× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

তিন নাট্যব্যক্তিত্বকে গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশনের চিঠি

প্রবা প্রতিবেদক

প্রকাশ : ০২ জুন ২০২৩ ১৮:৩১ পিএম

আপডেট : ০২ জুন ২০২৩ ১৮:৩১ পিএম

তিন নাট্যব্যক্তিত্বকে গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশনের চিঠি

বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমিতে বেশ কিছু বিষয় নিয়ে সাম্প্রতিক সময়ে উওপ্ত পরিস্থিতি বিরাজ করছে। এরই মধ্যে বেশ কয়েকজন নাট্যজন চলমান ঘটনা নিয়ে ১৩ এপ্রিল একটি চিঠি প্রদান করে বাংলাদেশ গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশন বরাবর। তবে গত ২৮ মে রামেন্দু মজুমদার, মামুনুর রশীদ ও ম. হামিদ বরাবর সে চিঠির জবাবে একটি দীর্ঘ পত্র দেয়া হয়। 

সেখানে লেখা হয়-  

ফেডারেশানের সাবেক সেক্রেটারি জেনারেল জনাব কামাল বায়েজীদ ও সম্পাদক (অর্থ) জনাব রফিকউল্লাহ সেলিম এর অব্যাহতি প্রসঙ্গে আপনাদেরকে সার্বিক বিষয়টি মৌখিকভাবে অবহিত করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে আনীত ২৯টি অভিযোগ যা প্রমাণিত হয়েছে কেন্দ্রীয় পরিষদের কাছে এবং উক্ত বিষয়ে তারা দুজনেই কেন্দ্ৰীয় পরিষদকে কোন সদুত্তর দিতে পারেনি। উপরন্তু পুরো কেন্দ্রীয় পরিষদকে ধৃষ্টতা প্রদর্শনপূর্বক অবজ্ঞা করেছে। জনাব কামাল বায়েজীদ, সম্পাদক অর্থ এবং আরো তিনজনকে নিয়ে সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী মনে করে ফেডারেশানের সার্বিক কর্মকাণ্ড থেকে কেন্দ্রীয় পরিষদকে দূরে রাখার সকল পথই অবলম্বন করেছিলেন। ফেডারেশানের হিসাব দিতে গড়িমসি করে প্রায় ৬ মাস কালক্ষেপন করে একটি ফিকটিসিয়াস অর্থ রিপোর্ট প্রদান করে, যা পর্যালোচনা করে কেন্দ্রীয় পরিষদের নিকট অগ্রহণযোগ্য বলে প্রতীয়মান হয়। তখন জনাব কামাল বায়েজীদ একমাস পরে সঠিক হিসাব উপস্থাপন করবেন বলে কেন্দ্রীয় পরিষদের কাছে অঙ্গিকার করেন। কিন্তু দুঃখজনকভাবে বলতে হয়, নির্ধারিত দিনে তিনি সেই হিসাব উপস্থাপন করেননি। উপরন্তু তিনি বলেন, হিসাব দপ্তরে সংরক্ষিত আছে কেউ দেখার প্রয়োজন অনুভব করলে দেখে নিতে পারেন। কিন্তু দপ্তরে এমন কোন হিসাব সংরক্ষিত ছিল না। ব্যাংক স্ট্যাটম্যান্ট বারবার চাওয়া হলে সেটি উপস্থাপন করার ক্ষেত্রেও গড়িমসি করেন। পরবর্তীতে কেন্দ্রীয় পরিষদের সিদ্ধান্ত নিয়ে ব্যাংক থেকে ব্যাংক স্ট্যাটম্যান্ট সংগ্রহ করার পর তাদের উপস্থাপিত হিসাবের সাথে বড় ধরণের গড়মিল পরিলক্ষিত হয়। ১,২৪,৫১,৩৭৭.০০ (এক কোটি চব্বিশ লক্ষ একান্ন হাজার তিনশত সাতাত্তর) টাকা ব্যয়ের ক্ষেত্রে চেয়ারম্যান কিংবা কেন্দ্রীয় পরিষদের কোন প্রকার অনুমোদন নেয়া হয়নি এবং তা নেওয়ার বিষয়ে বলা হলেও জনাব কামাল বায়েজীদ কোন প্রকার তোয়াক্কাও করেননি। বিষয়টির সুষ্ঠু সমাধানের

জন্য কেন্দ্রীয় পরিষদ প্রায় ৬ মাস চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়। প্রায় এক বছর এই বিষয়টি সুরাহা করতে না পারায় তাদের বিরুদ্ধে কেন্দ্রীয় পরিষদের সম্মানিত সদস্যদের আনীত ২৯টি অভিযোগের ভিত্তিতে বাংলাদেশ গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশানের নিয়ম, শৃঙ্খলা ও গঠনতন্ত্র বিরোধী গুরুতর কার্যকলাপের জন্য তাদেরকে অব্যাহতি

দেওয়া হয়। কেন্দ্রীয় পরিষদের ৫৩জন সদস্যদের মধ্যে পরপর তিনটি সভায় উপস্থিত ৪৩জন সদস্য লিখিতভাবে এবং উপস্থিত থেকে সর্বসম্মতিক্রমে এই সিদ্ধান্ত গৃহিত হয়।


কামাল বায়েজীদের বিরুদ্ধে আনীত কেন্দ্রীয় পরিষদের অভিযোগনামা ও অনিয়মের বিবরণ:

১. জনাব কামাল বায়েজীদ বাংলাদেশ গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশানের মোট ১,২৪, ৫১, ৩৭৭.০০ (এক কোটি চব্বিশ লক্ষ একান্ন হাজার তিনশত সাত্তাতর) টাকা কোন প্রকার অনুমোদনের তোয়াক্কা না করে ব্যাংক থেকে অর্থ উত্তোলন করেন। এই উত্তোলন প্রক্রিয়াটি সম্পূর্ণ অনুমোদনবিহীন এবং সাংগঠনিক প্রক্রিয়ার পরিপন্থি।

বাংলাদেশ গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশানের গঠনতন্ত্রের ধারা ১৯ : অর্থ : (ক) ধারা অনুযায়ী- “যেকোন বাণিজ্যিক ব্যাংকে ফেডারেশানের একাউন্ট পরিচালিত হবে।

তমণ্ডলীর চেয়ারম্যান, সেক্রেটারী জেনারেল ও সম্পাদক (অর্থ) ফেডারেশানের ব্যাংক একাউন্ট পরিচালনা করবে। তাঁদের ৩ জনের যে কোন ২জনের যৌথ স্বাক্ষরে

ব্যাংক থেকে টাকা উত্তোলন করা যাবে। কিন্তু সকল ব্যয় প্রাক্কলনে এই তিনজনের স্বাক্ষর থাকতে হবে।

২. ব্যাংক স্ট্যাটম্যান্ট এর সঙ্গে তার উপস্থাপিত হিসাবের মারাত্মক গড়মিল পরিলক্ষিত হয়। উল্লেখ্য যে, শুরু থেকেই সম্পাদক (অর্থ) ও সেক্রেটারি জেনারেল এর স্বাক্ষরে সকল অর্থ উত্তোলিত হয় এবং কোন রকম অনুমোদন হয়নি।

৩. হিসাব উপস্থাপনের ক্ষেত্রে শুরু থেকেই এক ধরনের লুকোচুরি পরিলক্ষিত হয়। সম্পাদক (অর্থ) কর্তৃক উপস্থাপিত হিসাবে গড়মিল আছে বলে জনাব কামাল বায়েজীদ স্বীকার করেন এবং এক মাসের মধ্যেই তিনি নিজেই দায়িত্ব নিয়ে হিসাব উপস্থাপন করবেন বলে কেন্দ্রীয় পরিষদের সভায় ঘোষণা দেন। পরবর্তীতে বলা হয় ব্যয়ের বিল ভাউচার বাংলাদেশ গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশানের অফিসে রক্ষিত আছে কেউ দেখার প্রয়োজন অনুভব করলে সেখানে গিয়ে দেখে নিতে পারেন। কিন্তু দপ্তরে কোন হিসাব রক্ষিত ছিলনা। এটি এক ধরনের শিষ্টাচার বহির্ভূত আচরণ।

৪. বাংলাদেশ গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশানের গঠনতন্ত্রের ধারা ১৮ : অর্থ (গ) - এ উল্লেখ আছে যে, – “যে কোন ব্যয়ের জন্য নির্বাহী পরিষদের পূর্ব অনুমোদন প্রয়োজন হবে। তবে বিশেষ প্রয়োজনে সভাপতিমণ্ডলীর চেয়ারম্যান এর সম্মতিক্রমে সেক্রেটারী জেনারেল ৫০,০০০.০০ (পঞ্চাশ হাজার) টাকা পর্যন্ত ব্যয় করতে

পারবেন, কিন্তু নির্বাহী পরিষদের পরবর্তী সভায় তা অনুমোদন করিয়ে নিতে হবে।” কিন্তু ১,২৪,৫১,৩৭৭.০০ (এক কোটি চব্বিশ লক্ষ একান্ন হাজার তিনশত সাত্তাতর) টাকা উত্তোলন করা হলো। তাতে কেন্দ্রীয় পরিষদের কোন অনুমোদন নেওয়ার বিষয়ে তোয়াক্কা করা হলো না। কেন্দ্রীয় পরিষদের সকল সভায় এবিষয়ে তাকে বারবার বলার পরও এই ধারার কোন প্রকার তোয়াক্কা না করে জনাব কামাল বায়েজীদ লক্ষ লক্ষ টাকা ব্যাংক একাউন্ট থেকে উত্তোলন করেন এবং তার ব্যক্তিগত একাউন্টে ৭,০০,০০০.০০ (সাত লক্ষ) টাকা ট্রান্সফার করেন।

৫. বড় অংকের লেনদেনের ক্ষেত্রে চেকে অবশ্যই চেয়ারম্যানের স্বাক্ষর গ্রহণ ও অনুমোদন নেয়া অথবা নির্বাহী পরিষদের অনুমোদন নেয়া বাঞ্ছনীয় ছিল কিন্তু জনাব কামাল বায়েজীদ একক সিদ্ধান্তে লক্ষ লক্ষ টাকা উত্তোলন করেন।

৬. জনাব কামাল বায়েজীদ ও অর্থ সম্পাদক কর্তৃক উপস্থাপিত অর্থ বিষয়ক আয়-ব্যয়ের ব্যাংক স্ট্যাটম্যান্ট না দেয়ার মূল কারণ ছিল ভিন্ন। যা পরবর্তীতে কেন্দ্রীয় পরিষদ উদঘাটন করে। ব্যাংক হতে ব্যাংক স্ট্যাটম্যান্ট সংগ্রহ করলে দেখা যায় যে, ২৯ আগস্ট ২০১৯, Reference No. TT192412WBOC & Cheque No. 6806082 এর মাধ্যমে ৭,০০,০০০.০০ (সাত লক্ষ) টাকা জনাব কামাল বায়েজীদ এর ব্যক্তিগত একাউন্টে ট্রান্সফার করা হয়েছে। তাছাড়াও আরো বেশ কিছু আর্থিক লেনদেন ব্যাংক একাউন্টে সম্পন্ন হয় যেখানে চেক নম্বর উল্লেখ নেই এবং এগুলোও ব্যাংক একাউন্ট থেকে উত্তেলিত / ট্রান্সফার হয়।

৭. সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মাননীয় প্রতিমন্ত্রী মহোদয় মুজিব শতবর্ষ ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী নাট্য উৎসবে দশটি নাট্যদলকে ৫০,০০০.০০ (পঞ্চাশ হাজার) টাকা করে প্রণোদনা দেন। জনাব কামাল বায়েজীদ একক সিদ্ধান্তে নির্বাহী কমিটিকে অবজ্ঞা করে, এই টাকা তিনি প্রদান করবেন না বলে সাফ জানিয়ে দেন। এতে দশটি নাট্যদলের কাছে ফেডারেশানের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়।

৮. জনাব কামাল বায়েজীদ বাংলাদেশ গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশান এর গঠনতন্ত্র উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে বিভিন্ন ধারার শব্দ, লাইন ও অনুচ্ছেদ পরিবর্তন, পরিবর্ধন ও সংযোজন করেন, নিজের মত করে সাজিয়ে একক সীল ও স্বাক্ষর প্রদান করেন। বিষয়টি কেন্দ্রীয় পরিষদ এবং চেয়ারম্যান মহোদয়কে না জানিয়ে সকল সদস্য সংগঠন ও কেন্দ্রীয় পরিষদের সদস্যদের নিকট প্রেরণ করেন। শুধু তাই নয় বিজিটিএফ ম্যাজেঞ্জার গ্রুপেও সংযুক্ত করেছেন। যা প্রতিটি সংগঠন ও কেন্দ্রীয় পরিষদের সদস্যদের মধ্যে চরম বিভ্রান্তির সৃষ্টি করে।

৯. ১২ মার্চ ২০২১ খ্রিষ্টাব্দে অনুষ্ঠিত কেন্দ্রীয় পরিষদ এর সভায় সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত সিদ্ধান্তের কার্যবিবরণী জনাব কামাল বায়েজীদ বিজিটিএফ মেসেঞ্জার গ্রুপে দিয়ে বিতর্কিত করার লক্ষ্যে সবার মতামত আহ্বান করেন। কেন্দ্রীয় কমিটির গৃহীত সিদ্ধান্তের উপর মতামত চাওয়া বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির নামান্তর। প্রসঙ্গত উল্লেখ, এই বিষয়ে কোন নাট্যদল বা কেন্দ্রীয় পরিষদ সদস্য মতামত প্রদান করেননি।

১০. বিভিন্ন সময়ে জনাব কামাল বায়েজীদ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন ধরণের পোস্ট প্রদান করে পরিষদকে কটাক্ষ, অসম্মান, বিতর্কিত ও হেয়প্রতিপন্ন করতেন। শুধু তাই নয় সহযাত্রী জাতীয় সংগঠনের নেতৃবৃন্দ ও অগ্রজ নাট্যব্যক্তিত্বদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন কটূক্তি করে ফেডারেশানের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করেছে।

১১. সামজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কামাল বায়েজীদ একটি রুগ্ন হাতির ছবি দিয়ে পোস্ট করে কেন্দ্রীয় পরিষদ নেত্রীবৃন্দকে রুগ্ন হাতির সঙ্গে তুলনা করেছেন, এমনকি নেতৃবৃন্দকে “মানসিক বিকলাঙ্গ” বলেছেন যা চূড়ান্তভাবে অসম্মান ও অপমানজনক।

১২. জনাব কামাল বায়েজীদ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ও বিভিন্ন সভায় বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমিকে “অধিদপ্তর” করার দাবি জানিয়েছেন, যা বাংলাদেশ গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশানের দাবি নয়। ফেডারেশানের পদবী ব্যবহার করে এমন নানা ধরণের বিভ্রান্তিকর উক্তি সকলকে অস্বস্তিতে ফেলে দেয়।

১৩. জাতীয় নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত কেপিআই কমিটি কফি হাউজে নানাধরণের লোকজনের আনাগোনা ও বৈঠক বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির জন্য মারাত্মক হুমকিস্বরূপ বলে মন্তব্য করেন। তাছাড়াও করোনাকালীন সরকারী নির্দেশে কফি হাউজ বন্ধ রাখা হয় কিন্তু জনাব কামাল বায়েজীদ সামাজিক যোগাযোগ

মাধ্যমে অবিলম্বে কফি হাউজ খুলে দেয়ার দাবি করেন ।

১৪. জনাব কামাল বায়েজীদ জাতীয় অনুদান কমিটিতে প্রতিনিধি থাকাকালীন পরিকল্পিতভাবে তার অপছন্দের সংগঠনের অনুদান বাতিল করেন। উল্লেখ্য যে, এসকল সংগঠন নিয়মিতভাবে অনুদানপ্রাপ্ত ছিল, ফলে দলগুলো আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হয়। এবং যা দলগুলোর জন্য ছিল অবমাননাকর।

১৫. করোনাকালীন সরকারী সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সারাদেশের মিলনায়তন বন্ধ রাখার নির্দেশ ছিল কিন্তু জনাব কামাল বায়েজীদ এককভাবে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির হল খুলে দেয়ার দাবি জানান।

১৬. সম্পাদকমণ্ডলীর অনেককেই নিষ্ক্রিয় করে রাখার কাজ তিনি দিনের পর দিন করে গেছেন এবং নিজের পছন্দ মতো ২/৩জন সম্পাদককে নিয়ে কাজ করতেন। ফলে নিজেদের মধ্যে একধরণের বিভাজন সৃষ্টি হয়।

১৭. জনাব কামাল বায়েজীদ গ্রাম থিয়েটারের একটি নাট্য সংগঠনকে পাঁচ-ছয়টি ভূয়া নামে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অনুদান পাইয়ে দেন। যার ফলে সারাদেশের সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলির মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।

১৮. ফেডারেশানে গ্রাম থিয়েটারের সদস্য বাড়াতে সাইনবোর্ড সর্বস্ব সংগঠনকে বাংলাদেশ গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশানের সদস্যপদ দিয়ে নিজের বলয় বৃদ্ধির লক্ষ্যে জনাব কামাল বায়েজীদ মরিয়া হয়ে উঠেন। যে কারণে তিনি প্রায় সকল বিভাগেই বিভাগীয় সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও সাংগঠনিক সম্পাদককে পাশ কাটিয়ে তাদের

মতামত অগ্রাহ্য করে সদস্যপদ দেয়ার জন্য চাপ সৃষ্টি করেন।

১৯. জনাব কামাল বায়েজীদ বাংলাদেশ গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশানের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ নির্বাহী পদে থেকে ফেডারেশানে গ্রাম থিয়েটারের সদস্য বৃদ্ধি করে ফেডারেশানের অভ্যন্তরীণ প্রতিপক্ষ তৈরির করার জন্য মরিয়া হয়ে ওঠেন। তিনি বেশ কয়েকটি সংগঠনকে ভুল তথ্য দিয়ে সদস্যপদ পাইয়ে দেন এবং আরো ২০/৩০টি সংগঠনকে সদস্যপদ দেয়ার জন্য জোর খাটানোর চেষ্টা করেন।

২০. জাতীয় নাট্যোৎসব বাস্তবায়নের জন্য চেয়ারম্যানকে আহ্বায়ক, সেক্রেটারি জেনারেলকে সদস্যসচিব এবং কেন্দ্রীয় পরিষদের ১০জন নারী সদস্যসহ ৬৩ জনকে নিয়ে একটি জাতীয় কমিটি গঠন করা হয়। জাতীয় নাট্যোৎসব আয়োজনের প্রস্তুতিকালে সকল সম্পাদক এবং বিভাগীয় নেতৃবৃন্দের কাছ থেকে কর্মপরিকল্পনা ও

বাজেট নিয়েছেন। পরবর্তীতে তাঁদের অবজ্ঞা ও অসম্মান করে এককভাবে দল নির্বাচন, প্রদর্শনীর স্থান নির্বাচন, সম্মানী নির্ধারণ এবং বিতরণে ব্যাপক অনিয়ম করেছেন তিনি।

২১. মুজিব শতবর্ষ ও স্বাধীনতা সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে ঢাকাস্থ নির্বাহী পরিষদের সভায় সারাদেশে উৎসব আয়োজন করার সিদ্ধান্ত গৃহিত হয়। কিন্তু জনাব কামাল বায়েজীদ তা উপেক্ষা করে শুধুমাত্র ঢাকার দশটি দল নিয়ে তড়িঘড়ি করে ঢাকায় উৎসব আয়োজন করেন। পরবর্তীতে বিভাগে উৎসব আয়োজনে তিনি অনিহা পোষণ

করেন। ফলে উৎসব থেকে বঞ্চিত হয় বিভাগের নাটকের দলগুলি।

২২. ঢাকার উৎসবে সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জনাব অনন্ত হিরাকে আহ্বায়ক করে একটি কমিটি করা হয়। কিন্তু কমিটিকে কাজ করার সুযোগ না দিয়ে এককভাবে দল নির্বাচন, সাজসজ্জাসহ সকল প্রকার কর্মকাণ্ড তিনি একাই করেন।

২৩. উক্ত উৎসবে প্রতিদিন অংশগ্রহণকারী নাট্যদল, অতিথি এবং দর্শকদের মধ্য থেকে তিনজনকে বঙ্গবন্ধুর ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ ও ‘কারাগারের রোজনামচা' বই দুইটি দেয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে কমিটি। কিন্তু জনাব কামাল বায়েজীদ একাই সিদ্ধান্তটি বাতিল করে দেন।

২৪. জনাব কামাল বায়েজীদ সারাদেশের বিশিষ্ট ও স্বচ্ছল নাট্যজনদের অস্বচ্ছল শিল্পীদের তালিকায় অন্তর্ভূক্ত করে তাদের কাছে অর্থ প্রেরণ করেন। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, তারা কেউ অস্বচ্ছল শিল্পী নন। এ বিষয়ে বিভাগীয় নাট্যজনরা তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

২৫. কেন্দ্রীয় পরিষদ করোনা অতিমারীর সময় সারাদেশের নাটকের ৮০জন নেপথ্যকর্মীকে মানবিক সাহায্য প্রদানের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে এবং প্রতিজনকে ৫,০০০.০০ (পাঁচ হাজার) টাকা করে প্রদান করার সিদ্ধান্ত নেয়া হলেও জনাব কামাল বায়েজীদ একনায়কতান্ত্রিকভাবে সে সিদ্ধান্ত বাতিল করে দেন।

২৬. সাংগঠনিক কোন বিষয়ে কেউ দ্বিমত পোষণ করলে তাকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করার হুমকি প্রদান করতেন জনাব কামাল বায়েজীদ। চট্টগ্রাম বিভাগের সাংগঠনিক সম্পাদক জনাব সাইফুল আলম বাবুকে ঢাকায় এলে গুলি করা হবে বলে তিনি হুমকি দেন। তিনি প্রায়ই বলেন ‘আমি ঢাকাইয়া পোলা’।

২৭. বিগত ২৭ মার্চ ২০২১ খ্রিষ্টাব্দ বিশ্ব নাট্য দিবসের গৃহিত সকল কর্মসূচি কেন্দ্রীয় পরিষদের সিদ্ধান্ত ছাড়া একক সিদ্ধান্তে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট দিয়ে জনাব কামাল বায়েজীদ স্থগিত ঘোষণা করেন। আবার তিনিই সিরাজগঞ্জের ফেডারেশানভূক্ত একটি দলকে দিয়ে বিশ্বনাট্য দিবসের অনুষ্ঠান আয়োজন করে সেখানে

অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বক্তৃতা প্রদান করেন।

২৮. বাংলাদেশ গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশানের মূল একাউন্টের এবং শিল্পী কল্যাণ ফান্ডের চেকবইসহ সকল কাগজপত্র এখনও তার কাছে আছে এবং তিনি মূল একাউন্ট ফ্রিজ করার জন্যও ব্যাংকে পত্র প্রদান করেন। শিল্পী কল্যাণ ফান্ডের কোন হিসাব তিনি দেননি। সেই ব্যাংক একাউন্টে ছয় লক্ষ টাকার মতো থাকার কথা। কিন্তু তিনি বলেছেন সেই একাউন্টে নাকি কোনো অর্থ অবশিষ্ট নেই।

২৯. বাংলাদেশ টেলিভিশনে মঞ্চনাটক প্রচার করার জন্য কেন্দ্রীয় কমিটি উদ্যোগ গ্রহণ করে এবং একটি উপ- কমিটি গঠন করা হয়। কিন্তু কামাল বায়েজীদ কেন্দ্রীয় কমিটির সিদ্ধান্ত অবজ্ঞা করে তার মনোনীত উপ-কমিটি বিটিভিতে প্রেরণ করেন, যেখানে একজন বিশেষ ব্যক্তির নাম সংযুক্ত থাকাতে বাংলাদেশ টেলিভিশন কর্তৃপক্ষ

এই কর্মসূচিটি বাতিল করে দেয়। ফলে মঞ্চনাটক বিটিভিতে প্রচার বন্ধ হয়ে যায়। সারাদেশের শত শত নাট্যদল লক্ষ লক্ষ টাকার ক্ষতির সম্মুখীন হয়। শুধু জনাব কামাল বায়েজীদের একগুয়েমীর কারণে বঞ্চিত হলো তিনশতাধিক নাট্যদল। এছাড়াও অনেক অভিযোগে অভিযুক্ত জনাব কামাল বায়েজীদ।


চিঠিতে আরও লেখা হয়, ফেডারেশানের অফিস থিয়েটার ক্লাবে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ও নথি পাওয়া যাচ্ছে না। যার ফলে সাংগঠনিক কাজ কার্যক্রম ব্যহত হচ্ছে। জনাব কামাল বায়েজীদ বাংলাদেশের একটি ঐতিহ্যবাহী সংগঠন গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশানকে অনিয়ম, স্বেচ্ছাচারিতা, গঠনতন্ত্রবিরোধী কর্মকাণ্ড ও একনায়কতান্ত্রিকতার মাধ্যমে বিনষ্টের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে গিয়েছিলেন। কেন্দ্রীয় পরিষদ বাংলাদেশ গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশান-এর চালিকা শক্তি। কেন্দ্রীয় পরিষদ ফেডারেশানের সকল প্রকার পরিকল্পনা গ্রহণ, প্রণয়ন ও বাস্তবায়নে মুখ্য ভূমিকা পালন করে। সেই কেন্দ্রীয় পরিষদকে জনাব কামাল বায়েজীদ তোয়াক্কাই করেনি। বৃদ্ধাঙ্গুলী প্রদর্শন করেছে বারবার। বাংলাদেশ গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশানকে অকার্যকর ও একটি বিশেষ সংগঠনের নিয়ন্ত্রণাধীন করার অপচেষ্টাকে

প্রতিহত করার উদ্যোগ গ্রহণ করা ছাড়া কেন্দ্রীয় পরিষদের কাছে আর কোন উপায় ছিল না। সম্মানিত নাট্যজন, উল্লিখিত বিষয়সহ অন্যান্য বিষয় নিয়ে অনুষ্ঠিত হয়েছে বিভাগীয় সম্মেলন। জনাব কামাল বায়েজীদ এর অব্যাহতি দেয়া প্রসঙ্গে দুই-একটি বিভাগে গ্রাম থিয়েটারভুক্ত সদস্যদলের কয়েকজন প্রতিনিধি উচ্চবাচ্য করলেও অধিকাংশ প্রতিনিধির সমর্থন থাকায় এবং তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ ও তথ্য-প্রমাণাদি দেখে তারাও থেমে যায়। কেন্দ্রীয় পরিষদের গৃহিত সিদ্ধান্ত সারাদেশের ৯০ভাগ সদস্য সংগঠনের সমর্থন পায়।


শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: protidinerbangladesh.pb@gmail.com

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: pbad2022@gmail.com

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: pbonlinead@gmail.com

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: pbcirculation@gmail.com

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা