মৌসুম আহমেদ
প্রকাশ : ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ১৩:১৩ পিএম
জান্নাতুল সুমাইয়া হিমি। এ প্রজন্মের জনপ্রিয় অভিনেত্রী। গেল বছর বহু হিট নাটক উপহার দেওয়ায় তার চাহিদা এখন তুঙ্গে। নতুন বছরের শুরু থেকেই বেশ ব্যস্ত সময় পার করছেন। পাশাপাশি ওটিটিতেও কাজ করেছেন। নিজের টাকায় কিনেছেন গাড়ি। সব মিলিয়ে সময়টা তার বেশ ভালো যাচ্ছে। সম্প্রতি উত্তরার একটি শুটিং সেটে দেখা গেল নতুন নাটকের নতুন চরিত্রে অভিনয় করছেন। শুটিংয়ের ফাঁকে প্রতিদিনের বাংলাদেশের সঙ্গে মেতেছিলেন আড্ডায়। তাকে নিয়ে লিখেছেন মৌসুম আহমেদ
প্রচুর কাজ করছেন। কতটা বৈচিত্র্য নিয়ে নিজেকে উপস্থাপন করছেন বলে মনে করেন?
নানান সংকটের ভেতর দিয়ে বেঁচে আছি আমরা। জীবনের এসব জটিল অনুভূতির মুখে সবাই একটু ভালো থাকতে চেষ্টা করে। তাই আমরাও চেষ্টা করি দর্শকদের বিনোদন দিতে। আজকাল দর্শক হাসির নাটক দেখতেই পছন্দ করেন। তাই কমেডি চরিত্রে বেশি কাজ করা হচ্ছে। তবে সম্প্রতি কিছুটা জীবনমুখী কাজের ট্রেন্ড চলছে বলা যায়। জীবনের নানান বোধ নিয়ে কমেডি বা হাস্যরসাত্মক গল্পের নাটক তৈরি হচ্ছে। জোর করে হাসানোর যে প্রচেষ্টা সেখান থেকে নির্মাতা সরে আসছেন। আমিও একজন অভিনেত্রী হিসেবে জীবনমুখী চরিত্রগুলোয় কাজ করতে বেশি আনন্দ পাচ্ছি। আমার মনে হয় নিজেকে আরও নতুনভাবে আবিষ্কার করা উচিত। দর্শকের সামনে আরও বৈচিত্র্যময় চরিত্রে আসতে চাই।
সম্প্রতি নিলয় আলমগীরের সঙ্গেই আপনাকে জুটি হিসেবে দেখা যায়। বিশেষ কোনো কারণ?
হয়তো দর্শক আমাদের স্ক্রিন ক্যামিস্ট্রি পছন্দ করেন। এজন্য নির্মাতারা আমাদের নিয়ে কাজ করতে চান। এর বাইরে বিশেষ কোনো কারণ নেই। গল্প ও চিত্রনাট্যের চাহিদাতেই আমাদের একসঙ্গে নেওয়া হয়। তবে নিলয় ছাড়াও কমবেশি সবার সঙ্গে কাজ করা হচ্ছে। নিলয়ও অন্য অভিনেত্রীদের সঙ্গে কাজ করছেন। তা ছাড়া জুটি হওয়াটার মধ্যে একটা বোঝাপড়ার ব্যাপার থাকে। কাজ করার একটা আনন্দ থাকে। সহশিল্পী হিসেবে নিলয় এবং আমি দুজন দুজনকে ভালো বুঝি। ক্যারিয়ারের প্রথম থেকেই নিলয়ের সঙ্গে জুটি বেঁধে কাজ করেছি। অনেক প্রশংসিত নাটক আছে আমাদের। দর্শক চাইলে কাজ হতেই থাকবে।
নাটকের প্রস্তাব পেলে কোন বিষয়টার ওপর প্রথমে গুরুত্ব দেন?
অবশ্যই নাটকটির গল্প ও চিত্রনাট্যকে সবার আগে প্রাধান্য দিই আমি। যদি নাটকের গল্পটি আমাকে স্পর্শ করে তাহলে নিজের চরিত্র নিয়ে খুব বেশি চিন্তা করি না। চেষ্টা করি ভালো কাজের অংশ হওয়ার। যেমন সম্প্রতি একটি নাটকে বস্তির সাধারণ মেয়ের চরিত্রে অভিনয় করেছি। যেখানে দেখানো হয়েছে আমি কম টাকায় বস্তিবাসীর জামা সেলাই করে দিই। এ নাটকের গল্পটা অসাধারণ। প্রতিটি চরিত্রই এখানে মুখ্য বা গুরুত্বপূর্ণ। নায়িকা হিসেবে আমার চরিত্রে বাড়তি কোনো গ্ল্যামার বা গুরুত্ব নেই। আমি মনে করি এ নাটকটি দর্শকের হৃদয়ে নাড়া দেবে। আমি এতে কোনো চরিত্রে থাকলে আমাকেও ভালোবাসবেন দর্শক।
প্রায় প্রতিদিনই শুটিং করেন। ক্লান্ত লাগে না?
ক্লান্ত তো লাগেই। যেহেতু আমি এ পেশাটি বেছে নিয়েছি স্বাভাবিকভাবেই এ কাজের প্রতি আমার শ্রদ্ধাবোধ অনেক বেশি। যখন একটা ভালো কাজ হয়, তখন এসব ক্লান্তি আর ক্লান্তি মনে হয় না। আরাম করার জন্য সারা জীবন তো পড়েই আছে। কাজ করে যেতে চাই আপাতত।
তারকাদের ক্যারিয়ারে সাফল্য-ব্যর্থতার মতো আরেকটি স্বাভাবিক অংশ নানানরকম স্ক্যান্ডাল বা গুঞ্জন। আপনি এগুলো কীভাবে দেখেন?
আমি ওসব তথাকথিত স্ক্যান্ডাল বা গুঞ্জন নিয়ে মাথা ঘামাই না। সত্যি বলতে আমার কোনো কাজ নিয়ে যদি আলোচনা বা সমালোচনা হয় কেবল তার ওপরই ফোকাস করি। এর বাইরে কে কী বলছে বা ছড়াচ্ছে ভাবি না। এজন্য শান্তিতে থাকি। নিজের মতো করে কাজ করে যেতে পারি।
নিজের টাকায় গাড়ি কিনেছেন শুনলাম। সেই গাড়িতে চড়ার প্রথম অনুভূতি কেমন ছিল?
এটা বলে বোঝাতে পারব না। বারবার আনন্দে আমার চোখ ভিজেছে। পরিশ্রমের টাকা জমিয়ে জমিয়ে গাড়ি কিনেছি। বাবা-মাও খুব খুশি হয়েছেন। তাদের আনন্দ অশ্রু আমাকে অনুপ্রাণিত করেছে আরও বেশি বেশি ভালো কাজ করতে, পরিশ্রম করতে। তা ছাড়া এখন সময় ও ব্যয় কমেছে। আগে ‘পাঠাও’ কিংবা ‘উবারে’ চড়ে শুটিংয়ে আসতে হতো। এখন নিজের গাড়িতে আসি। খুব আনন্দ নিয়ে বাবা আমাকে শুটিং স্পটে দিয়ে যান। আমি নিজেও গাড়ি চালানো শিখছি।
এখন তো প্রায় সবাই ওটিটিতে ঝুঁকছেন। সিনেমায় কাজ করছেন। আপনাকে কবে দেখা যাবে?
ওটিটিতে কাজ করেছি। জি ফাইভের জন্য ‘রূপকথা নয়’ নামে একটি সিনেমায় অভিনয় করেছি। মুক্তির অপেক্ষায় আছে। এখানে চঞ্চল চৌধুরী দাদার সঙ্গে জুটি হিসেবে দেখা যাবে আমাকে। খুব ইউনিক একটি কাজ হয়েছে।
শেষ কথা বিয়ে কবে করছেন?
হাহা... আমার কি বিয়ের বয়স হয়েছে? দেখতে লম্বা লাগলেও আমি কিন্তু অতটা বড় নই। বাবা-মায়ের কাছে এখনও ছোটই আছি। বিয়ে নিয়ে কিছু ভাবছি না। আল্লাহর যেদিন হুকুম হবে সেদিনই বিয়ে হবে। এখন কাজ করে যেতে চাই। সঙ্গে মাস্টার্সটাও শেষ করব। দোয়া চাই সবার।