× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

কুবিতে শিক্ষকদের সঙ্গে 'ঔদ্ধত্যপূর্ণ' আচরণের অভিযোগ অফিস সহকারীর বিরুদ্ধে

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক

প্রকাশ : ০৮ মে ২০২৪ ১৯:০০ পিএম

আপডেট : ০৮ মে ২০২৪ ১৯:৫১ পিএম

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস। ছবি : সংগৃহীত

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস। ছবি : সংগৃহীত

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের অফিস সহকারীর বিরুদ্ধে স্থানীয় ক্ষমতা দেখিয়ে একই বিভাগের দুই শিক্ষকের সঙ্গে 'ঔদ্ধত্যপূর্ণ' আচরণ করার অভিযোগ উঠেছে। এ ব্যাপারে বিভাগ থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার বরাবর একটি লিখিত অভিযোগও দেওয়া হয়েছে। তবে রেজিস্ট্রার বলছেন, অফিস সহকারী আবুল কাশেমও অভিযোগ দিয়েছে একই ঘটনায়। 

অভিযুক্ত অফিস সহকারী হলেন ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের অফিস সহকারী আবুল কাশেম। ভুক্তভোগী শিক্ষকরা হলেন একই বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. আল-আমীন ও ফাহাদ জিয়া।  

ভুক্তভোগী শিক্ষকদের দাবি, সাবেক বিভাগীয় প্রধান সুতপা চৌধুরী বিভাগের একাডেমিক মিটিংয়ের রেজল্যুশন ছাড়াই নামমাত্র একটি চিঠি রেজিস্ট্রার দপ্তরে পাঠিয়েছেন এবং আবুল কাশেমকে প্রশ্রয় দিচ্ছেন। 

ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের শিক্ষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ১৭ মার্চ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মদিন ও শিশু দিবস উপলক্ষে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্পের আয়োজন করা হয়। উক্ত মেডিকেল ক্যাম্পের আহ্বায়ক ছিলেন ফিন্যান্স অ্যন্ড ব্যাংকিং বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ফাহাদ জিয়া। তিনি ওই দিন এক ছাত্রকে বলেন, আবুল কাশেমকে ফোন দিয়ে কিছু জিনিস ঘটনাস্থলে নিয়ে যেতে বলো। কিন্তু সে সময় কাশেম সেখানে উপস্থিত ছিল না। পরবর্তীতে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের গোল চত্বরে সহকারী অধ্যাপক ফাহাদ জিয়ার সঙ্গে ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ করেন। 

আবুল কাশেম ফাহাদ জিয়ার উদ্দেশে বলেন, 'আপনার কিছুর দরকার হলে আপনি আমাকে ফোন দিবেন। ছাত্রকে দিয়ে ফোন দেওয়ান কেন? মোবাইলে টাকা না থাকলে আমাকে বলবেন, আমি রিচার্জ করে দিব।' 

এই আচরণের বিষয়ে বিভাগীয় প্রধান সুতপা চৌধুরীকে অবহিত করা হলে তিনি ১৮ মার্চ ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের জরুরি একাডেমিক মিটিংয়ে ফাহাদ জিয়াকে ডাকেন এবং ১৭ মার্চের ঘটনার ব্যাপারে জানতে চান। ঘটনার বর্ণনাকালে ফাহাদ জিয়া মিথ্যা বলছে বলে দাবি করেন আবুল কাশেম। এ সময় আবুল কাশেম সহকারী অধ্যাপক মো. আল-আমীনের উদ্দেশে বলেন, 'আমি লোকাল পোলা, আমার সঙ্গে লাগতে আসলে আমি কলাগাছের মতো শিকড় উপড়ে ফেলমু।'

১৮ মার্চে অনুষ্ঠিত একাডেমিক সভায় উপস্থিত ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন বলেন, 'আবুল কাশেম একাডেমিক সভায় উপস্থিত সকলের সামনেই এলাকার পাওয়ার দেখিয়ে আল-আমীন স্যারকে হুমকি দিয়েছে। এ ঘটনা প্রতিটা শিক্ষকের জন্যই আপমানজনক।'

একাডেমিক সভায় উপস্থিত ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের প্রভাষক আকিলা জাহান বলেন, 'আমাদের সকলের সামনেই আল-আমীন স্যারকে আবুল কাশেম হুমকি দিয়েছেন। এ ঘটনায় আমরা হতভম্ব হয়ে পড়ি। আমি চাই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে তাকে বিচারের আওতায় নিয়ে আসা হোক।'

এ ঘটনার ব্যাপারে জানতে চাইলে ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ফাহাদ জিয়া বলেন, '১৭ মার্চ কাশেম আমার সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করেন এবং কয়েক দিন ধরে তিনি সেটা করেই যাচ্ছেন। তারপর তাকে একাডেমিক সভায় এ ঘটনার ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি প্রথম থেকে আক্রমণাত্মক ভঙ্গিতে আমাদের সঙ্গে মিথ্যা কথা বলছিলেন। আল-আমীন স্যার তার কথার প্রতিবাদ করলে কাশেম স্থানীয় ক্ষমতা দেখায় এবং শিকড় উপড়ে ফেলার হুমকি দেয়।'

তিনি আরও বলেন, 'আমাদের সকল সিদ্ধান্ত হয় যে এই একাডেমিক সভার রেজল্যুশন রেজিস্ট্রার বরাবর পাঠানো হবে, কিন্ত তখনকার চেয়ারম্যান সুতপা ম্যাম তা না করে একটা ফরোয়ার্ডিং লেটার রেজিস্ট্রার বরাবর পাঠিয়ে দেন।'

এ ব্যাপারে ভুক্তভোগী ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. আল-আমীন বলেন, ‘এর আগেও সে আমার সঙ্গে ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ করেছে। এজন্য তাকে মৌখিকভাবে সতর্ক করাও হয়েছে। অফিস সহকারী আবুল কাশেমের এই ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ ও হুমকি প্রদান বিষয়ে সাময়িক বহিষ্কার ও প্রশাসনিক তদন্ত কমিটি করে বিচারের আওতায় আনতে হবে। অন্যথায় একজন শিক্ষক হিসেবে বিভাগে কার্যক্রম পরিচালনা করতে আমি খুবই অনিরাপদ এবং অপমানিতবোধ করছি।'

তিনি আরও বলেন, '১৮ মার্চ যখন মিটিংয়ে বিভাগের শিক্ষকগণ উপস্থিত ছিলেন, তখন সবাই এই সিদ্ধান্তে উপনীত হন যে, আমাকে যে কথাগুলো বলে আবুল কাশেম হুমকি দিয়েছিল সেটা উল্লেখ করে মিটিং রেজল্যুশন সবার কাছে স্বাক্ষরপূর্বক একটি ফরোয়ার্ডিং তৈরি করে রেজিস্ট্রার বরাবর পাঠাবে। কিন্তু দুঃখের বিষয় এই যে, সুতপা চৌধুরী ম্যাম মিটিংয়ে রেজল্যুশন তৈরি করেননি, তড়িঘড়ি করে একটি ফরোয়ার্ডিং রেডি করে আমাদের কাউকে অবহিত না করে রেজিস্ট্রার বরাবর পাঠিয়ে দেন। আমি মনে করি, সুতপা চৌধুরী ম্যাম আবুল কাশেমকে ব্যক্তিগতভাবে প্রশ্রয় দিয়েছেন ও প্যাট্রনাইজ করছেন, যা উনি আগে থেকেই করে থাকেন ব্যক্তিগত কিছু সুবিধা পাওয়ার জন্য।'

ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের অফিস সহকারী আবুল কাশেম বলেন, ‘আমি এমন কিছু বলিনি। সেদিন স্যারের সঙ্গে একটু ঝামেলা হয়েছে, সেটা পরে সমাধান হয়েছে।’ কী ঝামেলা হয়েছে, এ ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমার মা অসুস্থ, আমার মাথা ঠিক ছিল না।’

এই অভিযোগের ব্যাপারে সাবেক বিভাগীয় প্রধান সুতপা চৌধুরীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে প্রথমে তিনি ফোন ধরে কথা বুঝতেছেন না বলে ফোন কেটে দেন। পরে একাধিকবার চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। 

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিভাগের বর্তমান চেয়ারম্যান সহযোগী অধ্যাপক এমদাদুল হক বলেন, 'আমি চেয়ারম্যান হিসেবে নতুন জয়েন করেছি। একাডেমিক সভার রেজল্যুশন সবার কাছে স্বাক্ষরপূর্বক একটি ফরোয়ার্ডিং তৈরি করে রেজিস্ট্রার বরাবর পাঠিয়েছে। এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে তার বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।'

এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) আমিরুল হক চৌধুরী বলেন, 'অনেক আগে অভিযোগ দেওয়া হয়েছে এ ঘটনায়। আবুল কাশেমও সম্ভবত একটি অভিযোগ করেছে। বিশ্ববিদ্যালয় এখন বন্ধ আছে।'

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা