প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০১ নভেম্বর ২০২৩ ১৬:৩০ পিএম
২০০৭ সালে আসিফ আকবরের কণ্ঠে দুটি গান দিয়ে গীতিকার হিসেবে রবিউল ইসলাম জীবনের আত্মপ্রকাশ। ‘ভাড়াটিয়া চাই’ ও ‘ভালোবাসি বলে’ শিরোনামের গান দুটি তুমুল শ্রোতাপ্রিয়তা পেয়েছিল। এরপরের গল্পটা জীবন যেন নিজের মতো করেই সাজিয়েছেন। অসংখ্য হিট ও প্রশংসিত গান, সঙ্গে নানাবিধ পুরষ্কার। গীতিকার হিসেবে প্রায় সব অর্জনই নিজের করে নিয়েছেন তিনি। এবার তার ঝুলিতে যুক্ত হলো জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার।
‘পরাণ’ সিনেমায় ‘ধীরে ধীরে তোর স্বপ্নে’ শিরোনামের গান লেখার জন্য ‘জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার-২০২২’ লাভ করেছেন।
‘জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার-২০২২’ লাভের অনুভূতি জানিয়ে গীতিকার রবিউল ইসলাম জীবন বলেন, ‘এ পুরস্কার প্রাপ্তির খবরে আমি ভীষণ আনন্দিত ও উচ্ছ্বসিত। আমার মনে হয় কোনো কাজের পুরস্কারপ্রাপ্তির বিষয়টি মহান সৃষ্টিকর্তার কাছ থেকে আসে। তবে কাজও করতে হয়। আমি আমার কাজের মধ্যেই ডুবে ছিলাম এবং কাজ করে যাচ্ছি। সৃষ্টিকর্তা আমার কাজের জন্য যথাযোগ্য প্রাপ্তি ও সম্মান দিয়েছেন। এছাড়া সবার ভালোবাসা আমাকে সব সময় নতুন নতুন গান লেখার জন্য প্রেরণা জুগিয়েছে।’
রবিউল ইসলাম জীবন আরও বলেন, ‘গান লিখে এখন পর্যন্ত অনেক পুরস্কার পেয়েছি। তবে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি প্রাপ্তির জন্য প্রত্যেকেরই একটা সুতীব্র প্রত্যাশা থাকে। আমারও সেই আশা ছিল। আমার এ স্বপ্ন পূরণের জন্য রাষ্ট্র আমাকে নির্বাচিত করেছে এজন্য পুরস্কার সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। ‘পরাণ’ সিনেমার সঙ্গে যুক্ত সবাই এই প্রাপ্তির অংশীদার বলে মনে করছি।’
‘আমার এই অর্জনের পেছনে পুরো কৃতিত্বই আমার মায়ের। অনেক সংগ্রাম, কষ্ট করে তিনি আমাকে এই পর্যন্ত নিয়ে এসেছেন। খবরটা শুনে মা শুকরিয়া প্রকাশ করেছেন। আসলে মা এটুকু বুঝেছেন, আমি একটা বড় পুরস্কার পাচ্ছি। কিন্তু এটা আসলে কী, কত বড় বা এর মর্যাদা কেমন, এতসব কিছু তো তিনি বোঝেন না। তবে যতটুকুই বুঝুক, পুরোটা জুড়েই তো ছেলের জন্য ভালোবাসা। সবচেয়ে ভালো লাগার ব্যাপার হলো, মা বেঁচে থাকতেই এমন একটি পুরস্কার পেলাম। মায়ের চোখের সামনে সন্তানের একটা বড় অর্জন হলো’- যোগ করেন জীবন।
রবিউল ইসলাম জীবনের লেখা প্রায় ৬০০-এরও বেশি গান প্রকাশিত হয়েছে। এর মধ্যে অসংখ্য গান হয়েছে জনপ্রিয়। তার লেখা গানে কণ্ঠ দিয়েছেন দেশের বিভিন্ন প্রজন্মের অনেক জনপ্রিয় ও গুণী শিল্পী। এর মধ্যে রয়েছেন রুনা লায়লা, সাবিনা ইয়াসমীন, কুমার বিশ্বজিৎ, ফেরদৌস ওয়াহিদ, আইয়ূব বাচ্চু, শাফিন আহমেদ, মাহমুদুজ্জামান বাবু, পার্থ বড়ুয়া, বেবী নাজনীন, ফাহমিদা নবী, সামিনা চৌধুরী, ডলি শায়ন্তনী, আলম আরা মিনু, এসআই টুটুল, পলাশ, রবি চৌধুরী, বিপ্লব, আগুন, বাপ্পা মজুমদার, আসিফ, বালাম, ইবরার টিপু, শফিক তুহিন, আঁখি আলমগীর, তপু, মিলন মাহমুদ, মিলা, ন্যান্সি, কনা, দিনাত জাহান মুন্নী, কানিজ সূবর্ণা, জুলি, এলিটা, পড়শী, মিলন মাহমুদ, আরফিন রুমি, হৃদয় খান, তৌসিফ, কাজী শুভ, ইমরান, বেলাল খান, পূজা, কোনাল, নওমী, রিজভী ওয়াহিদ, শহীদ, রমা, জুয়েল মোর্শেদ, অপু, লিজা, ইলিয়াস, মোহাম্মদ মিলন, ঐশী প্রমুখ।
শুধু দেশের শিল্পী নয়, পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের অনেক জনপ্রিয় শিল্পীও গেয়েছেন জীবনের লেখা গান। এরই মধ্যে ভারতীয় শিল্পীদের কণ্ঠে তার লেখা ২০টিরও বেশি গান প্রকাশ হয়েছে। শুভমিতা, জুবিন নাটিয়াল, মোহাম্মদ ইরফান, আকাশ সেন, রূপম ইসলাম, রূপঙ্কর বাগচী, ইমন চক্রবর্তী, আকৃতি কাক্করের মতো শিল্পীরা তার লেখা গান গেয়েছেন।