প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১৯ জুন ২০২৫ ১৩:১২ পিএম
একসঙ্গে সব সিনেমার আয়ে নতুন দিনের মুখ দেখছে ঢালিউড।
ঈদের ছবির মধ্যে সবচেয়ে আলোচনায় ‘তাণ্ডব’। প্রেক্ষাগৃহের সংখ্যায় ও শোতে এখনও এগিয়ে সিনেমাটি। আয়েও রেকর্ড গড়েছে। অন্য সিনেমাগুলো হাতে গোনা কয়েকটি শো নিয়ে এগিয়ে চলেছে। সব মিলিয়ে একসঙ্গে সব সিনেমার আয়েও বলা যায় নতুন দিনের মুখ দেখছে ঢালিউড।
ঈদে মাল্টিপ্লেক্সে ২৮টি শো দিয়ে যাত্রা শুরু করে তাণ্ডব। এ ছাড়া শতাধিক সিঙ্গেল স্ক্রিনে মুক্তি পায় ‘তাণ্ডব’। বাংলা মুভি রিভিউর তথ্যানুসারে মুক্তির ১১তম দিনে (মঙ্গলবার) ‘তাণ্ডব’ প্রায় ১৬% এর মতো ড্রপ করেছে। ঢাকায় ও ঢাকার বাইরের মাল্টিপ্লেক্সগুলোতে সেল কমেছে।
গত মঙ্গলবার স্টার সিনেপ্লেক্স, লায়ন সিনেমাস, গ্র্যান্ড সিলেট মুভি থিয়েটার, মম ইন, গ্র্যান্ড রিভারভিউ সিনেপ্লেক্স, মণিহার সিনেপ্লেক্স, মধুবন সিনেপ্লেক্স, স্বপ্নীল সিনেপ্লেক্স মিলিয়ে মোট শো চলেছে ৮৩টি। এর মধ্যে স্টার সিনেপ্লেক্সের ৫১টি শোর ১৩টি হাউজফুল ও ৮টি অলমোস্ট ফুল ছিল। এ ছাড়া লায়ন সিনেমাসে শো চলেছে ৯টি, গ্র্যান্ড সিলেটে ৪টি, মম ইনে ৩টি, মণিহার সিনেপ্লেক্সে ৫টি, বগুড়ার মধুবন সিনেপ্লেক্সে ৪টি, কুষ্টিয়ার স্বপ্নীল সিনেপ্লেক্সে ৪টি ও রাজশাহীর গ্র্যান্ড রিভারভিউ সিনেপ্লেক্সে শো চলেছে ৩টি। স্টার সিনেপ্লেক্স ব্যতীত বাকি কোথাও ‘তাণ্ডব’-এর কোনো শো হাউজফুল যায়নি। এগারো দিন শেষে ‘তাণ্ডব’ সিনেমার মোট মাল্টিপ্লেক্স গ্রস ৭ কোটি ৩৬ লাখ টাকা।
শুরুতে মাল্টিপ্লেক্সে ৯টি প্রদর্শনী পেয়েছিল ‘উৎসব’। পরিচালক তানিম নূর সিনেমাটি মুক্তির আগের দিন জানিয়েছিলেন, দর্শক পছন্দ করলে তাদের সিনেমার হল বাড়বে। সেটাই হয়েছে। আয়েও এগিয়ে রয়েছে ‘উৎসব’। মুক্তির ১১তম দিনে সামান্য ড্রপ করলেও এখনও চমৎকার হোল্ড দেখাচ্ছে ‘উৎসব’। গতকাল শুধু স্টার সিনেপ্লেক্সে ৫টি শো হাউজফুল গিয়েছে, ৪টি ছিল প্রায় ফুল। গত মঙ্গলবার স্টার সিনেপ্লেক্স (১৫টি) এবং লায়ন সিনেমাস (২টি) মিলিয়ে সিনেমাটির মোট শো চলেছে ১৭টি। এগারো দিন শেষে ‘উৎসব’ সিনেমার মোট মাল্টিপ্লেক্স গ্রস ১ কোটি ১৫ লাখ টাকা।
ঈদে হল সংখ্যায় ২ নম্বরে ছিল ‘ইনসাফ’। সিনেমাটির ব্যবসায়িক সফলতায় খুশি প্রযোজক খোরশেদ আলম খসরু। তবে তাণ্ডব সিনেমার কারণে তারা কিছুটা পিছিয়ে আছেন বলে জানালেন। খসরু বলেন, ‘আমাদের সিনেমা সামনে আরও ভালো চলবে। কারণ, বিভিন্ন হল থেকে তাণ্ডব নেমে গেলে আমরাই নতুন হিসেবে ঢুকব। সেভাবেই হল মালিকদের সঙ্গে কথা হচ্ছে।’ মুক্তির ১১ম দিনে আরও ড্রপ করেছে ‘ইনসাফ’। মঙ্গলবার পর্যন্ত স্টার সিনেপ্লেক্স (১১টি) এবং লায়ন সিনেমাস (২টি) মিলিয়ে সিনেমাটির মোট শো চলেছে ১৩টি। কোনো শো হাউজফুল যায়নি। এগারো দিন শেষে ‘ইনসাফ’ সিনেমার মোট মাল্টিপ্লেক্স গ্রস ৮১.৪৮ লাখ টাকা।
মুক্তির ১১তম দিনে আরও ড্রপ করেছে ‘নীলচক্র’। মঙ্গলবার স্টার সিনেপ্লেক্সের বসুন্ধরা শাখায় সিনেমাটির ২টি শো চলেছে। কোনো শো হাউজফুল যায়নি। শুরুতে আশা জাগিয়েও পরে পিছিয়ে পড়ে ‘নীলচক্র’। সিনেমাটির শোর সংখ্যা কমে যায়। কমতে থাকে আয়। পরিচালক মিঠু খান বলেন, ‘আমাদের ভবিষ্যতে পরিকল্পনা আছে ঢাকার বাইরে বড় পরিসরে মুক্তি দেওয়ার। আশা করছি, সেখানে আরও দর্শক পাব। জুলাই থেকে দেশের বাইরে বড় পরিসরে মুক্তি পাবে। সেখান থেকেও ভালো আয় হবে।’ এগারো দিন শেষে ‘নীলচক্র’ সিনেমার মোট মাল্টিপ্লেক্স গ্রস ১৯.৬৯ লাখ টাকা।
অল্পসংখ্যক হল নিয়ে আলোচনায় রয়েছে ‘এশা মার্ডার : কর্মফল’। মুক্তির পর থেকে সিনেমাটি নিয়ে দর্শকদের আগ্রহ বাড়ছে। সিনেমার পরিচালক সানী সানোয়ার জানান, ক্রমান্বয়ে হল ও দর্শকসংখ্যা বাড়ছে। তিনি জানান, অল্পসংখ্যক শো হলেও বেশিরভাগই ছিল হাউসফুল। সেটা তাদের প্রত্যাশিত আয়কে ছাড়িয়ে গেছে। গণমাধ্যমে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে পরিচালক বলেন, ‘আমাদের ছবিটি মিডিয়াম বাজেটের। আমরা আয় যেমন করছি, তেমনি দর্শকদের কাছ থেকে ভালো প্রশংসা পাচ্ছি। এটা কিন্তু আমাদের অর্জন। সিনেমাটিতে নিম্নবিত্ত মানুষের গল্প বলা হয়েছে। সেটা বহু দর্শকের হৃদয় ছুঁয়েছে। ভবিষ্যতে ঢাকার বাইরেও আমাদের সিনেমা মুক্তি পাবে। আয়েও আমরা ভালো অবস্থানে থাকব। তবে একটু সময় লাগবে।’ মুক্তির ১১তম দিনে একটি শো কম চলেছে ‘এশা মার্ডার : কর্মফল’-এর। গতকাল স্টার সিনেপ্লেক্সে সিনেমাটির মোট ২টি শো চলেছে। কোনো শো হাউজফুল যায়নি। এগারো দিন শেষে ‘এশা মার্ডার : কর্মফল’ সিনেমার মোট মাল্টিপ্লেক্স গ্রস ১৪.১০ লাখ টাকা।
ঈদের আগে প্রচারণায় এগিয়ে থাকলেও শেষ মুহূর্তে হলে দাপট দেখাতে পারেনি ‘টগর’। একটি সূত্র জানায়, ‘টগর’ সিনেমার আয় ১৪ লাখের মতো।