে ২০২৩, এই ৪৮ বছরের পুরস্কার পরিক্রমায় নারী নির্মাতাদের সাফল্য একেবারেই হতাশাজনক। অবশ্য এ দেশের চলচ্চিত্রে নারী নির্মাতার সংখ্যাও হাতে গোনা। সেই ১৯৭০ সালে রেবেকা প্রথম নারী নির্মাতা হিসেবে নাম লেখান। তিনি পরিচালনা করেছিলেন ‘বিন্দু থেকে বৃত্ত’ নামে চলচ্চিত্র। এটি মুক্তির পর বেশ প্রশংসিত হয়। চলচ্চিত্র নির্মাণে নারীর পা রাখা সেই প্রথম।

এরপর কালে কালে অনেকেই চেষ্টা করেছেন। হয়েছেন প্রশংসিত। অনেকে জিতেছেন নানা রকম স্বীকৃতি ও পুরস্কার।

তবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার জয়ের তালিকায় আছেন কেবল দুজন। তারা হলেন কোহিনুর আক্তার সুচন্দা ও সৈয়দা রুবাইয়াত হোসেন। ৪৭ বছরের ইতিহাসে এ দুই নারী নির্মাতাই রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি পেয়েছেন।

সৈয়দা রুবাইয়াত হোসেন ২০২২ সালের সেরা নির্মাতা হিসেবে পুরস্কার জিতলেন ‌‘শিমু’ সিনেমার জন্য। এর আন্তর্জাতিক নাম ‘মেড ইন বাংলাদেশ’। ছবিটিতে অভিনয় করে সেরা অভিনেত্রী হিসেবে পুরস্কার জিতেছেন রিকিতা নন্দিনী শিমু। এ ছাড়া শ্ৰেষ্ঠ সম্পাদক হিসেবে সুজন মাহমুদ ও শ্রেষ্ঠ পোশাক ও সাজসজ্জায় তানসিনা শাওন শিমু চলচ্চিত্র দিয়ে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেতে যাচ্ছেন।

অনুভূতি প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘এটা সত্যিই আনন্দের যে আমাদের সিনেমাটি রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতিতে বেশ কয়েকটি শাখায় নাম লিখিয়েছে। আমি শিমু, সুজন মাহমুদ ও তানসিনা শাওনকে অভিনন্দন জানাই। এ প্রাপ্তি আমাদের কাজের প্রেরণা দেবে।’

২০১০ সালে রুবাইয়াত হোসেন নির্মাণ করেন ‘মেহেরজান’। ছবিটি দেশে আলোচনা-সমালোচনার পাশাপাশি বিদেশে পুরস্কৃতও হয়। এরপর তিনি ‘আন্ডার কনস্ট্রাকশন’ নামে একটি ছবি নির্মাণ করেন। তার পরিচালিত সর্বশেষ চলচ্চিত্র শিমু ২০২২ সালের মার্চে মুক্তি পায়। এর আগে ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে ফ্রান্স, ডেনমার্ক, কানাডা ও পর্তুগালের বিভিন্ন সিনেমা হলে বাণিজ্যিকভাবে মেইড ইন বাংলাদেশ নামে মুক্তি পায় ছবিটি। এরপর ২০২০ সালে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন হলে প্রদর্শনের পর ছবিটি বাণিজ্যিকভাবে দেখানো হয় মেক্সিকো, চীন, সিঙ্গাপুর, অস্ট্রেলিয়া, তুরস্ক, জাপান ও জার্মানির সিনেমা হলে।

বাংলাদেশে নারীর ক্ষমতায়নে ও আত্মনির্ভরশীলতা অর্জনে পোশাকশিল্পের যে ভূমিকা আছে তার আলোকে দৃঢ়চেতা নারী পোশাকশ্রমিকদের সংগ্রাম ও সাফল্যের গল্প বলা হয়েছে এ চলচ্চিত্রে। শিমু প্রতিকূলতা জয় করে সামনে এগিয়ে চলা প্রতিটি সংগ্রামী মানুষের গল্প। সমতার প্রশ্নে এ সিনেমার প্রধান চরিত্র শিমু একজন সম্মুখযোদ্ধা। রুবাইয়াত হোসেনের পাশাপাশি ছবিটির মূল কুশলীর অধিকাংশই ছিলেন নারী। চিত্রগ্রহণে সাবিনল্যাঞ্চেলিন, শব্দগ্রহণে এলিশা আলবার্ট এবং শিল্প নির্দেশনায় জোনাকি ভট্টাচার্যের নাম উল্লেখযোগ্য।

চলচ্চিত্রটির বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন রিকিতা নন্দিনী শিমু, নভেরা রহমান, দীপান্বিতা মার্টিন, পারভীন পারু, মায়াবী মায়া, মোস্তফা মনোয়ার, শতাব্দী ওয়াদুদ, জয়রাজ, মোমেনা চৌধুরী, ওয়াহিদা মল্লিক জলি, ওসামিনা লুৎফা প্রমুখ। দুটি অতিথি চরিত্রে অভিনয় করেছেন মিতা চৌধুরী ও ভারতের শাহানা গোস্বামী।

বাংলাদেশের খনা টকিজ ও ফ্রান্সের লা ফিল্মস দি এপ্রেস-মিডির ব্যানারে নির্মিত শিমুর প্রযোজক ফ্রাঁসোয়া দক্তেমা ও আশিক মোস্তফা এবং সহ-প্রযোজক পিটার হিলডাল, পেদ্রো বোর্হেস, আদনান ইমতিয়াজ আহমেদ ও রুবাইয়াত হোসেন। আর ছবিটির পরিবেশনা ও আন্তর্জাতিক বিক্রয় প্রতিনিধি ফ্রান্সের পিরামিড ফিল্মস।

আর ২০০৫ সালে মুক্তি পাওয়া ‘হাজার বছর ধরে’ সিনেমা দিয়ে প্রথম নারী নির্মাতা হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার জয় করেন কোহিনুর আক্তার সুচন্দা। ঢাকাই সিনেমার কিংবদন্তি অভিনেত্রীর এটা ছিল দ্বিতীয় চলচ্চিত্র নির্মাণ এবং এটাই শেষ। তার স্বামী প্রয়াত চলচ্চিত্রকার ও কথাসাহিত্যিক জহির রায়হানের উপন্যাস ‘হাজার বছর ধরে’ অবলম্বনে একই নামে সিনেমাটি নির্মাণ করেন তিনি। এটি মুক্তির পর বেশ সাড়া ফেলে। শ্রেষ্ঠ পরিচালক, শ্রেষ্ঠ ছবি, শ্রেষ্ঠ কাহিনীকার, শ্রেষ্ঠ চিত্রগ্রাহক, শ্রেষ্ঠ সংগীত পরিচালক ও শ্রেষ্ঠ শিল্প নির্দেশক এ ছয় শাখায় জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার জিতে নেয় সিনেমাটি। এ ছবিতে রিয়াজ, শারমিন জোহা শশি, শাহনূর, এটিএম শামসুজ্জামান, সুচন্দা, নাজমা আনোয়ার, সিরাজ হায়দার, আমীর সিরাজী, আনিসুর রহমান মিলন, শহীদুল আলম সাচ্চু প্রমুখের অভিনয় প্রশংসিত হয়েছে।

জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে নারী নির্মাতাদের মধ্যে সাফল্য পেয়েছেন নার্গিস আক্তার ও শাহনেওয়াজ কাকলীও। তবে তারা স্বীকৃতি পেয়েছেন শ্রেষ্ঠ কাহিনীকার ও চিত্রনাট্যকার হিসেবে। নার্গিস আক্তার প্রথম স্বীকৃতিটি পান ২০০১ সালে ‘মেঘলা আকাশ’ সিনেমা দিয়ে শ্রেষ্ঠ চিত্রনাট্যকার হিসেবে। এরপর ২০১০ সালে তিনি একই শাখায় পুরস্কার জিতে নেন ‘অবুঝ বউ’ সিনেমা দিয়ে। শাহনেওয়াজ কাকলী শ্রেষ্ঠ কাহিনীকার হিসেবে ২০১২ সালে ‘উত্তরের সুর’ সিনেমা দিয়ে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার ঘরে তোলেন। শ্রেষ্ঠ সংলাপ রচয়িতা বিভাগে রুবাইয়াত হোসেনও এর আগে পুরস্কার জিতেছেন। সেটি ছিল ‘আন্ডার কনস্ট্রাকশন’ সিনেমা দিয়ে ২০১৬ সালে।

এ ছাড়া চয়নিকা চৌধুরী, সামিয়া জামানদের নির্মিত সিনেমা নানা বিভাগে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার জিতলেও তারা কোনো স্বীকৃতি পাননি। তবে মেহের আফরোজ শাওন তার নির্মিত ‘কৃষ্ণপক্ষ’ সিনেমায় পুরস্কার জিতেছিলেন শ্রেষ্ঠ নারী কণ্ঠশিল্পী বিভাগে।

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা