× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

সানী-মৌসুমী দম্পতির ২৮ বছর

প্রবা প্রতিবেদক

প্রকাশ : ০২ আগস্ট ২০২৩ ১৩:৩৬ পিএম

আপডেট : ০২ আগস্ট ২০২৩ ১৪:২৩ পিএম

সানী-মৌসুমী দম্পতির ২৮ বছর

ঢাকাই সিনেমার তারকা দম্পতি অভিনেতা ওমর সানী ও অভিনেত্রী মৌসুমী। নব্বইয়ের দশক থেকে দেশের ইন্ডাস্ট্রিতে নিয়মিত অভিনয় করে যাচ্ছেন তারা। একসঙ্গে জুটি বেঁধে উপহার দিয়েছেন অসংখ্য ব্যবসাসফল সিনেমা। রুপালি পর্দার জনপ্রিয় এ জুটি ব্যক্তিজীবনে আজ ২৯ বছরে পা রেখেছেন।

ওমর সানী ও মৌসুমী বিয়ে করেছিলেন ১৯৯৫ সালের ৪ মার্চ। তবে বিয়ের বিষয়টি সে সময় গোপন করা হয়। তারপর বিয়ের পাঁচ মাস পর ২ আগস্ট বিবাহোত্তর সংবর্ধনার আয়োজন করে সবাইকে নতুন করে বিয়ের তারিখ জানানো হয়। সেদিন থেকেই ২ আগস্ট নিজেদের বিবাহবার্ষিকী পালন করে আসছেন তারা।

নিজেদের ২৮তম বিবাহবার্ষিকী নিয়ে ওমর সানী প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, ‘দেখতে দেখতে একসঙ্গে ২৮টি বছর পার করে দিলাম দুজনে। দীর্ঘ এই সময় কীভাবে চোখের পলকে পার হয়ে গেল বুঝতেই পারলাম না। এভাবেই যেন একসঙ্গে পৃথিবীর বুকে ভালোবাসায় বেঁচে থাকতে পারি সবার কাছে সেই দোয়াই চাই।’

দিনটি নিয়ে পরিকল্পনার কথা জানিয়ে সানী বলেন, ‌‘সারা দিন বাসায়ই থাকব। সন্ধ্যার সময় মৌসুমীকে নিয়ে একটু বের হব। এরপর দুজনে মিলে বাচ্চাদের সঙ্গে বাইরে রাতের খাবার খাব। ছেলে, ছেলের বউ, মেয়ে তারাই এখন আমাদের সুখের মূলমন্ত্র। তাদের পরিকল্পনাগুলোকেই গুরুত্ব দিই আমরা। বাবা-মায়ের জীবনের বিশেষ এই দিন নিয়ে তাদের উৎসাহের শেষ নেই। আমরা উপভোগ করছি।

তবে দিনের শুরুতে ফজরের নামাজ শেষে আল্লাহর কাছে আমাদের দাম্পত্য জীবনের জন্য প্রার্থনা করব। কারণ তিনি চেয়েছিলেন বলেই আমরা জীবনের দীর্ঘ এই সময় একসঙ্গে সুখে-দুঃখে পার করতে পেরেছি। সামনের দিনগুলোতেও যেন এভাবেই থাকতে পারি। সেই প্রার্থনাই করব।’

দাম্পত্য জীবনে মৌসুমীর কোন কোন বিষয়টি বেশি মুগ্ধ করেছে, জানতে চাইলে সানী আরও বলেন, ‘তার মধ্যে কোনো লোভ নেই। সে সাধারণ জীবনযাপন করতে পছন্দ করে। চাহিদা কখনোই তাকে আকৃষ্ট করতে পারেনি। এ ছাড়া সব সময় মানুষের পাশে থাকার চেষ্টা আমাকে ভীষণ গর্বিত করে।’

মৌসুমীও দাম্পত্য জীবন নিয়ে আনন্দিত। তিনি বলেন, ‌‘ভালোবেসে অনেকেই ঘর বাঁধে। কিন্তু সুখের দেখা পায় কজনে। আমরা দুজন সৌভাগ্যবান, সুখের দেখা পেয়েছি। ক্যারিয়ারের খুব গুরুত্বপূর্ণ সময়ে আমরা বিয়ে করেছিলাম। এটা ছিল একটা দুঃসাহস। বিরাট বড় সিদ্ধান্ত। খোদা আমাদের সহায় হয়েছেন। সংসার পূর্ণ করে রেখেছেন সুখ-ভালোবাসায়। এখন সন্তানরাই আমাদের সবকিছু। তাদের জন্য দোয়া চাই।’

১৯৯৪ সালে পরিচালক দিলীপ সোম মৌসুমী-ওমর সানীকে নিয়ে নির্মাণ করেন ‘দোলা’ নামের সিনেমা। এ সিনেমা দিয়েই একসঙ্গে পথচলা শুরু এ জুটির। এরপর বহু হিট সিনেমা উপহার দিয়েছেন তারা। মৌসুমী-ওমর সানী জুটির উল্লেখযোগ্য সিনেমাগুলো হলো ‘আত্ম অহংকার’, ‘প্রথম প্রেম’, ‘মুক্তির সংগ্রাম’, ‘হারানো প্রেম’, ‘গরিবের রানী’, ‘প্রিয় তুমি’, ‘সুখের স্বর্গ’, ‘মিথ্যা অহংকার’, ‘ঘাত প্রতিঘাত’, ‘লজ্জা’, ‘কথা দাও’ ও ‘সাহেব নামে গোলাম’।

সানী-মৌসুমীর সংসার আলো করে আছে পুত্র ফারদিন এহসান ও কন্যা ফাইজা। ছেলে দেশেই থাকেন। বিয়ে করেছেন। স্ত্রীর নাম আয়েশা। আর কন্যা ফাইজা যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক। সেখানেই করছেন পড়াশোনা।

যেভাবে প্রেম ও বিয়ে

সানী-মৌসুমী জুটির অসংখ্য ভক্ত সারা দেশে। তাদের নানা বিষয় নিয়ে জানার আগ্রহও অনেক বেশি। অনেকে জানতে চান এ জুটির প্রেম কীভাবে হয়েছিল। বিয়েই বা হলো কী করে। বিভিন্ন সাক্ষাৎকারে সানী-মৌসুমী সেই গল্প শুনিয়েছেন। জেনে নেওয়া যাক সেই গল্প ছোট্ট করে। নব্বইয়ের ফটোসুন্দরী মৌসুমীর প্রথম সিনেমা প্রয়াত সুপারস্টার সালমান শাহের বিপরীতে ‘কেয়ামত থেকে কেয়ামত’। এ কথা কমবেশি সবারই জানা। কিন্তু অনেকেরই হয়তো অজানা যে ওই সিনেমার মহরতেই প্রথম দেখা হয় সানী-মৌসুমীর। যদিও সেদিন তাদের কথা হয়নি। এরপর নতুন একটি সিনেমায় ওমর সানীর বিপরীতে মৌসুমীকে নিতে চেয়েছিলেন সে সময়কার পরিচালক শেখ নজরুল ইসলাম। এ বিষয়ে কথা বলতে সানীকে নিয়ে মৌসুমীর বাসায় হাজির হন পরিচালক। ড্রয়িংরুমে অপেক্ষার ২০ মিনিট পর মৌসুমীর দেখা মিললেও সেদিন সানীর সঙ্গে সিনেমার অফার ফিরিয়ে দেন মৌসুমী। কারণ ব্যস্ত শিডিউল। সেদিনই প্রথম কথা হয় দুজনের। ১৯৯৩ সালে ওমর সানী-মৌসুমীকে নিয়ে আরও একটি সিনেমা বানানোর পরিকল্পনা হয়। তবে সেই সিনেমার নাম দোলা শুনে ওমর সানী শুরুতে প্রস্তাবটি ফিরিয়ে দেন। কারণ নারীপ্রধান সিনেমা তিনি করতে চাচ্ছিলেন না। পরে সিনেমার গল্প পড়ে ভালো লাগায় রাজি হয়ে যান। জুটি গড়েন সানী-মৌসুমী। সেই শুরু। দোলার শুটিং চলাকালে সিলেটে আউটডোরে দুজনের মধ্যে মনোমালিন্য হয়। যদিও তা বেশি সময় স্থায়ী হয়নি। এ সিনেমার সেট থেকেই মৌসুমীর প্রতি ভালোলাগা তৈরি হয় ওমর সানীর। বিভিন্ন সাক্ষাৎকারে অভিনেতা নিজে তা জানিয়েছেন। এরপর ১৯৯৫ সালে আত্ম অহংকারের শুটিং করতে সিলেটের জৈন্তাপুর যান সানী ও মৌসুমী। ততদিনে দুজনের মধ্যে বোঝাপড়া বেড়েছে।

৩ নভেম্বর মৌসুমীর জন্মদিন। সে বছরের জন্মদিনে সানীকে দাওয়াত করেন মৌসুমী। দাওয়াত পেয়ে চিন্তায় পড়ে যান সানী। কী উপহার দেওয়া যায় ভেবে পাচ্ছিলেন না। গলায় তখন সাড়ে তিন-চার ভরি ওজনের একটি সোনার চেন ছিল। মৌসুমীকে সেই চেন উপহার দিয়েছিলেন সানী। সেই চেন ছিল মায়ের কাছ থেকে পাওয়া সানীর বিশেষ উপহার। এ উপহারটি দুজনকে অজান্তেই একটা মায়ায় বেঁধেছিল। আত্ম অহংকার মুক্তির পর একটি ম্যাগাজিনে সাক্ষাৎকার দিতে গিয়ে ওমর সানী মুখ ফসকে বলেই ফেলেন, ‘আমি মৌসুমীকে ভালোবাসি। ও আমাকে ভালোবাসে কি না জানি না।’

সেই সাক্ষাৎকার পড়ে মৌসুমী অবাক হয়েছিলেন। প্রশ্নও করেছিলেন ‘এভাবে বলা কি আপনার ঠিক হলো?’ সানীর তখন সহজ উত্তর, ‘বলেছি তো বলেছিই। ঠিক হইছে কি না জানিটানি না।’ ততদিনে ওমর সানীর মা-ও মৌসুমীকে ভীষণ পছন্দ করে ফেলেছেন। মৌসুমীর নানিরও সানীকে বেশ পছন্দ। এবার দুজন উদ্যোগী হলেন। একদিন সানীর বাসায় মৌসুমীকে নিয়ে হাজির তার নানি। তিনি সোজা সানীর মাকে বললেন, ‘এক্ষুনি কাজি ডাকেন, আজই ওদের বিয়ে দেব।’ কাজি ডেকে সেদিনই হলো বিয়ে। দিনটা ছিল ১৯৯৫ সালের ৪ মার্চ। এ বিয়ের খবর কেউ জানতে পারেনি সেদিন। বিষয়টি জানাজানি হয় মৌসুমী অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার পর। এ দম্পতির প্রথম সন্তান ফারদিন গর্ভে আসার চার মাস পর বিয়ের অনুষ্ঠান করেন তারা। ১৯৯৫ সালের ২ আগস্ট রাওয়া ক্লাবে ঘটা করে হয়েছিল ওমর সানী-মৌসুমীর বৌভাতের অনুষ্ঠান।

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা