প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২৮ মে ২০২৫ ১২:৩২ পিএম
তাসনিয়া ফারিণকে আমরা এতদিন চিনি ‘পাশের বাড়ির মেয়ে’ কিংবা রোমান্টিক, সংবেদনশীল চরিত্রের মাধ্যমে। দর্শকদের কাছে তিনি যেন এক পরিচিত মায়াবতী রূপে ধরা দিতেন, যার চোখে সব সময় লুকিয়ে থাকত অনুভূতির গভীরতা। তবে এবার সেই চেনা ছকে ভাঙন ধরিয়ে একেবারে নতুন এক রূপে হাজির হচ্ছেন ফারিণ- এবার তিনি অ্যাকশনে!
ঈদ উপলক্ষে মুক্তি প্রতীক্ষিত সিনেমা ‘ইনসাফ’-এর টিজার প্রকাশিত হয়েছে গত সোমবার রাতে। নির্মাতারা এটিকে বলছেন ‘অফিশিয়াল ওয়ার্নিং’, যেন দর্শকদের জন্য এক প্রাথমিক সংকেত। এই টিজারেই ধরা দিয়েছে এক অন্য রকম ফারিণ- তিনি এবার আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য। মিশনে যাচ্ছেন ভয়ংকর এক সন্ত্রাসীকে ধরতে। সেই সন্ত্রাসী কি তবে শরীফুল রাজ? টিজারে রাজকে দেখা গেছে এক ত্রাস সৃষ্টিকারী চরিত্রে। গত ঈদুল ফিতরে তাকে দেখা গিয়েছিল ‘কাজলরেখা’, ‘দেয়ালের দেশ’ ও ‘ওমর’- এই তিন সিনেমায়। এরপর থেকেই তিনি ছিলেন বেশ নীরব। এবার ফিরে এলেন একেবারে বিপরীত এক চরিত্রে, যেখানে রোমান্সের চেয়ে সন্ত্রাসই বড় পরিচয়।
তবে টিজারে শুধু সংঘর্ষ নয়, দেখা গেছে ফারিণ ও রাজকে একটি রোমান্টিক গানের দৃশ্যেও। ইঙ্গিত মিলছে, হয়তো এই দুই চরিত্রের মধ্যে রয়েছে অতীতের কোনো সম্পর্ক। যদিও নির্মাতারা সেই রহস্য ফাঁস করেননি এখনও।
টিজারের একেবারে শেষ দৃশ্যে চমকে দিয়েছেন মোশাররফ করিম। তার চরিত্রটিকে ঘিরে রাখা হয়েছে ধোঁয়াশায়, তবে যে ভঙ্গিতে তিনি হাজির হয়েছেন, তাতে স্পষ্টÑ তিনি বড় কিছু করে ফেলবেন। ১ মিনিট ২২ সেকেন্ডের এই টিজার ইতোমধ্যে দর্শকদের মধ্যে সাড়া ফেলে দিয়েছে। নির্মাতা সঞ্জয় সমাদ্দারের ফেসবুক পোস্টে দেখা গেছে উত্তেজনা ও প্রশংসার জোয়ার। কেউ লিখেছেন, ‘এ তো আগুন টিজার!’ কেউবা ফারিণকে ভিন্নভাবে উপস্থাপনের জন্য নির্মাতাকে জানাচ্ছেন কৃতজ্ঞতা।
প্রসঙ্গত, ‘ইনসাফ’ হলো সঞ্জয় সমাদ্দারের দ্বিতীয় সিনেমা। তার প্রথম চলচ্চিত্র ‘মানুষ’ নির্মিত হয়েছিল কলকাতায়, যেখানে মুখ্য ভূমিকায় ছিলেন জিৎ। এবার বাংলাদেশি প্রেক্ষাপটে তিনি যে ধাক্কা দিতে যাচ্ছেন, সেই ইঙ্গিত যেন মিলছে ‘ইনসাফ’-এর প্রথম ঝলকেই। পরিচালক সঞ্জয় সমাদ্দার জানিয়েছেন, ছবিতে ফারিণের চরিত্রের নাম জাহান। চরিত্রটি বহুমাত্রিক, আবেগপ্রবণ এবং ক্ষিপ্র; যা দর্শককে চমকে দেবে বলে বিশ্বাস পরিচালকের। ফারিণকে কেন এই চরিত্রে নির্বাচন করা হলো জানতে চাইলে সঞ্জয় বলেন, ‘আমার এমন একজন অভিনেত্রী দরকার ছিল যিনি পরিণত অভিনয় করতে পারেন, আবার নতুন নায়িকার মতো দর্শকের সামনে ধরা দেবেন। ফারিণ ঠিক সে রকমই। তার সিনসিয়ারিটি এবং চরিত্র অনুধাবনের ক্ষমতা সিনেমাটিকে অন্য উচ্চতায় নিয়েছে।’ ফারিণ আগে বলেছিলেন, ওয়েব ফিল্ম ‘হাউ সুইট’ ছিল মূলধারার সিনেমার জন্য তার প্রস্তুতি পর্ব। সেই প্রস্তুতি যে যথার্থ ছিল, ‘ইনসাফ’-এর লুকেই তা স্পষ্ট। ‘ইনসাফ’ শুধু একটি সিনেমা নয়, এটি সম্ভবত ঢাকাই চলচ্চিত্রে একটি নতুন ধারা শুরুর ইঙ্গিত। যেখানে শক্তিশালী নারী চরিত্র, প্রাসঙ্গিক সামাজিক বার্তা এবং অ্যাকশন-ড্রামার সংমিশ্রণে উঠে আসবে এক নতুন গল্প।