প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২১ জুলাই ২০২৩ ১২:৫৪ পিএম
দীর্ঘ বিরতির পর মঞ্চের জন্য নাটক নির্দেশনা দিচ্ছেন অভিনেতা-নির্মাতা তৌকীর আহমেদ। এর নাম রাখা হয়েছে ‘তীর্থযাত্রী’। এটি প্রযোজনা করছে নক্ষত্র। গেল ১৮ মার্চ যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের কুইন্স থিয়েটারের মূল মঞ্চে তীর্থযাত্রীর উদ্বোধনী প্রদর্শনী হয়। হুমায়ূন কবির রচিত ‘তীর্থযাত্রী তিনজন তার্কিক’ গ্রন্থ অবলম্বনে এটি সাজানো হয়েছে। নাটকের সংগীতায়োজন করছেন পিন্টু ঘোষ। সেই প্রদর্শনী প্রবাসীদের মধ্যে বেশ সাড়া ফেলে।
নাটকটি আবারও মঞ্চে নিয়ে আসছেন তৌকীর আহমেদ। তবে এবার আর শুধু বিদেশে নয়, তীর্থযাত্রী আসবে দেশের মঞ্চেও। ২, ৩ ও ৪ আগস্ট নাট্যকেন্দ্রের ১৬তম প্রযোজনাটি জাতীয় নাট্যশালায় মঞ্চায়িত হবে। পাশাপাশি ২৬ আগস্টে ম্যাডিসন থিয়েটারে এবং ৮ সেপ্টেম্বর দক্ষিণ এশীয় থিয়েটার উৎসবে তীর্থযাত্রী পুনরায় মঞ্চায়িত হবে।
এ বিষয়ে তৌকীর আহমেদ বলেন, ‘একটি নাটকের পুনর্নির্মাণ আমি প্রতিসরণে করেছি, তবে এবারের অভিজ্ঞতা ভিন্ন, প্রবাসজীবনের ফাঁকে স্বল্পসময়ে প্রতিদিন মহড়া আর নয় দিনের থিয়েটার ক্যাম্পে দিনরাত পরিশ্রমের মধ্য দিয়ে এগিয়ে চলেছে তীর্থযাত্রী। একদল পরিশ্রমী কর্মীর শ্রম ও ঘামে এখন চলছে চূড়ান্ত পর্যায়ের মহড়া। সেট প্রপস আর কস্টিউমের কাজ।
নাটকের পুনর্নির্মাণ মানে আগের প্রযোজনাটিকে ছাড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা, আগের ভুলগুলো নতুন করে আবিষ্কার করা, সংশোধন ও যোজন-বিয়োজনের মধ্য দিয়ে নতুন এক নির্মাণ, নতুন এক উপলব্ধিতে উত্তীর্ণের চেষ্টা। দর্শক, আপনাদের সেই অভিজ্ঞতার সঙ্গী হওয়ার আমন্ত্রণ।’
অনেক দিন পর ঢাকার মঞ্চে নির্দেশনা প্রসঙ্গে এই অভিনেতা ও নির্মাতা বলেন, ‘অনেক দিন পর এই ফেরা যেমন রোমাঞ্চকর তেমনি ভয়ংকর কষ্টসাধ্য একটি কাজ। থিয়েটার মানেই চ্যালেঞ্জ, অনিশ্চয়তা আর ভীতি ছাপিয়ে নতুন কিছু করা।’
প্রসঙ্গত, স্থাপত্য, টেলিভিশন ও চলচ্চিত্রের কাজের ব্যস্ততায় মঞ্চে তৌকীর আহমেদের দীর্ঘ বিরতি পড়েছে। ঢাকায় নিজের নাট্যদল নাট্যকেন্দ্রের জন্য ২০২০ সালে ‘অজ্ঞাতনামা’ নামে একটি নাটকের কাজ শুরু করেছিলেন তিনি। কিন্তু করোনা মহামারির প্রকোপে থমকে যায় কাজটি। তিনি বলেন, ‘শিগগিরই এটি মঞ্চে আনার ইচ্ছা আছে।’
অজ্ঞাতনামা প্রথমে মঞ্চনাটক হিসেবে লিখেছিলেন তৌকীর আহমেদ। মঞ্চনাটক হিসেবেই এটি বই আকারে প্রকাশিত হয়। কিন্তু মঞ্চের আগে অজ্ঞাতনামা রূপ নেয় চলচ্চিত্রে; যা দারুণ প্রশংসিত হয়। তার পরিচালিত অন্য চলচ্চিত্রগুলো হলো জয়যাত্রা (২০০৪), রূপকথার গল্প (২০০৬), দারুচিনি দ্বীপ (২০০৭), হালদা (২০১৭), ফাগুন হাওয়ায় (২০১৯) ও স্ফুলিঙ্গ (২০২১)।
তৌকীর আহমেদ অভিনীত প্রথম মঞ্চনাটক ১৯৮৬ সালে থিয়েটার প্রযোজিত ‘যুদ্ধ এবং যুদ্ধ’। এটি রচনা করেন সৈয়দ শামসুল হক, নির্দেশনা দেন তারিক আনাম খান। ১৯৮৭ সালে আবদুল্লাহ আল মামুনের ‘ তোমরাই’ নাটকে অভিনয় করেন তিনি। এরপর নাট্যকেন্দ্রের ‘বিচ্ছু’, ‘তুঘলক’, ‘সুখ-জেরা’, ‘হয়বদন’, ‘ক্রুসিবল’ ও ‘প্রতিসরণ’ নাটকে কাজ করেছেন। এর বাইরে গাজী রাকায়েতের নির্দেশনায় বিজয় টেন্ডুলকারের ‘কন্যাদান’, মামুনুর রশীদের ‘আদিম’ এবং শিল্পকলায় ‘ শেষ নবাব’ কিংবা বটতলার ‘হায়দার’-এর ইংরেজি প্রযোজনা ‘যমুনা’য় দেখা গেছে তাকে। এসব প্রযোজনায় ভালোবাসার সঙ্গে কখনও অভিনয়, মঞ্চ পরিকল্পনা, নির্দেশনা কিংবা রচনার কাজ করেছেন তিনি।