মহিউদ্দিন মাহি
প্রকাশ : ২৪ মার্চ ২০২৩ ১৩:৫৫ পিএম
তারকাদের ধর্ম পালন নিয়ে ভক্তদের অনেক কৌতূহল। মুসলিম তারকারাও রোজা রাখেন। রোজা নিয়ে শুটিং করেন, ব্যস্ত থাকেন নানা রকম ধর্মীয় প্রার্থনায়। আর সবার মতো তাদেরও আছে রোজা রাখার অনেক মজার স্মৃতি। তাদের ভিড়ে ছোট পর্দার জনপ্রিয় অভিনেত্রী কেয়া পায়েল জানালেন রোজা নিয়ে তার দর্শন ও উপলব্ধির কথা। নস্টালজিক হয়ে মজার ছলে বললেন শৈশবে রোজা রাখার অনেক গল্প। লিখেছেন মহিউদ্দিন মাহি
প্রথম কবে রোজা রেখেছিলেন মনে পড়ে?
অনেক ছোট থাকতে। মে বি নার্সারি ওয়ানে। রোজা রাখলে ফিল করতাম বিশাল কিছু করেছি। বাড়ির লোকেরা চাইতেন না। লুকিয়ে লুকিয়ে রোজা রাখতাম। খুব উত্তেজনা কাজ করত। ঈদ আসবে। এসব ভেবে বলা চলে যখন থেকে বুঝতে শিখেছি তখন থেকেই রোজা রাখতাম। মনে পড়ে শবেবরাতের রোজা রাখার অভ্যাসটাও অনেক ছোটবেলা থেকেই গড়ে উঠেছে।
শৈশবের সেহরি বা ইফতারের দিনগুলো কেমন ছিল?
খুব। অনেক মিস করি সময়গুলো। শৈশবের সেহরি তো খুবই মজার ছিল। বাবা-মা বকা দিতেন। কেন উঠেছি। রোজা রাখলে শরীর দুর্বল হয়ে পড়ে। কারণ তখন আমি খুবই ছোট। তাই বাবা-মা চাইতেন না। কিন্তু আমি তো রোজা রাখবই। সেজন্য সেহরিতে খাবার লুকিয়ে রাখতাম। বাবা-মা ওঠার আগেই খেয়ে নিতাম। ভীষণই মজার দিন ছিল। আর ইফতারিতে ছোটবেলায় একটা বিষয় খুব মজা হতো। এখনও অনেক সময় হয় যখন বন্ধুদের সঙ্গে থাকি। ইফতারির জাস্ট দুই-এক মিনিট আগে সবাই এমন একটা কিছু করবে যেন আমি ইফতার করে ফেলি। তো আমি খাওয়ার পর শুনি যে আজান হচ্ছে। এই দুষ্টুমিগুলো মনে পড়ে।
শৈশবের সঙ্গে এখনকার রোজা রাখার মধ্যে কী পার্থক্য পান?
ছোটবেলায় ক্লাস থাকত, ছোট মানুষ। রোজা রাখতে দিত না। কষ্ট হবে। দুর্বল হয়ে পড়ব। তাই তারা বলতেন যে রোজ দুইটা রোজা রাখা যায়, দুই বেলা খেয়ে। মানে আমি যেন রোজা ভেঙে ফেলি। অনেক সময় ক্ষুধায় বড়দের কথা মেনে দুইবার খেয়েই রোজা রাখতাম। এই বিষয়টা এখন মনে পড়লে হাসি আসে। আসলে তখন রোজা রাখার উত্তেজনা ছিল মূলত ঈদকে কেন্দ্র করে। তা ছাড়া বড়দের সঙ্গে সেহরি ও ইফতার করব সেই সুযোগের আশাতেও রোজা রাখার জন্য পাগল ছিলাম। বাট এখন রোজা মানে হচ্ছে একজন মুসলমান হিসেবে দায়িত্ব ও কর্তব্য।
রোজার দিনগুলোতে আপনার খাবার তালিকাটা কেমন?
সেহরিতে সব সময় আমি হেলদি ফুড রাখার চেষ্টা করি। কারণ সারা দিন রোজা রাখি। এখন তো আবহাওয়া খারাপ। পানির পিপাসা থাকে। সারা দিন কাজ থাকে। অনেক ক্যালরি বার্ন হয় তাই হেলদি ফুড খাই।
আর ইফতারে সব খাই। ভাজাপোড়া যা থাকে। যদিও চাই না খেতে। তবু পারা যায় না। ইফতারের খাবারগুলোর একটা ঐতিহ্য আছে আমাদের দেশে। ইচ্ছে করে সবই একটু একটু করে খাই।
তবে স্পেশালি বলব ইফতারিতে আমার প্রিয় মেনু হালিম। আর সেহরিতে যা-ই খাই, যেকোনো একটা জুস রাখার চেষ্টা করি।
রমজানে আপনার উপলব্ধি কী?
আমার কাছে রোজা মানেই শান্তি। এটা নিজের ভেতরের একটা ফিলিংস। যারা রোজা রাখেন, নামাজ পড়েন তারা অন্য রকম শান্তি টের পান। আমার মনে হয় যারা সঠিকভাবে রোজা রাখে তারা ক্রাইম করতে পারে না। নিজের মধ্যেই নিজেকে দমন করে রাখার তাগিদ তৈরি হয়। যারা তারাবি পড়তে পারে, পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়তে পারে এবং পরিবারকে সময় দিতে পারে, আমার মনে হয় তাদের কাছে এই একটা মাস বেস্ট সময়। যারা রোজা রাখেন এটা তারা জানেন যে রমজানের মতো শান্তির মাস আর হয় না।
এবার ঈদে নাটক নিয়ে ব্যস্ততা কেমন?
ঈদে অনেকগুলো নাটকেই দর্শক আমাকে দেখতে পাবেন। সবে তো রমজান শুরু হলো। এখনই নির্দিষ্ট করে কিছু বলা যাচ্ছে না। তবে বেছে বেছে কিছু ভালো গল্প ও চরিত্রে কাজের চেষ্টা থাকবে।