প্রবা প্রতিবেদন
প্রকাশ : ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১৪:২৪ পিএম
আপডেট : ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১৪:২৫ পিএম
দেশ-বরেণ্য সংগীতশিল্পী সাবিনা ইয়াসমিন। ছবি : সংগৃহীত
হাসপাতালে তিন দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর বাসায় ফিরেছেন দেশের বরেণ্য সংগীতশিল্পী সাবিনা ইয়াসমিন। আজ মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ১২টার দিকে তিনি বাসায় ফিরেছেন। সংগীতশিল্পী জাহাঙ্গীর সাইদ এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এ বিষয়ে জাহাঙ্গীর বলেন, ‘হাসপাতাল থেকে সাবিনা ইয়াসমিনকে ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে। শরীরের অবস্থা এখন ভালো। তার শারীরিক তেমন কোনো জটিলতা নেই। আজ দুপুরে তিনি বাড়ি ফিরেছেন। তবে বেশ কিছুদিন সাবিনা ইয়াসমিনকে বিশ্রামে থাকতে হবে।’
এক বছরের বেশি সময় পর গত শুক্রবার গান গাইতে মঞ্চে উঠেছিলেন সাবিনা ইয়াসমিন। এক ঘণ্টার মতো গানও গেয়েছিলেন। আমন্ত্রিত দর্শক-শ্রোতারা মুগ্ধ হয়ে শুনছিলেন সেই গান। এর মধ্যে হঠাৎই মঞ্চে অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। দ্রুত তাকে উদ্ধার করে নিয়ে যাওয়া হয় গুলশানের একটি হাসপাতালে। প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে রাতে তাকে বাসায় নিয়ে যাওয়া হয়। তবে ভোরে শারীরিক অবস্থার কিছুটা অবনতি হলে তাকে আবার ধানমন্ডির একটি বেসরকারি হাসপাতালে নেওয়া হয়। জানা যায় এখানে তিনি দীর্ঘদিন ধরে চিকিৎসাসেবা নিয়ে থাকেন।
সাবিনা ইয়াসমিনের জন্ম ১৯৫৪ সালের ৪ সেপ্টেম্বর, ঢাকায়। পৈতৃক নিবাস সাতক্ষীরায়। বেড়ে উঠেছেন সংস্কৃতিমনা পরিবারে। বাবা লুতফর রহমান ও মা মৌলুদা খাতুনও গানের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। সাবিনার পাঁচ বোনের মধ্যে ফরিদা ইয়াসমিন, ফওজিয়া খান, নীলুফার ইয়াসমিনও গানের জগতের মানুষ।
সংগীতের সঙ্গে সাবিনার বসবাস ছয় দশকের বেশি সময় ধরে। মাত্র সাত বছর বয়সে প্রথমবার স্টেজে গান করেছেন সাবিনা; ১৯৬২ সালে এহতেশাম পরিচালিত ‘নতুন সুর’ সিনেমায় শিশুশিল্পী হিসেবে প্রথম গান করেন। ১৯৬৭ সালে প্রথম প্লেব্যাক করেন আমজাদ হোসেন ও নুরুল হক বাচ্চু পরিচালিত ‘আগুন নিয়ে খেলা’ সিনেমায়। বাংলাদেশের স্বাধীনতার ইতিহাসের সঙ্গে জড়িয়ে থাকা গানের পাশাপাশি চলচ্চিত্রের গানে কণ্ঠ দিয়ে সব শ্রেণির শ্রোতাদের মাঝে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন সাবিনা ইয়াসমিন। শিক্ষাজীবনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সমাজবিজ্ঞানে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেছেন সাবিনা ইয়াসমিন।
ভারতের প্রখ্যাত সুরকার আর ডি বর্মণ, হেমন্ত মুখোপাধ্যায়, সত্য সাহা, সুবল দাস, আলম খান, বাপ্পি লাহিড়ী, আলী হোসেন, খন্দকার নুরুল আলম, আলাউদ্দিন আলী, আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুলের মত সুরকারদের সুরে অসংখ্য চলচ্চিত্রের গান কণ্ঠে তুলেছেন তিনি।
সংগীতে অবদানের জন্য ১৯৮৪ সালে একুশে পদক, ১৯৯৬ সালে স্বাধীনতা পুরস্কার ও ১৪ বার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন তিনি।