প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১৭ অক্টোবর ২০২৩ ১৭:১০ পিএম
‘সেই সব দিন নিয়ে মঞ্চে কাজ করেছি। পরে বাবার অনুমতি নিয়ে টেলিফিল্ম নির্মাণ করেছি। সেটি (টেলিফিল্ম) নির্মাণ করতে গিয়ে অনেক মুক্তিযোদ্ধার সাক্ষাৎকার সংগ্রহ করি। তখনই ভেবেছিলাম, যদি কখনও সিনেমা বানাই এ গল্পেই বানাব।’ নিজের প্রথম সিনেমা নির্মাণের গল্প বলতে গিয়ে এমন তথ্যই দিয়েছিলেন হৃদি হক। অভিনয়শিল্পী ও নির্মাতা পরিচিতি পাওয়া হৃদি এ চলচ্চিত্র দিয়ে চিত্রনির্মাতা হিসেবে অভিষেক করেছেন। ১৮ আগস্ট সিনেমাটি দেশের প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পায়। সরকারি অনুদানের সিনেমাটি ভালো সাড়া পেয়েছে দর্শকমহলে।
দেশ মাতিয়ে এবার আমেরিকার দর্শকের কাছে যাচ্ছে ১৯৭১ সেই সব দিন। ২৭ অক্টোবর যুক্তরাষ্ট্রের প্রেক্ষাগৃহে প্রবাসী বাংলাদেশিদের জন্য সিনেমাটি মুক্তি দেওয়া হবে। বিষয়টি নির্মাতা নিজেই তার সামাজিক মাধ্যমে নিশ্চিত করেছেন।
সাংস্কৃতিক আন্দোলন, ১৯৭১ সালের এক পরিবার ও সে সময়ের গল্পে নির্মিত হয়েছে সিনেমাটি। সিনেমার গল্পে ইনামুল হক ও লাকী ইনাম দম্পতির নাম জড়িয়ে রয়েছে। তবে এটিকে সরাসরি পরিবারের গল্প বলতে নারাজ হৃদি হক। তিনি বলেন, ‘সে সময় যারা সাংস্কৃতিক আন্দোলনের মধ্য দিয়ে দেশটাকে স্বাধীনতার দিকে এগিয়ে নিয়েছেন, তাদের কথা বলেছি সিনেমায়। ইনামুল হক ও লাকী ইনাম কিংবা সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বরা এর অংশ। সিনেমার চিত্রনাট্যের ক্ষেত্রে ইনামুল হক ও লাকী ইনাম আমার কাছে অবশ্যই অনুপ্রেরণার।’
সিনেমাটি নির্মাণ করতে গিয়ে নানান চড়াই-উতরাইয়ের মুখোমুখি হতে হয়েছে হৃদি হককে। এমনিতেই ইতিহাসভিত্তিক সিনেমা নির্মাণ করা চ্যালেঞ্জিং, তার ওপর বাজেটও কম। একাত্তরে ব্যবহৃত গাড়ি ও ট্রেন পর্দায় আনতে হিমশিম অবস্থা হয়েছে।
হৃদির ভাষ্য, ‘৫২ বছরে বাংলাদেশের অবকাঠামো একদম বদলে গেছে। দোতলা বাড়িসহ একটি পাড়া ঢাকায় আর নেই। সিনেমার জন্য আমাদের পুরো একটি পাড়াই বানিয়ে ফেলতে হয়েছে। সে সময় ব্যবহৃত গাড়িগুলো বাংলাদেশের কার কার কাছে আছে তা খুঁজে বের করেছি। ট্রেনের দৃশ্যগুলোর জন্য রেল মন্ত্রণালয়ের অনুমতি নিয়ে ট্রেনের রঙ পরিবর্তন করেছি। এগুলো আমাদের গবেষণা ও শ্রমের ফল। শিল্পনির্দেশক লিটু আনামকে ধন্যবাদ দিই। এটি একটি টিমওয়ার্ক। আমার বিশ্বাস, দেশের দর্শকের মতো যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসীরাও এ সিনেমাটি উপভোগ করবেন।’
সিনেমার প্রচারেও একাত্তরকে ধরার চেষ্টা করেছেন হৃদি। সত্তর-আশির দশকে হাতে আঁকা পোস্টারের চল ছিল। এ সিনেমার জন্যও হাতে আঁকা পোস্টার ফেরালেন তিনি। ‘আমাদের প্রচুর অর্থ ছিল না, আবার লক্ষ্য থেকে সরেও যেতে পারি না। তাই ছোট জায়গাগুলো ধরে বড় ক্যানভাস তৈরিতে মনোযোগ দিয়েছিলাম। আমাদের আড্ডায় হাতে আঁকা পোস্টারের ভাবনাটা আসে।’
পরিচালনার পাশাপাশি এতে অভিনয়ও করেছেন হৃদি। আরও অভিনয় করছেন মামুনুর রশীদ, জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায়, মুনমুন আহমেদ, শিল্পী সরকার অপু, ফেরদৌস, তারিন, লিটু আনাম, সজল, সাজু খাদেম, সানজিদা প্রীতি প্রমুখ।