শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালকের পদত্যাগ প্রসঙ্গে
প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০২ মার্চ ২০২৫ ১১:৩৮ এএম
প্রবা কোলাজ
শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক পদ থেকে আকস্মিক অবসরের ঘোষণা দিয়েছেন অধ্যাপক সৈয়দ জামিল আহমেদ। গত শুক্রবার (সন্ধ্যায় রাজধানীর শিল্পকলা একাডেমির ‘মুনীর চৌধুরী প্রথম জাতীয় নাট্যোৎসব’-এর সমাপনী আয়োজনে সভাপতির বক্তব্য দিতে এসে তিনি এ ঘোষণা দেন। তার এ ঘোষণায় শিল্পসংস্কৃতি অঙ্গনের সবাই অবাক হয়েছেন।
পদত্যাগের কারণ হিসেবে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের অসহযোগিতার কথা জানান তিনি। এর পর থেকে সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকীর সঙ্গে সৈয়দ জামিল আহমেদের সম্পর্ক নিয়ে চলতে থাকে নানা কানাঘুষা। এসবের মধ্যে এবার মুখ খুললেন ফারুকী। গতকাল শনিবার সৈয়দ জামিল আহমেদকে নিয়ে লিখেছেন দীর্ঘ স্ট্যাটাস। তিনি লেখেন, ‘সৈয়দ জামিল আহমেদের কাজের একজন গুণমুগ্ধ আমি। সম্ভবত উনার কাজ নিয়ে বাংলাদেশে কোনো পত্রিকায় ছাপা হওয়া সবচেয়ে বিস্তারিত লেখাটা আমি লিখেছিলাম যায়যায়দিনের এন্টারটেইনমেন্ট ম্যাগাজিন “মৌচাকে ঢিল”-এর জন্য। এর পরও বাংলা-ইংরেজি অনেক কাগজে লিখেছি। এখনও আমি তাকে বাংলাদেশের থিয়েটারের সবচেয়ে মেধাবী নির্দেশক মনে করি। কদিন আগেও জামিল আহমেদের সামনেই একজন বিদেশি রাষ্ট্রদূতকে অনুরোধ করেছি উনাকে দিয়ে তাদের দেশে একটা থিয়েটার প্রোডাকশন করাতে। কিন্তু ভালো শিল্পী হওয়া আর আমলাতন্ত্র কনফিডেন্সে নিয়ে প্রতিষ্ঠান চালানো দুটো দুই রকম আর্ট। দ্বিতীয় কাজটা করবার জন্য লাগে ধৈর্য এবং ম্যানেজারিয়াল ক্যাপাসিটি। কলিগদের বুলিং না করে ভালোবাসা এবং শ্রদ্ধা দিয়ে অনেক কাজ আদায় করে নেওয়া যায়। পাশাপাশি সরকারি প্রতিষ্ঠানে কাজ করতে গেলে যে কম্পোজার লাগে, সেটার সঙ্গে কোনো একটা থিয়েটার দলে নির্দেশনা দেওয়ার টেম্পারামেন্ট এক না। আমার ফিল্ম ইউনিটে আমি যা করতে পারি, একটা সরকারি প্রতিষ্ঠানে আমি তা করতে পারি না।’
জামিল আহমেদকে শ্রদ্ধার কথা জানিয়ে ফারুকী আরও লেখেন, ‘আমি জামিল ভাইয়ের নাটকীয় পদত্যাগ নিয়ে কথা বলতে চাচ্ছিলাম না কারণ তাতে আমাকে এমন কিছু রেফারেন্স টানতে হবে যেটা তার জন্য অস্বস্তিকর হবে। আমি চাচ্ছিলাম না কারণ আমি তাকে শ্রদ্ধা করি। কিন্তু ফর রেকর্ডস আমাকে আসলে এগুলো বলতেই হবে। আজকে আমাদের অনেক কাজ আছে। এটা শেষ করে সময় পেলে লিখব। শুধু এটুকু আপাতত বলে রাখি উনার বলা অনেক কথা পুরো সত্য নয়, অনেক কথা ডাহা মিথ্যা এবং কিছু কথা পরিস্থিতি ডিল না করতে পারাজনিত হতাশা থেকে বের হয়ে আসা বলে মনে হচ্ছে। আমার বিস্তারিত লেখা হয়তো উনাকে বিব্রত করতে পারে। কিন্তু আমাকে আপনি এমন এক পরিস্থিতির মুখোমুখি দাঁড় করিয়েছেন যেখানে আমাকে বিব্রতকর হলেও সত্য বলতে হবে, জামিল ভাই।’ সবশেষে তিনি বলেন, ‘আমি উনার সর্বাঙ্গীণ মঙ্গল কামনা করি। উনার সৃজনশীল কাজে যেকোনোভাবে সহযোগিতা করতে পারলে মন্ত্রণালয় ধন্য হবে। আর আমি আমার দায়িত্ব ছেড়ে যাওয়ার পরও তার কোনো সাহায্যে এলে আনন্দিত হব, যদিও আমাদের দুজনের কাজের ক্ষেত্র আলাদা।’