প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০৩ অক্টোবর ২০২৩ ১৫:০০ পিএম
আপডেট : ০৩ অক্টোবর ২০২৩ ১৫:১০ পিএম
আবারও দুই বাংলার দর্শক ও শিল্পী-কলাকুশলীদের পদভারে মুখরিত হবে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি। দীর্ঘ লকডাউন শেষে আবার শুরু হলো উৎসব। সাজ-সাজ রবে শিল্পকলা একাডেমি প্রাঙ্গণে এখন তাই আনন্দের বন্যা। জাতীয় নাট্যশালার তিন মিলনায়তন, জাতীয় সংগীত-নৃত্যকলা-আবৃত্তি মিলনায়তন এবং জাতীয় নাট্যশালার মুক্তমঞ্চ, বাংলাদেশ মহিলা সমিতি একাডেমির সর্বত্র বইবে শিল্পের ফল্গুধারা। গঙ্গা-যমুনা নাট্য ও সাংস্কৃতিক উৎসবের মধ্য দিয়ে আবারও রঙিন হবেন শিল্পের মানুষেরা।
আগামী ৬ অক্টোবর সন্ধ্যায় রাজধানীর সেগুনবাগিচায় বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমিতে শুরু হবে ১২ দিনের এই উৎসব। সন্ধ্যায় একাডেমির জাতীয় নাট্যশালার মূল মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হবে এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠান। প্রতিবারের মতো উৎসব আয়োজন করবে গঙ্গা-যমুনা সাংস্কৃতিক উৎসব পর্ষদ। সহযোগিতায় আছে সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি ও সাউথ ইস্ট ব্যাংক লিমিটেড।
৬ অক্টোবর আহ্বায়ক গোলাম কুদ্দুছের সভাপতিত্বে উৎসবের উদ্বোধন করবেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ, নাট্যাভিনেতা রামেন্দু মজুমদার। উপস্থিত থাকবেন গণ্যমান্য ব্যক্তিত্বরা।
এ প্রসঙ্গে গঙ্গা-যমুনা সাংস্কৃতিক উৎসব ২০২৩’-এর আহ্বায়ক সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব গোলাম কুদ্দুছ বলেন, ‘আগামী ৬ অক্টোবর থেকে শুরু হয়ে ১২ দিনব্যাপী এ উৎসব চলবে আগামী ১৭ অক্টোবর পর্যন্ত। উৎসবে বাংলাদেশ শিল্পকলার জাতীয় নাট্যশালার মূল হল, পরীক্ষণ থিয়েটার হল, স্টুডিও থিয়েটার হল, জাতীয় সংগীত-নৃত্যকলা-আবৃত্তি মিলনায়তন এবং জাতীয় নাট্যশালার মুক্তমঞ্চে অনুষ্ঠিত হবে। এর বাইরেও বাংলাদেশ মহিলা সমিতি মিলনায়তনও এই উৎসবের নাটক মঞ্চায়ন ও সাংস্কৃতিক পরিবেশনা থাকবে।’
গোলাম কুদ্দুছ জানান, সাংস্কৃতিক উৎসবে বাংলাদেশ-ভারতে দেড় শতাধিক নাট্যদল, শতাধিক একক শিল্পী এবং কয়েক সহস্রাধিক সংস্কৃতিকর্মী অংশ নেবেন। উৎসবে নাটক, আবৃত্তি, সংগীতসহ শিল্পকলার প্রায় সব মাধ্যমের সাংস্কৃতিক উপস্থাপনার চেষ্টা করা হবে।
১২ দিনের এই উৎসবে প্রতিদিন সন্ধ্যা ৭টায় মিলনায়তনে নাটক মঞ্চায়ন ছাড়াও বিকাল থেকে উন্মুক্ত মঞ্চ ও নাট্যশালার লবিতে থাকছে পথনাটক, মূকাভিনয়, নৃত্যালেখ্য, সংগীত, আবৃত্তি, নৃত্য, ধামাইল গান, গম্ভিরা, বাউল গানসহ নানা সাংস্কৃতিক কার্যক্রম।
এবারের উৎসবে বাংলাদেশ ও ভারতের প্রায় ১৪৫টি দল নাটক, সংগীত, আবৃত্তি, নৃত্যে অংশগ্রহণ করবে। একক শিল্পী থাকবেন প্রায় ৮০ জন।
৬ থেকে ১৭ অক্টোবর প্রতিদিন শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালা, স্টুডিও থিয়েটার হল ও এক্সপেরিমেন্টাল হলে সন্ধ্যা ৭টা থেকে দেখা যাবে নাটক। থিয়েটার মঞ্চে আনবে ‘মেরাজ ফকিরের মা’, সংস্তব (ভারত) আনবে তাদের প্রযোজনা ‘উড়ন্ত তারাদের ছায়া’। এ ছাড়াও পুলিশ থিয়েটার ‘অচলায়তনের অপ্সরী’, অনুস্বর ‘রায়মঙ্গল’, প্রাচ্যনাট ‘অচলায়তন’, প্রাঙ্গণেমোর ‘ঈর্ষা’, নাট্যকেন্দ্র ‘তীর্থযাত্রী’, ডলস থিয়েটার (ভারত) ‘পাপেট শো : টেমিং অব দ্যা ওয়াইল্ড’, বাংলাদেশ একাডেমি অব ফাইন আর্টস (বাফা) ‘নকশীকাঁথার মাঠ (নৃত্যনাট্য)’, অনীক (ভারত) ‘ব্রাহ্মণ’, লোক নাট্যদল (সিদ্ধেশ্বরী) ‘আমরা তিনজন’, বাংলা থিয়েটার ‘নীলদর্পণ’, বাতিঘর ‘ভগবান পালিয়ে গেছে’, আরণ্যক নাট্যদল ‘নানকার পালা’, ঢাকা পদাতিক ‘ট্রায়াল অব সূর্যসেন’, দেশ নাটক ‘পারাপার’, আজকের প্রজন্ম (ভারত) ‘অধরা মাধুরী’, ঢাকা থিয়েটার ‘পঞ্চনারী আখ্যান’, প্রতিভাস ‘জায়া প্রজায়িনী’, কল্যাণী নাট্যচর্চা কেন্দ্র (ভারত) ‘ভোরের বারান্দা’, শব্দ নাট্যচর্চা কেন্দ্র ‘পীরচানের পালা’, হৃৎত্মঞ্চ ‘হ্যাপি ডেজ’, গোবরডাঙা নকশা (ভারত) ‘বিনোদিনী’, একতা নাট্য গোষ্ঠী ‘১৯৭১’, সংশপ্তক থিয়েটার, বগুড়া ‘ভাগীরথীর ভাগ্যরথ’, মৈত্রী থিয়েটার ‘মেহেরজান’, উত্তরীয় থিয়েটার ‘বঙ্গমাতা’, নাটনন্দন ‘বিষ পবনের গীত’, থিয়েটার ‘নিখাই’, কারিশমা সাংস্কৃতিক দল ‘বাল্মীকি প্রতিভা’, নাট্যধারা ‘স্বর্ণময়ী’, অনীক (ভারত) ‘ভালোবাসা’, সৌখিন থিয়েটার ‘অন্তরালের আয়না’, ভিশন থিয়েটার ‘গালিভারের সফর’ মঞ্চস্থ করবে।
একই দিনগুলোতে একই সময়ে বাংলাদেশ মহিলা সমিতির ড. নীলিমা ইব্রাহিম মিলনায়তনে দেখা যাবে নাটক। সেখানে থিয়েটার আর্ট ইউনিট ‘কোর্ট মার্শাল’, মহাকাল নাট্য সম্প্রদায় ‘শিখণ্ডী কথা’, এথিক ‘নেতা যে রাতে নিহত হলেন’, লোক নাট্যদল (বনানী) ‘সুন্দর’, বাগেরহাট থিয়েটার ও ফরিদপুর থিয়েটার ‘রাজা গিলগামেশ’, চন্দ্রকলা থিয়েটার ‘তামাশা’, কণ্ঠশীলন ‘তাজমহলের টেণ্ডার’, নাগরিক নাট্য সম্প্রদায় ‘অন্তরে বাহিরে চিত্রাঙ্গদা’, সময় ‘ভাগের মানুষ’, দৃশ্যপট ‘সক্রেটিসের জবানবন্দী’, নাট্যম রেপার্টরী ‘কোথায় জলে মরাল চলে’ নাটকগুলো মঞ্চে আনবে।
এদিকে জানা গেছে, ৪ অক্টোবর এই উৎসব উপলক্ষে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। সেখানে উৎসবের বিস্তারিত জানানো হবে।