মহিউদ্দিন মাহি
প্রকাশ : ৩১ জানুয়ারি ২০২৩ ১২:৩০ পিএম
আপডেট : ৩১ জানুয়ারি ২০২৩ ১২:৩১ পিএম
ঢাকাই সিনেমার আলোচিত দুই নাম ফেরদৌস ও পূর্ণিমা। বহু সিনেমায় অভিনয় করে দর্শকদের মন কেড়েছেন দুজন। দুজনই পেয়েছেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার। ‘মধু-পূর্ণিমা’খ্যাত এই জুটি একসঙ্গে অনেক অনুষ্ঠানে উপস্থাপনা করেও প্রশংসিত হয়েছেন। পর্দার বাইরেও দুজনের সম্পর্কটা বেশ জমজমাট বন্ধুত্বের।
ফেরদৌস-পূর্ণিমার রসায়নের সেই বন্ডিং দেখেই হয়তো তাদের ‘গাঙচিল’ ছবিতে প্রধান দুই চরিত্রে বাছাই করেছিলেন পরিচালক নঈম ইমতিয়াজ নেয়ামুল। ২০১৮ সালের আগস্টে ঘোষণা আসে ছবিটির। সে বছরের ১৯ সেপ্টেম্বর জমকালো আয়োজনে ‘গাঙচিল’র মহরত অনুষ্ঠিত হয়। এর পরের বছরের ৬ ফেব্রুয়ারি থেকে নোয়াখালীতে শুরু হয় শুটিং। এরপর কয়েক দফায় নোয়াখালী, ঢাকাসহ বিভিন্ন জায়গায় হয়েছে এর শুটিং। কিন্তু দীর্ঘ সাড়ে চার বছর কেটে গেলেও ছবিটি মুক্তির মুখ দেখেনি।
একই পরিচালক ফেরদৌস-পূর্ণিমা জুটিকে নিয়ে ২০১৮ সালের জুলাই মাসে ঘোষণা করেন আরও একটি ছবির। তার নাম ‘জ্যাম’। এই ছবির কাজও শেষ হয়নি এখনও। দীর্ঘ সাড়ে চার বছরেরও বেশি সময় ধরে দুটি ছবিই আটকে আছে। এ দুটি ছবি নিয়ে ফেরদৌস-পূর্ণিমা জুটির ভক্তরা আশায় বুক বেঁধেছিলেন। হয়তো দুই তারকার ক্যারিয়ারে নতুন হাওয়া দিতে পারে ছবিগুলো।
কেন আটকে আছে ছবিগুলো? পরিচালক নঈম ইমতিয়াজ নেয়ামুল বলেন, “‘গাঙচিল’ ছবির শুটিং শেষ। ৫ ফেব্রুয়ারি কলকাতায় যাচ্ছি ছবিটির টেকনিক্যাল কিছু কাজের জন্য। সেগুলো সেরে আমরা ছবিটি মুক্তির প্রস্তুতি নেব। আর ‘জ্যাম’ ছবির শুটিং ৭০ ভাগ শেষ হয়েছে। প্রযোজনা সংক্রান্ত জটিলতায় আপাতত একটু বিরতি চলছে। আশা করছি দ্রুতই সব অনুকূলে আসবে।”
সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এমপির উপন্যাস অবলম্বনে ‘গাঙচিল’ চলচ্চিত্রটি নির্মিত হচ্ছে। ২০১৪ সালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ‘গাঙচিল’ উপন্যাস রচনা করেন। উপজেলার ৮নং চরএলাহী ইউনিয়নের গাঙচিল এলাকার নামে এ উপন্যাসটির নামকরণ করা হয়। যার গল্প তৈরি হয়েছে একটি চরে বসবাসরত মানুষদের ঘিরে। ছবিটির পরিচালক জানান, ‘গাঙচিল’ একটি গল্পনির্ভর উপন্যাস হলেও, সিনেমাটি হবে পুরোপুরি বাণিজ্যিক আমেজের। এই সিনেমায় নায়ক ফেরদৌস সাংবাদিক চরিত্রে ও পূর্ণিমা একজন এনজিওকর্মীর চরিত্রে অভিনয় করছেন। সিনেমায় অতিথি হিসেবে একটি চরিত্রে দেখা যাবে কলকাতার অভিনেত্রী ঋতুপর্ণা সেনগুপ্তকেও। আরও অভিনয় করেছেন তারিক আনাম খান, আনিসুর রহমান মিলন, আহসানুল হক মিনু প্রমুখ। ‘গাঙচিল’ ছবির চিত্রনাট্য লিখেছেন মারুফ রেহমান ও প্রিয় চট্টোপাধ্যায়। ছবিটি প্রযোজনা করছে ইচ্ছেমত ও নায়ক ফেরদৌসের প্রযোজনা সংস্থা নুজহাত ফিল্মস।
সাড়ে চার বছরেও ‘গাঙচিল’ ছবির কাজ শেষ না হওয়া প্রসঙ্গে ছবির নায়ক ও একাংশের প্রযোজক ফেরদৌস বলেন, ‘অনেক কারণেই ছবি শেষ করতে বা মুক্তি দিতে দেরি হয়। ‘গাঙচিল’ মোটামুটি প্রস্তুত। এ বছরই মুক্তি পাবে। পরিচালক কলকাতায় যাচ্ছেন ছবির কাজেই। ফিরলে মুক্তির তারিখ জানানো হবে।’
‘জ্যাম’ ছবি প্রসঙ্গে ‘হঠাৎ বৃষ্টি’র এ নায়ক বলেন, ‘এ ছবিটির শুটিং অনেক বাকি। কখন আবার শুটিং হবে পরিচালক বা প্রযোজক বলতে পারবেন। আমার কাছে কোনো তথ্য নেই। আমার সব জটিলতা দ্রুতই কেটে যাবে।’
এ নায়ক আরও বলেন, “এখন সিনেমার সময়টা ভালো যাচ্ছে। দর্শক হলে আসছেন। হল মালিকরাও আশাবাদী হয়ে ভালো ছবি চাইছেন। আমি মনে করি ‘গাঙচিল’ ও ‘জ্যাম’ ছবি দুটি মুক্তি পেলে সাড়া পেত।”
অন্যদিকে প্রয়াত সাংবাদিক আহমেদ জামান চৌধুরীর গল্প ভাবনায় ‘জ্যাম’ ছবির কাহিনিবিন্যাস করেছেন নায়ক মান্নার স্ত্রী শেলী মান্না। ফেরদৌস-পূর্ণিমাকে নিয়ে নঈম ইমতিয়াজ নেয়ামুল পরিচালিত ছবিটির প্রযোজকও শেলী। মান্নার প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান কৃতাঞ্জলির ব্যানারে এটি তৈরি হচ্ছে। এ ছবিতেও দেখা যাবে কলকাতার অভিনেত্রী ঋতুপর্ণা সেনগুপ্তকে। পাশাপাশি দেশের আরও অনেক প্রিয়মুখ এ ছবির শিল্পী তালিকায় আছেন।
ছবিগুলো নির্মাণে অনেক সময় লেগে গেল। এ বছর মুক্তি পাবে কি ‘গাঙচিল’ ও ‘জ্যাম’? উত্তরে নেয়ামুল বলেন, ‘এ বিষয়ে এখনই কিছু বলতে চাই না। আগে আমাদের কাজ শেষ হোক।’