× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

একাত্তর বছরে শাবানা

প্রবা প্রতিবেদক

প্রকাশ : ১৫ জুন ২০২৩ ১২:২৫ পিএম

আপডেট : ১৫ জুন ২০২৩ ১৩:৩৬ পিএম

একাত্তর বছরে শাবানা

টানা তিন দশক সুনিপুণ অভিনয়ের মাধ্যমে তিনি জয় করে নিয়েছেন কোটি দর্শকের মন। অনেক দিন হলো সিনেমা করেন না। চোখের দেখাও মেলে না নিয়মিত। তবু তিনি এ দেশের সিনেমাপ্রেমী দর্শকের কাছে সিনেমার সবচেয়ে বড় আবেগের নাম, প্রিয় মানুষ। আজও তার নামে ভালোবাসা ও শ্রদ্ধার বৃষ্টি নামে। তিনি বাংলাদেশি চলচ্চিত্রের সোনালি দিনের প্রথম সারির চিত্রনায়িকা শাবানা।

আজ তার জন্মদিন। ১৯৫২ সালের ১৫ জুন চট্টগ্রামের রাউজান উপজেলার ডাবুয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন শাবানা। তার পারিবারিক নাম আফরোজা সুলতানা রত্না। ঢাকার গেন্ডারিয়া হাই স্কুলে ভর্তি হলেও মাত্র নয় বছর বয়সে তার শিক্ষাজীবনের ইতি ঘটে। ক্লাস ফাইভে থাকতে প্রথম সিনেমায় অভিনয়ে নাম লেখান শাবানা। এহতেশাম পরিচালিত ‘নতুন সুর’ ছবিতে তিনি শিশুশিল্পী হিসেবে অভিনয় করেন। ‘চকোরী’ ছিল নায়িকা শাবানার শুরু। নতুন সুর ও চকোরীর পরিচালক এহতেশাম সম্পর্কে শাবানার বাবার খালাতো ভাই। এহতেশামই শাবানার বাবাকে বলেছিলেন, ‘ তোর মেয়েটাকে আমি একটি ছবিতে নিতে চাই।’ শাবানার বাবা তখন নাকি এভাবেই বলেছিলেন, ‘আমার মেয়ে কীভাবে অভিনয় করবে! সে এত লাজুক, কারও সামনেই আসতে চায় না।’ নাছোড়বান্দা এহতেশাম বলেছিলেন, ‘ তোর মেয়েটার মতো একটা মেয়েই আমি খুঁজছি।’ এরপর শাবানার বাবা রাজি হন। নতুন সুরে নায়ক-নায়িকা ছিলেন রহমান-রওশান আরা।

ওই সময় পর্দায় নাম ছিল রত্না। এরপর ‘তালাশ’সহ বেশ কয়েকটি সিনেমায় নৃত্যশিল্পী ও অতিরিক্ত শিল্পী হিসেবে অভিনয় করেন তিনি। সহনায়িকা চরিত্রে দেখা যায় ‘আবার বনবাসে রূপবান’ ও ‘ডাকবাবু’তে।


১৯৬৭ সালে এহতেশাম পরিচালিত চকোরীতে নাদিমের বিপরীতে নায়িকা হয়ে অভিনয় করেন তিনি। আর তখন রত্না থেকে হয়ে যান শাবানা। বাংলা ও উর্দু ভাষায় নির্মিত চকোরী ব্যবসাসফল হয়। এরপর শাবানাকে আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি।


শাবানার ভাষ্যমতে, ২২-২৩ বছর আগে শেষবারের মতো ‘ঘরে ঘরে যুদ্ধ’ সিনেমার শুটিংয়ের জন্য ক্যামেরার সামনে দাঁড়ান তিনি। তিন দশকের ক্যারিয়ারে ২৯৯টি সিনেমায় কাজ করেছেন। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি অভিনয় করেছেন আলমগীরের বিপরীতে। বাংলাদেশি চলচ্চিত্রের সুদর্শন এই নায়কের বিপরীতে তার অভিনীত ছবির সংখ্যা ১৩০টির মতো। এর পরই যার সঙ্গে বেশি অভিনয় করেছেন তিনি হলেন নায়করাজ রাজ্জাক। এ ছাড়া নাদিম, ফারুক, জসীম, সোহেল রানার সঙ্গে জুটি বেঁধে শাবানা উপহার দেন জনপ্রিয় অনেক ছবি। ইলিয়াস কাঞ্চনের সঙ্গেও তিনি দুটি সিনেমায় নায়িকা হয়েছেন। শাবানার বহু সিনেমাই কালজয়ী। সেসবের মধ্যে উল্লেখ্যযোগ্য ‘ভাত দে, অবুঝ মন, ছুটির ঘণ্টা, দোস্ত দুশমন, সত্য মিথ্যা, রাঙা ভাবী, বাংলার নায়ক, ওরা এগারো জন, বিরোধ, আনাড়ি, সমাধান, জীবনসাথী, মাটির ঘর, লুটেরা, সখি তুমি কার, কেউ কারো নয়, পালাবি কোথায়, স্বামী কেন আসামি, দুঃসাহস, পুত্রবধূ, আক্রোশ, চাঁপাডাঙার বউ ইত্যাদি।


একটা সময় স্বামীকে নিয়ে প্রতিষ্ঠা করেন প্রযোজনা সংস্থা এসএস প্রোডাকশন। ওই প্রতিষ্ঠানের ব্যানারে নির্মিত হয়েছে অনেক জনপ্রিয় সিনেমা। অভিনয়ের স্বীকৃতি হিসেবে শাবানা ১০ বার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন। পেয়েছেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে আজীবন সম্মাননা। অন্যান্য পুরস্কারের মধ্যে রয়েছে : প্রযোজক সমিতি পুরস্কার, বাচসাস পুরস্কার, আর্ট ফোরাম পুরস্কার, নাট্যসভা পুরস্কার, কামরুল হাসান পুরস্কার, নাট্যনিকেতন পুরস্কার, ললিতকলা একাডেমি পুরস্কার ও কথক একাডেমি পুরস্কার। এ ছাড়া বাংলাদেশের হয়ে বিভিন্ন চলচ্চিত্র উৎসবে অংশ নেন শাবানা।

১৯৭৩ সালে সরকারি কর্মকর্তা ওয়াহিদ সাদিককে বিয়ে করেন শাবানা। সেই সংসারে তিন সন্তানের জননী তিনি। তারা হলেন বড় মেয়ে সুমী, ছোট মেয়ে ঊর্মি ও ছেলে নাহিন। বড় মেয়ে সুমী ইকবাল এমবিএ করেছেন। বিয়ে করে এখন পুরোদস্তুর গৃহিণী। ছোট মেয়ে ঊর্মি সাদিক হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি করেছেন। ছেলে নাহিন সাদিক রটগার্স বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মাস্টার্স করে চাকরি করছেন।

সিনেমার পর্দা কিংবা চোখের দেখার সীমানা পেরিয়ে শাবানা থাকেন সাত সমুদ্র তেরো নদীর ওপারে। কিন্তু তার সিনেমায় তার সৌন্দর্য, প্রেম, মমতাময়ী স্ত্রী ও মায়ের চরিত্রগুলো এ দেশের মানুষের সঙ্গে কোনো দিন দূরত্ব তৈরি করতে পারেনি, পারবেও না। তিনি ছিলেন, আছেন, থাকবেন সবার প্রিয় শাবানা হয়ে।

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা