বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১৬ মে ২০২৪ ২১:১২ পিএম
আপডেট : ১৬ মে ২০২৪ ২২:২৬ পিএম
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন বাস। প্রবা ফটো
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) বার্ষিক বাজেটের একটি বড় অংশ ব্যয় হয় পরিবহন খাতে। এই ব্যয়ের পরিমাণ বার্ষিক ১১ থেকে ১২ কোটি টাকা। কিন্তু তারপরও পরিবহন সেবা নিয়ে অভিযোগের শেষ নেই সাধারণ শিক্ষার্থীদের। তাদের ভাষ্য, কোটি কোটি টাকা ব্যয় করেও কাঙ্ক্ষিত পরিবহন সেবা পাচ্ছে না তারা।
জানা যায়, শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আনা-নেওয়ার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন পুলে ছোট-বড় মিলিয়ে মোট ৪৬টি বাস রয়েছে। এর মধ্যে নিয়মিত চলাচল করে ৪৩টি। বাকি তিনটি মেরামতের জন্য গ্যারেজে আছে। এর মধ্যে পরিবহন প্রশাসন দিনে ট্রিপ হিসেবে ভাড়া করে বাস চালায় ৩২টি।
ভাড়া বাসে কুষ্টিয়া রুটে ট্রিপপ্রতি ২ হাজার ১৫০ টাকা ও ঝিনাইদহে রুটে প্রতি ট্রিপে মালিকপক্ষকে দিতে হয় ২ হাজার ৬৫০ টাকা। ভাড়া বাসের ট্রিপপ্রতি ভাড়া ও ক্যাম্পাসের নিজস্ব বাসের তেল ও মেরামত খরচ বাবদ পরিবহন দপ্তরের বার্ষিক ব্যয় ১১ থেকে ১২ কোটি টাকা। ২০২২-২৩ অর্থবছরে পরিবহন দপ্তরের মোট ব্যয় হয়েছিল ১১ কোটি ৬২ লাখ ৯২ হাজার ৫৮৩ টাকা। আর চলতি অর্থবছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত ছয় মাসের পরিবহন দপ্তরের মোট ব্যয় ৫ কোটি ২৭ লাখ ৬৮ হাজার ২৩৩ টাকা।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, প্রতিবছর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীর সংখ্যা বাড়লেও সে তুলনায় বাড়ে না বাস। এ ছাড়া বিভিন্ন রুটে শিক্ষার্থীর তুলনায় বাসের ট্রিপ কম দেওয়া হয়। এতে গাদাগাদি করে যাতায়াত করতে হয় তাদের। এ ছাড়া ভাড়া করা বাসগুলোর চালক ও সহযোগীরা তাদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন।
এদিকে তুলনামূলক ভালো বাসগুলো শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের জন্য এবং ফিটনেসবিহীন ভাড়া বাসগুলো শিক্ষার্থীদের জন্য বরাদ্দ রয়েছে। ফলে ফিটনেসবিহীন বাস যেকোনো সময় দুর্ঘটনার শিকার হতে পারে বলে আশঙ্কা সাধারণ শিক্ষার্থীদের।
ক্যাম্পাস থেকে কুষ্টিয়া ও ঝিনাইদহ শহরের দূরত্ব যথাক্রমে ২৪ ও ২২ কিলোমিটার। যাতায়াতে সময় লাগে প্রায় এক ঘণ্টা।
সরেজমিনে দেখা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাড়া করা বাসগুলোর বসার আসন, জানালার গ্লাসসহ বিভিন্ন স্থান ভাঙাচোরা। নানা সমস্যায় জর্জরিত এসব ফিটনেসবিহীন বাসেই প্রতিদিন চলাচল করছেন কয়েক হাজার শিক্ষার্থী।
বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী মাজিদুল ইসলাম উজ্জ্বল বলেন, ‘নিজস্ব বাসে চলাচলে কোনো ঝামেলা হয় না। কিন্তু ভাড়ায় চালিত বাসগুলোর চালক ও তার সহকারীরা আমাদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন। পথে থামিয়ে বাইরের যাত্রী ওঠান। অনেক সময় শিক্ষার্থীদের রেখে চলে আসেন।‘
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন প্রশাসক অধ্যাপক ড. আনোয়ার হোসেন প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, ‘পরিবহন সেক্টরটা ঢেলে সাজানোর জন্য একটা বড় বাজেটের দরকার। সরকার যদি কখনও বড় বাজেট দেয় তাহলে সব সমস্যা মেটানো যাবে।’
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা ভাড়ায় চালিত বাসের বিরুদ্ধে যেকোনো অভিযোগ দিলে আমরা তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিই।’