প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২৭ মে ২০২৪ ১০:৫৮ এএম
গ্রাঁ পিঁ পুরস্কার জিতেছে ভারতের ‘অল উই ইমাজিন এজ লাইট’ সিনেমা। পুরস্কার নিতে তিন অভিনেত্রীকে নিয়ে মঞ্চে উঠেছিলেন নির্মাতা পায়েল কাপাডিয়া।
অবশেষে কাটল অপেক্ষার প্রহর। জানা গেল প্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহী কান চলচ্চিত্র উৎসবের ৭৭তম আসরের বিজয়ী হলেন কারা। গত ১৪ মে উদ্বোধনের পর ২৫ মে পুরস্কার বিতরণের মধ্য দিয়ে শেষ হলো ১২ দিনের এই আয়োজন। শনিবার বাংলাদেশ সময় রাত ১১টায় কান চলচ্চিত্র উৎসবের মূল ভবন প্যালে ডে ফেস্টিভ্যালে বসে সমাপ্তি অনুষ্ঠান। যেখানে উপস্থিত হন মূল প্রতিযোগিতা বিভাগের সব বিচারক ও উৎসব কর্তৃপক্ষসহ আমন্ত্রিত অতিথিরা। একে একে তারা ঘোষণা করেন বিজয়ীদের নাম।
এবারের উৎসবের সেরা ছবি হিসেবে স্বর্ণপাম জিতে নিয়েছে আমেরিকান ছবি ‘আনোরা’। ছবিটি পরিচালনা করেছেন শন বেকার। নিউইয়র্কের নাইট ক্লাবের একজন নৃত্যশিল্পীকে কেন্দ্র করে এর গল্প। এতে মূল চরিত্রে অভিনয় করেছেন মিকি ম্যাডিসন। শন বেকারের হাতে পুরস্কার তুলে দেন আমেরিকান পরিচালক জর্জ লুকাস। এর আগে তার হাতে সম্মানসূচক স্বর্ণপাম তুলে দেন আরেক কিংবদন্তি নির্মাতা ফ্রান্সিস ফোর্ড কপোলা।
এবারের আসরে মূল প্রতিযোগিতা বিভাগে বিচারক হিসেবে গ্রেটা গারউইগের নেতৃত্বে কাজ করেছেন আমেরিকান অভিনেত্রী লিলি গ্ল্যাডস্টোন, ফরাসি অভিনেত্রী এভা গ্রিন, লেবানিজ পরিচালক ও চিত্রনাট্যকার নাদিন লাবাকি, তুর্কি চিত্রনাট্যকার ও আলোকচিত্রী এব্রু জেলান, জাপানিজ পরিচালক হিরোকাজু কোরি-এদা, ইতালিয়ান অভিনেতা পিয়ারফ্রান্সেসকো ফাভিনো, স্প্যানিশ পরিচালক ও চিত্রনাট্যকার হুয়ান আন্তোনিও বায়োনা, ফরাসি অভিনেতা-প্রযোজক ওমর সি।
উৎসবে এবার সেরা
নির্মাতার পুরস্কার জিতে নিয়েছেন মিগুয়েল গোমেস। ‘গ্র্যান্ড ট্যুর’-এর জন্য পুরস্কারটি
জিতে নেন তিনি।
স্বর্ণপামের পরেই গ্রাঁ পিঁ পুরস্কারকে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বলে ধরে নেওয়া হয়। এবারের আসরে পুরস্কারটি জিতে নিয়েছে ভারতীয় ছবি ‘অল উই ইমাজিন এজ লাইট’। ছবিটি পরিচালনা করেছেন পায়েল কাপাডিয়া। তার হাতে পুরস্কার তুলে দেন আমেরিকান অভিনেত্রী ভায়োলা ডেভিস। তখন মঞ্চে পায়েলের পাশে ছিলেন ছবিটির তিন অভিনেত্রী কানি কুসরুতি, দিব্যা প্রভা ও ছায়া কদম। এই ছবির মাধ্যমে ৩০ বছর পর ভারতীয় ছবি হিসেবে কানের মূল প্রতিযোগিতা বিভাগে নাম লেখায় ভারত। এবার পুরস্কার জিতে গড়েছে ইতিহাস। পায়েল কাপাডিয়ার প্রথম পূর্ণদৈর্ঘ্য ছবি এটি। এর আগে বেশকিছু স্বল্পদৈর্ঘ্য ও প্রামাণ্য চলচ্চিত্র নির্মাণ করেছেন। ২০১৯ সালে ১৫তম ঢাকা আন্তর্জাতিক স্বল্পদৈর্ঘ্য ও মুক্ত চলচ্চিত্র উৎসবে পুরস্কার জিতে নেন পায়েল। সে বছর ইন্টারন্যাশনাল কম্পিটিশন (ডকুমেন্টারি) বিভাগে ‘এন্ড হোয়াট ইজ দ্য সামার সেয়িং’-এর জন্য শ্রেষ্ঠ আন্তর্জাতিক স্বল্পদৈর্ঘ্য প্রামাণ্যচিত্রের পুরস্কার পান তিনি।
এবারের উৎসবে সেরা চিত্রনাট্যের পুরস্কার জিতে নিয়েছে ‘দ্য সাবস্ট্যান্স’। উৎসবে ‘এমিলিয়া পেরেজ’-এর জন্য সেরা অভিনেত্রীর পুরস্কার জিতে নিয়েছেন যথাক্রমে জো সালদানা, আদ্রিয়ানা পাজ, সেলেনা গোমেজ ও কার্লা সোফিয়া। ‘কাইন্ডস অব কাইন্ডনেস’ ছবির জন্য সেরা অভিনেতা নির্বাচিত হয়েছেন জেসে প্লেমনস। উৎসবে ‘এমিলিয়া পেরেজ’-এর জন্য জুরি প্রাইজ পেয়েছেন জ্যাক অডিয়াঁর।
এ ছাড়া উৎসবের
৭৭তম আসরে চিত্রনাট্যের জন্য বিশেষ পুরস্কার দেওয়া হলো ইরানি নির্মাতা মোহাম্মদ রাসুলফের
‘দ্য সিড অব দ্য সেক্রেড ফিগ’-কে।
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ ছাড়াও এবার কানে ফিলিস্তিন-ইসরায়েল যুদ্ধের প্রভাব ছিল উৎসবের শুরু থেকে পুরোটা জুড়েই। এ বছরের কানের মূল প্রতিযোগিতা বিভাগে ছিল ২২টি ছবি।
মূল প্রতিযোগিতা
স্বর্ণপাম : আনোরা
(শন বেকার, যুক্তরাষ্ট্র)
গ্রাঁ প্রিঁ :
অল উই ইমাজিন অ্যাজ লাইট (পায়েল কাপাডিয়া, ভারত)
জুরি প্রাইজ :
এমিলিয়া পেরেস (জ্যাক অডিয়াঁর, ফ্রান্স)
স্পেশাল জুরি
প্রাইজ : দ্য সিড অব দ্য সেক্রেড ফিগ (মোহাম্মদ রাসুলফ, ইরান)
সেরা অভিনেতা
: জেসি প্লেমন্স (কাইন্ডস অব কাইন্ডনেস, যুক্তরাষ্ট্র)
সেরা অভিনেত্রী
: সেলেনা গোমেজ, জোয়ি স্যালডানা, আদ্রিয়ানা পাজ, কার্লা সোফিয়া গাসকোন (এমিলিয়া পেরেস)
সেরা পরিচালক
: মিগেল গোমেজ (গ্র্যান্ড ট্যুর, পর্তুগাল)
সেরা চিত্রনাট্যকার
: কোরালি ফারজাঁ (দ্য সাবস্ট্যান্স, ফ্রান্স)
আঁ সাঁর্তে
রিগা
সেরা চলচ্চিত্র
: ব্ল্যাক ডগ (গুয়ান হু, চীন)
জুরি প্রাইজ :
দ্য স্টোরি অব সুলেমান (বরিস লোজকাইন, ফ্রান্স)
সেরা অভিনেতা
: আবু সনগারে (দ্য স্টোরি অব সুলেমান, ফ্রান্স)
সেরা অভিনেত্রী
: অনসূয়া সেনগুপ্ত (দ্য শেমলেস)
সেরা পরিচালক
: রবার্তো মিনারভিনি (ছবি : দ্য ড্যামড, ইতালি), রুঙ্গানো নিয়োনি (ছবি : অন বিকামিং
অ্যা গিনি ফাউল, জাম্বিয়া/ওয়েলশ)
ইয়ুথ অ্যাওয়ার্ড
: হলি কাউ (লুইস কুরভয়জিয়ের, ফ্রান্স; প্রথম চলচ্চিত্র)
স্পেশাল মেনশন
: নোরা (তৌফিক আল জায়দি, সৌদি আরব; প্রথম চলচ্চিত্র)
সম্মানসূচক স্বর্ণপাম : মেরিল স্ট্রিপ, স্টুডিও জিবলি, জর্জ লুকাস
গোল্ডেন ক্যামেরা
ক্যামেরা দ’র
: হলফদান উলমন তন্দেল (আরমান্ড, নরওয়ে; আঁ সাঁর্তে রিগা)
স্পেশাল মেনশন : মংগ্রেল (চাং ওয়ে লিয়েং, ইউ চাও ইন, তাইওয়ান)
স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র
স্বর্ণপাম : দ্য
ম্যান হু কুড নট রিমেইন সাইলেন্ট (নেবোজা স্লিজেপসেভিক, ক্রোয়েশিয়া)
স্পেশাল মেনশন
: ব্যাড ফর অ্যা মোমেন্ট (দানিয়েল সোয়ারিস, পর্তুগাল)
লা সিনেফ
প্রথম পুরস্কার
: সানফ্লাওয়ার্স ওয়্যার দ্য ফার্স্ট ওয়ানস টু নো (চিদানন্দ এস নায়েক, ফিল্ম অ্যান্ড
টেলিভিশন ইনস্টিটিউট অব ইন্ডিয়া-এফটিআইআই; ভারত)
দ্বিতীয় পুরস্কার
: আউট দ্য উইন্ডো থ্রো দ্য ওয়াল (আচিয়া সেগালোভিচ, কলাম্বিয়া ইউনিভার্সিটি; যুক্তরাষ্ট্র),
দ্য কেওস শি লেফট বিহাইন্ড (নিকোস কোলিয়োকোস, অ্যারিস্টোটল ইউনিভার্সিটি অব থেসালোনিকি;
গ্রিস)
তৃতীয় পুরস্কার : বানিহুড (মানসী মহেশ্বরী, ন্যাশনাল ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন স্কুল-এনএফটিএস; যুক্তরাজ্য)
সেরা ইমারসিভ
পুরস্কার
কালার্ড (তানিয়া দ্যু মনতেইন, স্টেফানে ফোনকিনোস, পিয়েরে-আঁলা জিরু; ফ্রান্স)
মুক্ত পুরস্কার
ফিপরেসি :
মূল প্রতিযোগিতা
: দ্য সিড অব দ্য সেক্রেড ফিগ (মোহাম্মদ রাসুলফ, ইরান)
আঁ সাঁর্তে রিগা
: দ্য স্টোরি অব সুলেমান (বরিস লোজকাইন, ফ্রান্স)
প্যারালাল শাখা (ডিরেক্টরস’ ফোর্টনাইট) : ডেজার্ট অব নামিবিয়া (ইয়োকো ইয়ামানাকা, জাপান)
ইকুমেনিকাল
প্রাইজ
জুরি প্রাইজ : দ্য সিড অব দ্য সেক্রেড ফিগ (মোহাম্মদ রাসুলফ, ইরান)
ক্রিটিকস উইক
গ্র্যান্ড প্রাইজ
: সায়মন অব দ্য মাউন্টেন (ফেদেরিকো লুইস, আর্জেন্টিনা)
ফ্রেঞ্চ টাচ জুরি
প্রাইজ : ব্লু সান প্যালেস (কনস্ট্যান্স সাং, যুক্তরাষ্ট্র)
রাইজিং স্টার
অ্যাওয়ার্ড (লুই রোদ্যুরের ফাউন্ডেশন) : রিকার্দো তেওদোরো (ছবি : বেবি, ব্রাজিল)
লাইৎজ সিনে ডিসকোভারি
প্রাইজ (স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র): মন্টসুরিস পার্ক (গিল সেলা, ফ্রান্স)
গ্যান ফাউন্ডেশন
অ্যাওয়ার্ড ফর ডিস্ট্রিবিউশন : জুলি কিপস কোয়ায়েট (লিওনার্দো ফন ডেইল, বেলজিয়াম)
এসএসিডি অ্যাওয়ার্ড
: লিওনার্দো ফন ডেইল ও রুথ বেকার্ট (ছবি : জুলি কিপস কোয়ায়েট, বেলজিয়াম)
ক্যানাল প্লাস অ্যাওয়ার্ড (স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র) : অ্যাবসেন্ট (জেম দেমিরার, তুরস্ক)
ডিরেক্টরস
ফোর্টনাইট
সেরা ইউরোপিয়ান
সিনেমা (ইউরোপা সিনেমাস লেবেল অ্যাওয়ার্ড) : দ্য আদার ওয়ে অ্যারাউন্ড (হোনাস ত্রুয়েবা)
সেরা ফরাসি ভাষার
সিনেমা (এসএসিডি অ্যাওয়ার্ড) : দিস লাইফ অব মাইন (সোফি ফিলিয়ের, ফ্রান্স)
অডিয়েন্স চয়েস
অ্যাওয়ার্ড : ইউনিভার্সেল ল্যাঙ্গুয়েজ (ম্যাথু র্যানকিন, কানাডা)
ক্যারোস দ’র : আন্ড্রেয়া আর্নল্ড
লই দ’র (সেরা
প্রামাণ্যচিত্র)
গোল্ডেন আই :
আরনেস্ট কোল : লস্ট অ্যান্ড ফাউন্ড, দ্য ব্রিঙ্ক অব ড্রিমস