প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১৭ জুন ২০২৫ ১২:২৫ পিএম
জয়া আহসান
দীর্ঘ সময় পর ঈদুল আজহায় বাংলাদেশের প্রেক্ষাগৃহে ফিরে এলেন জয়া আহসান- এবার একসঙ্গে দুটি সিনেমা নিয়ে। রায়হান রাফীর ‘তাণ্ডব’ আর তানিম নূরের ‘উৎসব’ দুটি ভিন্ন ঘরানার ছবি, কিন্তু এক জায়গায় মিল— দর্শকের ভালোবাসায় দুটিই সমাদৃত।
ঈদের রঙ না মুছতেই জয়া আবার পা রাখলেন কলকাতার নতুন চলচ্চিত্র প্রকল্পে। গত শনিবার কলকাতায় শুরু হয়েছে কৌশিক গাঙ্গুলীর নতুন ছবি ‘আজও অর্ধাঙ্গিনী’র শুটিং। এটি মূলত তার আগের ছবির সিকুয়েল, যেখানে আবারও দেখা যাবে সুমন, শুভ্রা ও মেঘনার জটিল সম্পর্কের টানাপড়েন। কৌশিক সেন, চূর্ণী গাঙ্গুলী এবং জয়ার সঙ্গে এবার যুক্ত হচ্ছেন ইন্দ্রাশিস রায়, যার উপস্থিতি গল্পে যোগ করবে নতুন মাত্রা।
সুমনের অসুস্থতা নিয়ে যে গল্পের সূচনা হয়েছিল ‘অর্ধাঙ্গিনী’তে, সেই গল্প এবার এগিয়ে যাবে একটি বিয়ের উপলক্ষে তিন চরিত্রের নতুন করে মুখোমুখি হওয়ার মধ্য দিয়ে। সম্পর্কের পুরনো দাগ, না বলা কথা আর অনুচ্চারিত আবেগ- সবকিছু নিয়ে গড়ে উঠছে এক নতুন আবহ। জয়ার নিজের ভাষায়, ‘কৌশিকদার সঙ্গে কাজ করতে গিয়ে প্রতিটি দিন আলাদা অভিজ্ঞতা হয়। কাজের ধরনে, চরিত্রের গভীরতায় নিজেকে প্রতিনিয়ত আবিষ্কার করি নতুনভাবে। চূর্ণীদির সঙ্গে আবারও কাজ করছি- এটা এক ধরনের অভিনয় শিক্ষাও বটে।’
ঢাকায় ঈদের ছবির প্রচারে ব্যস্ত থাকার পর কলকাতায় শুটিংয়ে এসে জয়া যেন শুধুই একজন অভিনেত্রী নন, দুই বাংলার সাংস্কৃতিক সেতুবন্ধনের এক মুখপাত্র হয়ে উঠেছেন।
‘আমরা চাই না কোনো বিদ্বেষ, কোনো অসহিষ্ণুতা আমাদের আলাদা করুক। শিল্পের কাজই হচ্ছে মানুষের মাঝে সেতু তৈরি করা— নয়তো তার মানে থাকে না।’ কলকাতার টিভি নাইন বাংলাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে জয়া আহসান বলেন, ‘কোনোভাবেই শিল্পীদের বিচ্ছিন্নতা কাম্য নয়। কোনোভাবেই কাম্য নয়। শিল্পীদের কাজ হচ্ছে সবকিছু একসঙ্গে করা। আমরা যে রকম বলি গ্লোবাল, গ্লোবালি আমরা যে বেঁচে আছিÑ সে অর্থে শিল্পীদের তো কোনো ভৌগোলিক সীমারেখা থাকা উচিত নয়। তার ভেতর আমাদের সংস্কৃতি এক, মূল্যবোধ এক, আবেগ-অনুভূতি এক, সেখানে আমরা কেন বিচ্ছিন্ন থাকব! সবচেয়ে বড় কথা, আমাদের ভাষা এক। আমরা বাংলায় কথা বলি। আমাদের চেষ্টাটা সব সময় থাকবে, পৃথিবীর যে কোণে যে বাঙালিই থাকুক, যে বাংলাভাষী মানুষই থাকুক, তাদের সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করাÑ তা আমাদের শিল্পকর্ম দিয়ে। এটার জন্য আমাদের দুই বাংলাকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে।’
জয়ার এই অবস্থান শুধু তার ক্যারিয়ার নয়, তার বিশ্বাসকেও স্পষ্ট করে তোলে। অভিনয় তার হাতিয়ার, আর সেই হাতিয়ার দিয়েই তিনি গড়ে তুলতে চান দুই বাংলার মাঝে আত্মিক সংযোগ।
‘তাণ্ডব’ ও ‘উৎসব’-এর সফলতা, ‘আজও অর্ধাঙ্গিনী’র নতুন যাত্রা, এবং দুই বাংলার শিল্পীদের মিলিত ভবিষ্যতের স্বপ্ন— সব মিলিয়ে জয়া আহসান এখন শুধু অভিনেত্রী নন, বরং এক সাংস্কৃতিক দূত; যিনি ক্যামেরার সামনেই নয়, ক্যামেরার বাইরেও শিল্পকে করে তুলছেন অর্থবহ।