× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

এবার উপাচার্যের পদত্যাগের এক দফা কুবি শিক্ষক সমিতির

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক

প্রকাশ : ২৮ এপ্রিল ২০২৪ ১৮:৫০ পিএম

আপডেট : ২৮ এপ্রিল ২০২৪ ২০:১৭ পিএম

ঘটনাস্থল প্রশাসনিক ভবনের সামনে শিক্ষক সমিতির নেতা অধ্যাপক ড. শামিমুল ইসলাম ও ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত পার্থ সরকার। প্রবা ফটো

ঘটনাস্থল প্রশাসনিক ভবনের সামনে শিক্ষক সমিতির নেতা অধ্যাপক ড. শামিমুল ইসলাম ও ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত পার্থ সরকার। প্রবা ফটো

সাত দফা দাবির প্রেক্ষিতে উপাচার্য, ট্রেজারার ও প্রক্টরকে অবাঞ্চিত ঘোষণার পর এবার উপাচার্যের অপসারণ চেয়ে এক দফা দাবি ঘোষণা করেছে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় (কুবি) শিক্ষক সমিতি।

রবিবার (২৮ এপ্রিল) দুপুরে প্রশাসনিক ভবনের সামনে এই দফা দাবি উত্থাপন করে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন শিক্ষক নেতারা।

এদিন কুবির উপাচার্য অধ্যাপক ড. এএফএম আবদুল মঈন শিক্ষক সমিতির তালা ঝুলিয়ে দেওয়া তার কার্যালয়ে প্রবেশ করতে গেলে শিক্ষক সমিতির নেতাদের বাধার মুখে পড়েন। জানা যায়, একপর্যায়ে শাখা ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতা উপাচার্যকে প্রবেশ করতে সাহায্য করতে গিয়ে শিক্ষক সমিতির নেতাদের সঙ্গে হাতাহাতিতে জড়ান তারা। শিক্ষকদের অভিযোগ, এসময় তাদের আক্রমণে শিক্ষক সমিতির কয়েকজন আহত হন।

ফলে সাত দফা দাবি নিয়ে আন্দোলনে থাকা শিক্ষকদের দাবি এখন রূপ নিয়েছে— উপাচার্যের পদত্যাগের এক দফা দাবিতে।

শিক্ষক সমিতির নেতা লোকপ্রশাসন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. জান্নাতুল ফেরদৌস প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, ‘একাধিকবার শিক্ষকদের ওপর ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা, সাবেক শিক্ষার্থীরা আক্রমণ করেছে। এইরকম ঘটনা কোনো বিশ্ববিদ্যালয়েই ঘটেনাই। আজকের এই ঘটনার পর আমরা উপাচার্যের পদত্যাগ চাই।

এদিকে এ নিয়ে পাল্টা অভিযোগ করেছে শিক্ষকদের আরেকটি পক্ষ। উপাচার্যপন্থি প্রক্টর দাবি করেছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাভাবিক কার্যক্রম অব্যাহত রাখতে গিয়ে উপাচার্য ও প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যরা শারীরিকভাবে লাঞ্ছনার শিকার হয়েছেন শিক্ষক সমিতির নেতাদের হাতে।

জানা যায়, গত ২৩ এপ্রিল শিক্ষক সমিতি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বরাবর একটি চিঠিতে তাদের সাতটি দাবি মেনে নেয়ার জন্য ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দেয়। বেঁধে দেওয়া সময়ের মধ্যে দাবি বাস্তবায়ন না হওয়ায় ২৫ তারিখ সকালে উপাচার্য, কোষাধ্যক্ষ ও প্রক্টরকে ক্যাম্পাসে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে তাদের কার্যালয়ে তালা দেন শিক্ষক সমিতির নেতারা। তবে গতকাল শনিবার গুচ্ছভুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা থাকায় শিক্ষক সমিতি তাদের কর্মসূচি শিথিল করে এবং তালা খুলে দেয়। অফিস সময়সূচি শেষে এদিন তারা আবারও তালা ঝুলিয়ে দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ওই তিন দপ্তরে।

প্রত্যক্ষদর্শীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, আজ শিক্ষক সমিতির নেতারা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক লাউঞ্জে অবস্থান করছিলেন। এসময় তাদের ঝুলিয়ে দেওয়া উপাচার্য, কোষাধ্যক্ষ ও প্রক্টরের কক্ষের তালা ভেঙে ফেলেন উপাচার্যপন্থি শিক্ষকরা। তবে তারা এতে বাধা দেননি।

দুপুর ১টার দিকে উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এফ এম আবদুল মঈন তার কার্যালয়ে যেতে প্রশাসনিক ভবনে আসলে শিক্ষক সমিতির নেতাদের বাধার মুখে পড়েন। এসময় তাদের সঙ্গে উপাচার্যের কিছুটা ধাক্কাধাক্কি হয়। একপর্যায়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয় শাখা ছাত্রলীগের আগামী কমিটিতে পদপ্রত্যাশী নেতাকর্মীরা। তারা উপাচার্যকে কার্যালয়ে প্রবেশ করাতে গেলে তাদের সঙ্গে শিক্ষক সমিতির নেতাদের হাতাহাতির ঘটনা ঘটে।

এতে অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. শামিমুল ইসলাম, লোকপ্রশাসন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. জান্নাতুল ফেরদৌসসহ আরও চার শিক্ষক আহত হন বলে জানা যায়।

এরপর উপাচার্যের পদত্যাগ চেয়ে এক দফা দাবি ঘোষণা করে শিক্ষক সমিতি।

ক্ষোভ প্রকাশ করে শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, ‘উপাচার্য আজকে যা করেছেন, তা সারা দেশের উপাচার্যমহলের জন্যই লজ্জাজনক।’

তিনি অভিযোগ করেন, ‘উনি (উপাচার্য) সন্ত্রাসী গোষ্ঠী দিয়ে পরিকল্পিতভাবে শিক্ষকদের ওপর হামলা করেছেন। আবার তিনি মিথ্যাচার করছেন আমরা তাকে প্রবেশে বাধা দিয়েছি। বরং তাদের এসব কার্যক্রমে আমাদের ছয়জন শিক্ষক আহতও হয়েছেন।’

উপাচার্যের অপসারণ চেয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা এতদিন তিনজনকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে আসছিলাম। শনিবার মেন গেটের সামনে আইকিউএসির পরিচালকও শিক্ষক সমিতির সভাপতিকে মারতে তেড়ে আসেন। উপাচার্য বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থসংক্রান্ত নানা কেলেঙ্কারি করে যাচ্ছেন ট্রেজারারকে সঙ্গী করে। আজকে তো (রবিবার) আমাদের গায়ে হাত দিয়েই তিনি প্রশাসনিক ভবনে প্রবেশ করেছেন। এতদিন সাত দফা দাবি ছিল। এখন আমাদের দাবি একটাই এই উপাচার্যকে আমরা আর চাই না।’

শিক্ষক সমিতির নেতাদের সঙ্গে হাতাহাতির বিষয়ে ছাত্রলীগ পদপ্রত্যাশী ইভিনিং এমবিএ- এর শিক্ষার্থী বিপ্লব দাস বলেন, ‘আজকে আমরা প্রশাসনিক ভবনে ব্যাংকে ইএমবিএ কোর্সের জন্য টাকা জমা দিতে এসেছিলাম। তখন দেখছিলাম উপাচার্য স্যার গেট দিয়ে ঢুকছেন। আমরা তখন শুধু স্যারের সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলাম। তখনই শিক্ষক সমিতির নেতাকর্মীরা স্যারকে ভিতরে ঢুকতে বাধা দেয়।’

শিক্ষক সমিতির নেতারাই এসময় তাদের ওপর আক্রমণ চালিয়েছেন অভিযোগ করে তিনি বলেন, ‘আমরা সঙ্গে থাকায় আমাদের উপরেও তারা আক্রমণ করেন। আমি নিজে হাতে ব্যথা পেয়েছি। তারপর যখন শিক্ষক সমিতির নেতাকর্মীদের জিজ্ঞেস করতে যাই- ‘‘স্যার আপনারা কেন আমাদের সঙ্গে এমন করলেন?’’ তখন তারা আবার আমাদের ওপরে আক্রমণ করেন। আমাদের একজন ব্যথা পেয়ে হাসপাতালে আছেন।’

এসব বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. কাজী ওমর সিদ্দিকী বলেন, ‘আমাদের দায়িত্ব হলো বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা। বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাভাবিক কার্যক্রম অব্যাহত রাখার জন্য আমরা তালা ভেঙ্গেছি। মাননীয় উপাচার্য স্যার যখন তার কার্যালয়ে যাওয়ার জন্য প্রশাসনিক ভবনে প্রবেশ করতে যান, তখন তারা (শিক্ষক সমিতির নেতা) বাধা দেয় এবং উপাচার্যকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয়। তখন আমাদের প্রক্টরিয়াল বডির যারা দ্বায়িত্ব পালন করছিলেন, তাদেরকেও শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করে তারা। আমি নিজেও আমার হাতে ব্যথা পেয়েছি।’

জানতে চাইলে উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এফ আবদুল মঈন বলেন, ‘আমাকে মহামান্য রাষ্ট্রপতি দায়িত্ব দিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়কে সঠিকভাবে পরিচালনা করার জন্য। অথচ এরা কারা? এখানে (প্রশাসনিক ভবন) প্রবেশ করার সময় শিক্ষক সমিতির তিনজন আমার গায়ে হাত তুলেছেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘একজন সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান, যাকে অন্যায় ছুটি দেই নাই বলে আজ পার্সোনালি আমাকে আক্রমণ করেছে। আরেকজন হলো মোর্শেদ রায়হান, যিনি নম্বর টেম্পারিংয়ের দায়ে অভিযুক্ত। আরেকজন হলো মার্কেটিংয়ের শিক্ষক মাহফুজ। এই ছেলে আমাকে ধাক্কা মেরে ফেলে দিতে চেয়েছিল। এসব কোনোভাবেই মেনে নেওয়ার মতো না। আমি পুরো জাতির কাছে জানাতে চাই, এই কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে তালা সংস্কৃতি বন্ধ করতে চাই।’

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা