বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০২ মে ২০২৪ ১৬:২৮ পিএম
আপডেট : ০২ মে ২০২৪ ১৮:৩৪ পিএম
অভিযুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ হবিবুর রহমান হল ছাত্রলীগের সহসভাপতি মিনহাজুল ইসলাম ওরফে মিনহাজ
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) এক হল ছাত্রলীগ সভাপতিকে হত্যার হুমকি এবং তার কক্ষ দখল করার অভিযোগ উঠেছে ছাত্রলীগেরই দুই নেতার বিরুদ্ধে।
অভিযোগকারী ওই ছাত্রলীগ নেতার নাম মো. তাজবিউল হাসান অপূর্ব। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের শাাহ্ মখদুম হল ছাত্রলীগের সভাপতি এবং হলের ২০৭ নম্বর কক্ষে থাকেন। অপূর্ব বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ রুনুর অনুসারী। এ ছাড়া তিনি শাখা ছাত্রলীগের ২৬তম সম্মেলনে ‘পদবঞ্চিত’ নেতা আমিনুল ইসলাম লিংকনের পক্ষে সমর্থন দিয়েছিলেন।
অপূর্ব যে দুই ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছেন তারা হলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ হবিবুর রহমান হল ছাত্রলীগের সহসভাপতি মিনহাজুল ইসলাম ওরফে মিনহাজ ও শাহ্ মখদুম হল ছাত্রলীগের সহসম্পাদক মিঠু। তারা দুজনই বর্তমান বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান বাবুর অনুসারী। এদের মধ্যে মিনহাজ সভাপতির খুব ‘আস্থাভাজন’ হিসেবে ক্যাম্পাসে পরিচিত।
এ বিষয়ে তাজবিউল হাসান অপূর্ব বলেন, ‘আমার মাস্টার্স শেষ হয়নি এখনও। আমি একটা কাজে বাড়িতে এসেছি। আসার আগে রুমের বাকিদের মজা করে বলেছি ভালো থাকিস তোরা। কিন্তু আজকে মিনহাজ এবং মিঠু আমার কক্ষে গিয়ে আমার রুমমেটকে আজকেই হল ছাড়ার জন্য হুমকি দিতে থাকে। এটা জানার পর মিনহাজ ভাইকে কল দিয়ে বলি ‘আমি তো এখনও হলের সভাপতির দায়িত্বে আছি। তা ছাড়া আমার মাস্টার্সও শেষ হয়নি।’ কিন্তু সে আমায় গালাগাল করতে থাকে আর বলে ‘তুই আজকেই হল থেকে বের হবি।’
তিনি আরও বলেন, ‘এরপর আমি ছাত্রলীগের সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান বাবু ভাইকে কল দিয়ে বলি ‘ভাই আমার এখনও পরীক্ষা বাকি আছে। আর যখন চলে যাব কক্ষ তো আপনাকেই দিয়ে যাব।’ এটা শুনে বাবু ভাই বলে ‘আচ্ছা আমি দেখছি।’ তারপর মিনহাজ ভাইকে আবার কল দিয়ে বলি বাবু ভাইয়ের সঙ্গে কথা হয়েছে। তখন সে বলে ‘এখন সব হলের দায়িত্বে আমি। আমি যা বলব তাই হবে। তুই নেমে যাবি।’ তখন আমি বলি ‘আমি তো ভাই ভেসে আসিনি। এখনও এ হলের সভাপতি আমি।’ তখন সে গালাগাল করে বলে ‘তুই পরীক্ষা দিতে আয় তোর পা ভেঙে ফেলব। তোর লাশ খুঁজে পাওয়া যাবে না।’ এরপর আমি আবার বাবু ভাইকে কল দিলে তিনি বলেন ‘তুমি মিনহাজের সঙ্গে বেয়াদবি করেছ না কি? কল রাখো, তোমার সঙ্গে কথা বলতে ভালো লাগছে না আমার’ এ বলে কল কেটে দেয়।’
এসব বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বরাবর অভিযোগ দিয়েছেন কি না প্রশ্নের জবাবে অপূর্ব প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, ‘আমি এখন বাড়িতে আছি। ক্যাম্পাসে ফিরে অবস্থা বুঝে ব্যবস্থা নেব এবং এ বিষয়ে সংবাদ সম্মেলন করব।’
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে মিনহাজুল ইসলাম বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে এ সকল অভিযোগ মিথ্যা। আমি আজকে শাহ্ মখদুম হলে যাইনি। আমি সারা দিন বঙ্গবন্ধু হলে ছিলাম। আমায় একজন দাওয়াত দিয়েছিল, আমি সেখানে পড়াশোনা করতেছিলাম। তার সঙ্গে আমার আজকে সাংগঠনিক বিষয়ে কথা হয়েছে যেটা পার্সোনাল। সে কেন আমার নামে অভিযোগ করল জানি না। তার (অপূর্ব) বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করব।’
সার্বিক বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান বাবু প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, ‘ছাত্রলীগের একজন নাকি অপূর্বকে থ্রেট করেছে। এখানে মিনহাজ জড়িত নয়। মিনহাজের সঙ্গে অপূর্বর কথা হলে শিষ্টাচার মেনে কথা বলা উচিত ছিল, যেহেতু মিনহাজ বয়সে বড়। আমি একটু বাইরে আছি। উভয়পক্ষের সঙ্গে কথা হয়েছে। তাদের ডেকে বিষয়টি সমাধান করে দেব।’