প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ৩০ মার্চ ২০২৩ ১৫:৫৬ পিএম
আপডেট : ৩০ মার্চ ২০২৩ ১৮:০৪ পিএম
এখন রুচির দুর্ভিক্ষ চলছে। এর মধ্য দিয়েই হিরো আলমের উত্থান হয়েছে—সম্প্রতি একটি অনুষ্ঠানে এমন মন্তব্য করেছিলেন নাট্যকার, অভিনেতা ও সংগঠক মামুনুর রশীদ। যা নিয়ে নেট দুনিয়ায় রীতিমতো তোলপাড়। এমন মন্তব্যের জন্য কিছু মানুষ তার কড়া সমালোচনা করছেন। নাট্যাঙ্গনের অনেকে এমন পরিস্থিতিতে মামুনুর রশিদের পাশে দাঁড়াচ্ছেন।
এর মধ্যে বরেণ্য অভিনেতা ও নির্মাতা আফজাল হোসেন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লেখেন, ‘শিল্পাচার্য যখন রুচির দূর্ভিক্ষের কথা বলেছিলেন তখন তেলে বেগুনে জ্বলে ওঠা মানুষ কম ছিল, নাকি ছিলই না। অমন কথায় কারো গায়ে ফোস্কা পড়েছিল- এমনটা শোনা যায়নি। তখন কি তাহলে সকলের গায়ের চামড়া মোটা ছিল? নাকি তখন কথাটা অনুধাবন করবার সাধ্য ছিল মানুষের- তাই উচ্চবাচ্য না করে স্বীকার করে নিয়েছিল, মন্তব্যটা ভুল নয়।
এখন রুচির দূর্ভিক্ষের কথা বললে মানুষ রে রে করে তেড়ে আসবে। দাঁত ভাঙ্গা জবাব দিতে একাট্টা হয়ে হামলে পড়বে। এমন উদাহরণই উপযুক্ত প্রমান যে সত্যি সত্যিই আমাদের এখন রুচির দূর্ভিক্ষ চলছে।
সময়টা বড় অদ্ভূত, একদল ছড়ি ঘুরিয়ে অহরহ চোখ রাঙাচ্ছে। যখন তখন নিজেদের রুচি, জ্ঞান অনুযায়ী যেমন খুশী তেমন বলে, করে যাচ্ছে- তাতে রা নেই কারো। কিন্তু যে মানুষের প্রগতিশীল ভূমিকা রয়েছে, সামাজিক সাংস্কৃতিক উন্নয়নের জন্য যাঁর অবদান অশেষ- তাঁর এক মতামতে ফেনিয়ে উঠছে গেলো গেলো রব।
যুক্তির মন থাকলে স্বীকার করতেই হয়, নানা রকমের অবনতিকেই এখন ইনিয়ে বিনিয়ে উন্নতি বলে দাবী করার অভ্যাস তৈরি হয়ে গেছে। সে অভ্যাস আমাদের এতটাই সাহসী বানিয়ে দিয়েছে যে নির্দ্বিধায় বুক ফুলিয়ে যার যেমন ইচ্ছা- তেমনটা করা, বলা যায়। সেই করা বা বলায় অনুসারী তৈরি হয়, বিপুল করতালি পেয়ে স্বেচ্ছাচারের উদ্যম বাড়ে। কোনদিক থেকেই এসব কান্ড বাধাগ্রস্থ হয়না, বিপরীতে সামাজিক স্বীকৃতি বলে গন্য করা হয়।
এই ভয়ঙ্কর নীতিহীন কর্মকান্ডে তারাই ঘি ঢালে- যারা বিবেক বোধ বন্ধক রেখে নিজ উন্নতির সোপান ভেঙে চলেছে। দুই পক্ষ পরষ্পরের হয়ে ওঠে এক লক্ষ্যে- বিশেষ হতে হবে। সকল স্বাভাবিকতা তছনছ করে দিয়ে শুধু নিজ নিজ স্বার্থরক্ষা, অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার বেশরম চেষ্টা- এটাই বড় মাপের রুচিহীনতা, রুচির দূর্ভিক্ষ।
জ্ঞানহীনের রুচিহীনতার চেয়ে জ্ঞান থাকা মানুষের রুচিহীনতা অনেক বেশি ভয়ানক। এই দুই পক্ষ মেড ফর ইচ্ছা আদার কাপল হলে সমাজের দায়িত্বশীল মানুষদের উপর হামলা, মর্যাদা তছনছের চেষ্টা চলতেই থাকবে- সগৌরবে।’