প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১০:৫১ এএম
আপডেট : ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ২২:৩৬ পিএম
বাংলাদেশ তথা উপমহাদেশের প্রখ্যাত গীতিকার গাজী মাজহারুল আনোয়ার। ৫০ বছরের বেশি সময় ধরে তিনি গান লিখেছেন। তার লেখা বহু গান কালজয় করেছে। দেশপ্রেম, মুক্তিযুদ্ধ, প্রেম-বিরহ ও জীবনের নানা বোধকে তিনি তুলে ধরেছেন গানে গানে। সেসব গান তাকে করেছে গণমানুষের সফল প্রতিনিধি। প্রযোজক, পরিচালক, কাহিনীকার হিসেবেও তিনি ছিলেন সমাদৃত। কাজের স্বীকৃতি হিসেবে পেয়েছেন কোটি মানুষের ভালোবাসা। রাষ্ট্র তাকে দিয়েছে স্বাধীনতা পদক ও একুশে পদক।
আজ এই গুণী মানুষটির মৃত্যুবার্ষিকী। তিনি গত বছরের আজকের দিনে ইন্তেকাল করেন। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী জোহরা গাজী, দুই সন্তান উপল ও দিঠি, পরিবারের আরও অনেক সদস্যসহ আত্মীয়স্বজন, বন্ধুবান্ধব রেখে গেছেন।
একজন গীতিকার হিসেবে সাতবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পাওয়া গাজী মাজহারুল আনোয়ার বহু সিনেমার কাহিনী রচনা করেছেন। নিজেই সিনেমা প্রযোজনা করেছেন, পরিচালনাও করেছেন। একজন গাজী মাজহারুল আনোয়ারের গান বিশেষত দেশের গান মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন মুক্তিযোদ্ধাদের অনুপ্রেরণা জুগিয়েছে। তার লেখা ‘জয় বাংলা বাংলার জয়’ বাংলাদেশের কালজয়ী এক গান। এ ছাড়াও বহু দেশের গান, আধুনিক গান, সিনেমার গানে তিনি ছিলেন অপ্রতিদ্বন্দ্বী একজন গীতিকার।
গাজী মাজহারুল আনোয়ারের প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে তার পরিবার কিছু উদ্যোগ নিয়েছে। তার দুই সন্তান উপল ও দিঠি জানান, রাজধানীর বারিধারা, গুলশান, বনানীর বিভিন্ন এতিমখানায় এতিমদের খাওয়ানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে। পাশাপাশি রাজধানীর আগারগাঁওয়ে অবস্থিত অটিস্টিক সেন্টারেও যাবেন তারা। সেখানেও তারা কিছু সময় কাটাবেন এবং তাদের সঙ্গে খাওয়া-দাওয়া করবেন। বাদ মাগরিব বারিধারা মসজিদে মিলাদ মাহফিল ও দোয়ার আয়োজন করা হয়েছে। এরপর রাতে পরিবারের সদস্য ও আত্মীয়স্বজনরা ঘরোয়াভাবেও করবেন কিছু আয়োজন।
গাজী মাজহারুল আনোয়োরের ছেলে উপল বাবাকে স্মরণ করে বলেন, ‘আব্বু নেই, বিষয়টি আমি এখনও বিশ্বাস করতে পারি না। আমার কেবলই মনে হয় আব্বু আমাদের সঙ্গেই আছেন মাথার ওপর ছায়া হয়ে। বিগত একটি বছর কীভাবে যে আব্বুকে ছাড়া কেটে গেল আমি ভাবতেই পারি না। আমি প্রায় প্রতিদিনই আব্বুর কবরের পাশে গিয়ে দাঁড়িয়েছি, দোয়া করেছি। আসলে আব্বুকে ছাড়া খুব অসহায় লাগে, একা লাগে। আম্মু আমাদের আগলে রেখেছেন ঠিকই। তারপরও যার বাবা নেই সেই আসলে বুঝতে পারে বাবা না থাকার কী যে কষ্ট। আমার আব্বুর জন্য সবাই দোয়া করবেন।’
গাজী মাজহারুল আনোয়োরের কন্যা দিঠি বলেন, ‘আমার আব্বুকে সবাই ভালোবাসেন, এটা নিজের চোখে দেখতে পেতাম। কত চেনা-অচেনা মানুষ আব্বুর সান্নিধ্য পাওয়ার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করতেন। আব্বুর মৃত্যুর পর তার প্রতি মানুষের অসীম ভালোবাসা দেখে সন্তান হিসেবে আমাকে তা আরও গর্বিত করেছে। সেই মানুষটা আজ চোখের সামনে নেই। প্রতিটি মুহূর্তেই আব্বুকে মিস করি। আজ প্রথম মৃত্যুবার্ষিকীতে আব্বুর জন্য দোয়া চাই সবার কাছে।’
এদিকে চ্যানেল আইতে আজ সকালে ‘গান দিয়ে শুরু’ অনুষ্ঠানে বাবার লেখা গান পরিবেশন করবেন দিঠি। এ ছাড়াও দেশ টিভি, বাংলাভিশন, এশিয়ান টিভি, গ্লোবাল টিভি গাজী মাজহারুল আনোয়ারকে ট্রিবিউট করে বিভিন্ন অনুষ্ঠান প্রচার করবে।