প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০৫ মার্চ ২০২৩ ১২:৪০ পিএম
আপডেট : ০৫ মার্চ ২০২৩ ১২:৫৪ পিএম
মঞ্চ ও টেলিভিশনে তার অভিনয় মুগ্ধ করেছে তিন দশকের দর্শককে। এক দশক ধরে তিনি নির্মাতা হিসেবেও নির্মাণের মুন্সিয়ানার প্রমাণ রেখেছেন। নাটক নির্মাণের পাশাপাশি চলচ্চিত্র নির্মাণেও তিনি পেয়েছেন সাফল্য। সর্বশেষ ‘ফাগুন হাওয়ায়’ সিনেমা দিয়ে তিনি রাঙিয়ে দিয়েছেন দর্শকের মন। বলছি সবার প্রিয়মুখ তৌকীর আহমেদের কথা।
আজ এই অভিনেতা-পরিচালকের ৫৮তম জন্মদিন। রাত ১২টার পর থেকেই পরিবার, প্রিয়জন আর বন্ধুদের শুভেচ্ছায় সিক্ত হচ্ছেন তিনি।
তৌকীর আহমেদের জন্ম ১৯৬৬ সালের ৫ মার্চ। তিনি ঝিনাইদহ ক্যাডেট কলেজ থেকে এসএসসি এবং এইচএসসি সম্পন্ন করেন। তারপর তিনি স্থাপত্যে স্নাতক অর্জন করেন বাংলাদেশ প্রকৌশল এবং প্রযুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) থেকে।
তৌকীর আহমেদ ১৯৯৯ সালে ভালোবেসে বিয়ে করেন নন্দিত মডেল, অভিনেত্রী ও চিত্রশিল্পী বিপাশা হায়াতকে। সেই সুখের দাম্পত্য জীবন আলোকিত করে রেখেছে তাদের এক কন্যা আরিশা আহমেদ ও পুত্র আরীব আহমেদ। তার শ্বশুর কিংবদন্তি অভিনেতা আবুল হায়াত। শ্যালিকা অভিনেত্রী নাতাশা হায়াত। নাতাশাকে আবার বিয়ে করেছেন আরেক জনপ্রিয় অভিনেতা শাহেদ শরীফ খান।
স্থাপত্য নিয়ে পড়াশোনা করলেও অভিনয় ও নির্মাণের স্বপ্ন ছিল তৌকীরের হৃদয়ের গহিনে। তাই নিজেকে তিনি ছাত্রাবস্থায়ই তৈরি করেছিলেন মঞ্চে। ঝিনাইদহ ক্যাডেট কলেজে পড়াকালীন তিনি মঞ্চ নাটকে অভিনয় শুরু করেন। এরপর ১৯৯৫ সালে লন্ডনের রয়্যাল কোর্ট থিয়েটার থেকে মঞ্চ নাটক পরিচালনার প্রশিক্ষণ নেন এবং ২০০২ সালে নিউইয়র্ক ফিল্ম একাডেমি থেকে চলচ্চিত্রে ডিপ্লোমা সম্পন্ন করেন।
তৌকীর আহমেদ আশির দশকের মাঝামাঝিতে বিটিভিতে প্রচারিত নাটকগুলোর রোমান্টিক চরিত্রের শীর্ষ অভিনেতা হিসেবে প্রতিষ্ঠা লাভ করেন। ১৯৯৬ সালে তানভীর মোকাম্মেল পরিচালিত বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধভিত্তিক ‘নদীর নাম মধুমতী’ চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন। একই বছর তিনি তার শ্বশুর আবুল হায়াত পরিচালিত প্রথম নাটক ‘হারজিত’-এ অভিনয় করেন। এতে তার বিপরীতে অভিনয় করেন তার স্ত্রী বিপাশা হায়াত।
পরে তানভীর মোকাম্মেল পরিচালিত দেশ বিভাগের প্রেক্ষাপটে নির্মিত ‘চিত্রা নদীর পারে’ (১৯৯৯) এবং সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ রচিত বিখ্যাত উপন্যাস লাল সালু অবলম্বনে নির্মিত ‘লাল সালু’ (২০০১) চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন। এ ছাড়াও তিনি নিজের পরিচালিত ‘জয়যাত্রা’ ছবিতে ট্রাকড্রাইভারের চরিত্রে অভিনয় করেন।
২০০০ সালের পর অভিনয়ের পাশাপাশি তিনি নাট্য ও চলচ্চিত্র পরিচালক হিসেবেও আত্মপ্রকাশ করেন। চলচ্চিত্রে তার অভিষেক ঘটে ২০০৪ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধভিত্তিক চলচ্চিত্র ‘জয়যাত্রা’ পরিচালনার মাধ্যমে। চলচ্চিত্রটি আমজাদ হোসেন রচিত ‘একই’ নামের উপন্যাস অবলম্বনে নির্মিত। এই চলচ্চিত্র পরিচালনার মাধ্যমে তিনি ২০০৮ সালে প্রদত্ত জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে শ্রেষ্ঠ প্রযোজক, শ্রেষ্ঠ পরিচালক ও শ্রেষ্ঠ চিত্রনাট্যকার বিভাগে পুরস্কার অর্জন করেন।
আরও পড়ুন : মুক্তিযোদ্ধা মুয়াজ্জিনের চরিত্রটি চ্যালেঞ্জিং ছিল
সম্প্রতি তিনি মঞ্চে নতুন নাটক নিয়ে ব্যস্ত রয়েছেন। এবারের প্রকল্প ‘তীর্থযাত্রী’। হুমায়ূন কবির রচিত ‘তীর্থযাত্রী তিনজন তার্কিক’ বই অবলম্বনে নাটকটির উদ্বোধনী প্রদর্শনী ১৮ মার্চ অনুষ্ঠিত হবে নিউইয়র্কের কুইন্স থিয়েটারের মূল মঞ্চে। তীর্থযাত্রী নাটকটি নির্মাণ করছে নক্ষত্র। নক্ষত্র একটি স্বাধীন শিল্পচর্চা ক্ষেত্র। নক্ষত্রের আমন্ত্রণে নিউইয়র্কের বিভিন্ন দলের নাট্যকর্মী অংশগ্রহণ করছেন এ নাটকে। নাটকের সংগীত আয়োজন করছেন পিন্টু ঘোষ। তৌকীর জানান, তীর্থযাত্রী পরিবেশনার গুরুদায়িত্ব পালন করছে বাংলা সংস্কৃতি কেন্দ্র।