প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১২:৪৫ পিএম
সব কটা জানালা
খুলে দাও না, একটি বাংলাদেশ তুমি জাগ্রত জনতা, আমায় গেঁথে দাও না মাগো, দুই ভুবনের
দুই বাসিন্দা বন্ধু চিরকাল, কথা বলব না বলেছি, পৃথিবীতে প্রেম বলে কিছু নেই, কাঠ পুড়লে
কয়লা হয়, ডাকে পাখি খোলো আঁখি, এই অন্তরে তুমি ছাড়া নেই কারও নাম, আমার মনের আকাশে
আজ জ্বলে শুকতারা, তোমার হয়ে গেছি আমি, কাল সারা রাত ছিল স্বপনের রাত, কত যে তোমাকে
বেসেছি ভালো ইত্যাদি গান শুনলে আজও নস্টালজিক হন শ্রোতারা। হৃদয়ে ভর করে অন্যরকম ভালোলাগার
অনুভূতি। গানগুলো সবার চেনা, কিন্তু এ গানগুলোর গীতিকারকে চেনেন কজন? কিংবা এ প্রজন্মের
কাছে তার নাম ও কর্ম কতটা তুলে ধরা যাচ্ছে সে প্রশ্ন উঠতেই পারে।
এসব গানের গীতিকার
নজরুল ইসলাম বাবু। ছিলেন একজন বীর মুক্তিযোদ্ধাও। অকালমৃত্যু তাকে নতুন প্রজন্মের কাছে
বিস্মৃত করেছে বটে, তবে তার লেখা গান দিয়ে চিরকাল সব প্রজন্মের শ্রোতার মনের মন্দিরে
পূজিত হবেন তাতে সন্দেহ নেই। ১৯৯০ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর ঢাকায় ইন্তেকাল করেন তিনি।
বয়স ছিল মাত্র ৪১ বছর। আজ এই গুণীর ৩৩তম মৃত্যুবার্ষিকী।
নজরুল ইসলাম বাবু
১৯৪৯ সালের ১৭ জুলাই জামালপুরের মাদারগঞ্জ উপজেলার চরনগর গ্রামে মাতুলালয়ে জন্মগ্রহণ
করেন। তার পৈতৃকবাড়ি একই উপজেলার হেমাড়াবাড়ী গ্রামে। তার বাবার নাম বজলুল কাদের এবং
মা রেজিয়া বেগম। বাবা ছিলেন সংগীতানুরাগী।
১৯৭৩ সালে বাংলাদেশ
বেতার ও টেলিভিশনে গীতিকার হিসেবে তালিকাভুক্ত হন। এরপর লিখতে থাকেন অসাধারণ সব গান।
১৯৭৮ সালে সুরকার আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুলের সঙ্গে প্রথম চলচ্চিত্রে গান লেখা শুরু করেন।
তিনি যেসব ছবিতে গান লেখেন তার মধ্যে উল্লেখযোগ্যÑ আঁখি মিলন, দুই পয়সার আলতা, সাক্ষী,
মহানায়ক, নসিব, বউশাশুড়ি, সুখ, প্রতিরোধ, শুভদা, প্রতিঘাত, উসিলা, চাকর, পদ্মা মেঘনা
যমুনা, প্রেমের প্রতিদান, সিপাহি প্রভৃতি। নজরুল ইসলাম বাবুর গানের সংখ্যা ১১৩টি। এর
মধ্যে ৫২টি আধুনিক ও ৯টি ধর্মীয় গান।
নজরুল ইসলাম বাবু
১৯৯১ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত চাষী নজরুল ইসলাম পরিচালিত পদ্মা মেঘনা যমুনার গীত রচনার জন্য
শ্রেষ্ঠ গীতিকার হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন। আর মৃত্যুর তিন দশক পর
২০২২ সালে পান একুশে পদক।
২০১৭ সালে তাকে
নিয়ে প্রকাশিত হয় ‘নজরুল ইসলাম বাবু স্মারকগ্রন্থ’। গ্রন্থটি সংকলন করেছেন আরেক খ্যাতিমান
গীতিকবি মোহাম্মদ রফিকউজ্জামান।
নজরুল ইসলাম বাবু
বাংলাদেশ গীতিকবি সংসদের প্রথম কার্যনির্বাহী পরিষদের (১৯৭৮-৭৯) সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন।
ব্যক্তিজীবনে
নজরুল ইসলাম বাবু ১৯৮৪ সালে শাহীন আক্তারের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। তাদের দুই
কন্যাসন্তানÑ নাজিয়া ও নাফিয়া।