প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২৮ মার্চ ২০২৫ ১৩:০২ পিএম
ইত্যাদিতে বিদেশিদের অংশগ্রহণ
হানিফ সংকেতের ‘ইত্যাদি’ প্রতি ঈদেই দর্শকের জন্য নিয়ে আসে বাড়তি আনন্দের বিশেষ আয়োজন। এবারের ঈদও তার ব্যতিক্রম নয়। ঈদ মানেই যেন পরিবার-পরিজন নিয়ে ইত্যাদি দেখার অনন্য অভিজ্ঞতা। ১৯৯৮ সালে মিরপুর ন্যাশনাল সুইমিং কমপ্লেক্সে প্রথমবারের মতো ঈদের ইত্যাদি উন্মুক্ত স্থানে ধারণের সূচনা হয়েছিল। সে ধারাবাহিকতায় এবার অনুষ্ঠানটি চিত্রায়িত হয়েছে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর ব্লু স্কাই গার্ডেনসংলগ্ন নয়নাভিরাম লোকেশনে।
অনুষ্ঠানটির সূচনা হয়েছে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের কালজয়ী গান ‘ও মন রমজানের ঐ রোজার শেষে এলো খুশির ঈদ’ পরিবেশনার মধ্য দিয়ে। দীর্ঘ তিন দশক ধরে দেশের বিভিন্ন জায়গায় বর্ণাঢ্য আয়োজনে এ গানটি পরিবেশিত হয়ে আসছে। এবারে গানটি পরিবেশন করেছেন বিভিন্ন কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫০ জনের বেশি শিক্ষার্থী, যা স্টেডিয়ামের হাজারো দর্শকের অংশগ্রহণে এক অনবদ্য আবহ তৈরি করেছে। সংগীতায়োজন করেছেন মেহেদী।
এবারের ঈদের ইত্যাদির অন্যতম আকর্ষণ দেশাত্মবোধক গান। নন্দিত শিল্পী সৈয়দ আবদুল হাদী ও সাবিনা ইয়াসমিনের সঙ্গে নতুন প্রজন্মের ১০ জন জনপ্রিয় শিল্পী ইমরান মাহমুদুল, রাজীব, অয়ন চাকলাদার, রাশেদ, সাব্বির জামান, সিঁথি সাহা, অবন্তী সিঁথি, আতিয়া আনিসা, মালিহা তাবাসসুম খেয়া ও সানিয়া সুলতানা লিজা গানটিতে কণ্ঠ দিয়েছেন। ‘ও বাংলাদেশ, স্বাধীন বাংলাদেশ’ শিরোনামের গানটির কথা লিখেছেন গীতিকবি মোহাম্মদ রফিকউজ্জামান, সুর ও সংগীত পরিচালনা করেছেন শওকত আলী ইমন।
চমকের তালিকায় এবার আরও এক নতুন সংযোজন হলো জনপ্রিয় দুই সংগীতশিল্পী হাবিব ওয়াহিদ ও প্রীতম হাসানের যুগল পরিবেশনা। তাদের গাওয়া গানটির কথা লিখেছেন ইনামুল তাহসিন, সুর ও সংগীত পরিচালনা করেছেন প্রীতম হাসান। এ ছাড়া প্রথমবারের মতো টেলিভিশনে গান গাইলেন ঢালিউডের জনপ্রিয় অভিনেতা সিয়াম আহমেদ ও ছোটপর্দার জনপ্রিয় অভিনেত্রী জান্নাতুল সুমাইয়া হিমি। কবির বকুলের লেখা, ইমরান মাহমুদুলের সুর করা এ রোমান্টিক গানটি দর্শকের জন্য হবে বাড়তি চমক।
ইত্যাদির নাচের পরিবেশনায় এবারও থাকছে বর্ণিল আয়োজন। জনপ্রিয় টিভি অভিনেত্রী সাফা কবির, সাদিয়া আয়মান, সামিরা খান মাহি ও পারসা ইভানা একদল নৃত্যশিল্পীর সঙ্গে অংশ নিয়েছেন একটি বিশেষ নৃত্যে, যার কোরিওগ্রাফি করেছেন ইভান শাহরিয়ার সোহাগ এবং সংগীত পরিচালনা করেছেন আকাশ মাহমুদ।
সমসাময়িক সামাজিক ইস্যুগুলো সব সময়ই ইত্যাদিতে গুরুত্ব পায়। এবারের বিশেষ পর্বগুলোর মধ্যে অনলাইনের বিভিন্ন দিক নিয়ে তৈরি তিনটি নাট্যাংশে অভিনয় করেছেন জনপ্রিয় দম্পতি শহীদুজ্জামান সেলিম-রোজী সিদ্দিকী, এফএস নাঈম-নাদিয়া আহমেদ এবং ইন্তেখাব দিনার-বিজরী বরকতউল্লাহ। মধ্যবিত্তের অর্থনৈতিক টানাপড়েন নিয়ে বিশেষ মিউজিক্যাল ড্রামায় অংশ নিয়েছেন ফজলুর রহমান বাবু, মোমেনা চৌধুরী, আনোয়ার শাহী ও র্যাপার মাহমুদুল হাসান।
এবারের দলীয় সংগীতের মূল ভাবনা ‘দেখার চোখ ও বিবেকের চোখ’। এতে অভিনয় করেছেন তৌসিফ মাহবুব ও চিত্রনায়িকা শবনম বুবলী, সংগীতায়োজন করেছেন মেহেদী, কণ্ঠ দিয়েছেন তানজিনা রুমা, রাজীব ও খেয়া। নৃত্য পরিচালনা করেছেন মামুন।
ইত্যাদির আরেকটি বিশেষ দিক হলো বিদেশি নাগরিকের অংশগ্রহণের মাধ্যমে বাংলাদেশের সংস্কৃতি তুলে ধরা। এবারের পর্বেও বিদেশিদের অংশগ্রহণে তুলে ধরা হয়েছে লোকজ সংস্কৃতি, গ্রামীণ খেলাধুলা ও ঐতিহ্যবাহী কর্মকাণ্ড। পাশাপাশি গুজবসংক্রান্ত সচেতনতামূলক পর্বও থাকছে যা বর্তমান প্রেক্ষাপটে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
প্রতিবারের মতো এবারও ব্যতিক্রমী উপায়ে নির্বাচিত তিনজন দর্শকের মুখোমুখি হয়েছেন স্বল্পসময়ে জনপ্রিয়তা পাওয়া অভিনেতা নাসির উদ্দিন খান। এ ছাড়া ইত্যাদির নিয়মিত চরিত্র নাতি ও কাশেম টিভির রিপোর্টার এবারও হাজির হচ্ছেন নতুন কিছু নিয়ে।
ঈদের আনন্দ আরও রঙিন করতে বিশেষ এ ইত্যাদি প্রচারিত হবে ঈদের পরদিন রাত ৮টার বাংলা সংবাদের পর, বাংলাদেশ টেলিভিশনে। অনুষ্ঠানটির শিল্প নির্দেশনায় আছেন মুকিমুল আনোয়ার মুকিম, রচনা, পরিচালনা ও উপস্থাপনা করেছেন হানিফ সংকেত। ফাগুন অডিও ভিশনের এ আয়োজনে স্পন্সর করেছে কেয়া কসমেটিকস লিমিটেড।