২ শিক্ষার্থী নিহত, বাসে আগুন
চট্টগ্রাম অফিস ও রাঙ্গুনিয়া প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ১৯:২৩ পিএম
আপডেট : ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ২১:২৪ পিএম
চট্টগ্রামে আগামীকাল থেকে ৪৮ ঘণ্টা পরিবহন ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে বৃহত্তর চট্টগ্রাম গণপরিবহন মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদ। বাসের চাপায় চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) দুই শিক্ষার্থী নিহতের ঘটনায় বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীদের বাস পোড়ানোর প্রতিবাদে এ ধর্মঘটের ডাক এসেছে বলছেন পরিবহন নেতারা।
রবিবার সকাল ৬টা থেকে পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টা চট্টগ্রাম ছাড়াও কক্সবাজার, রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবান জেলার সব রুটে ধর্মঘট পালন করা হবে।
এসব তথ্য নিশ্চিত করে বৃহত্তর চট্টগ্রাম বাস মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদের আহ্বায়ক মঞ্জুর আলম চৌধুরী প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, চট্টগ্রামসহ পাঁচ জেলায় পরিবহন ধর্মঘট চলবে। তবে পণ্যবাহী গাড়ি ধর্মঘটের আওতামুক্ত থাকবে।
একই সঙ্গে এই পরিবহন নেতা জানান, সংগঠনের কয়েকটি দাবি রয়েছে। সেগুলো হলো— যখন তখন বাস মালিক-কর্মচারীদের গ্রেপ্তার না করা, তাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করা, চট্টগ্রাম-কাপ্তাই সড়কে দুর্ঘটনাকে কেন্দ্র করে বাস পোড়ানো ও বাস চলাচলে বাধাদানকারীদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া, সড়ক দুর্ঘটনায় প্রভাবশালী ব্যক্তিদের হস্তক্ষেপ বন্ধ এবং সড়ক-মহাসড়কে অনুমোদনহীন বাস চলাচল বন্ধ করা।
এদিকে দুই সহপাঠী নিহতের ঘটনায় শনিবারও মানববন্ধনের মধ্য দিয়ে আন্দোলন কর্মসূচি পালন করেছেন চুয়েট শিক্ষার্থীরা। তবে আজ (শনিবার) সড়ক অবরোধের সিদ্ধান্ত থাকলেও তা করেননি আন্দোলনকারীরা। তারা বলছেন, আপাতত আন্দোলন কর্মসূচিতে বিরতি থাকবে। একাডেমিক কার্যক্রম চালু হলে আবারও আন্দোলনে ফিরবেন তারা।
গত সোমবার চট্টগ্রাম-কাপ্তাই সড়কে বাসের ধাক্কায় মোটরসাইকেল আরোহী দুই চুয়েট শিক্ষার্থী নিহত হন। এ ঘটনার পর থেকেই কয়েক দফা দাবিতে চট্টগ্রাম-কাপ্তাই সড়ক অবরোধ করে আন্দোলন করে আসছেন শিক্ষার্থীরা। এ ঘটনায় বাসে আগুন দেয় বিক্ষুব্ধরা।
টানা তিন দিন কাপ্তাই সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থীরা। এরপর বৃহস্পতিবার একাডেমিক কাউন্সিলের এক জরুরি সভায় অনির্দিষ্টকালের জন্য ক্যাম্পাস বন্ধের সিদ্ধান্ত নেয় প্রশাসন। একই সঙ্গে শিক্ষার্থীদের সন্ধ্যার মধ্যে হল ছাড়ার নির্দেশ দেওয়া হয়।
হল ছাড়ার নির্দেশনা পেয়ে শিক্ষার্থীরা আরও ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। ক্যাম্পাসের স্বাধীনতা চত্বর এলাকায় ও মূলফটকে রাখা শাহ আমানত পরিবহনের দুটি বাসে আগুন ধরিয়ে দেন। তিন ঘণ্টা অবরুদ্ধ করে রাখা হয় উপাচার্যকে। এরপরই দুই পক্ষের সমঝোতা বৈঠকে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।
পরদিন শুক্রবার আবার সিন্ডিকেট বৈঠক হয়। সভা শেষে ৯ মে পর্যন্ত একাডেমিক কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করা হয়। একই সঙ্গে এদিন হলত্যাগের নির্দেশনা প্রত্যাহার করা হয়। এই সিদ্ধান্তের পর আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন শিক্ষার্থীরা। এর মধ্যে শনিবার কিছু শিক্ষার্থীকে হল ত্যাগ করতে দেখা গেছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে আন্দোলনে সক্রিয় শিক্ষার্থীদের একজন প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, ‘শনিবার মানববন্ধনের মধ্য দিয়ে আমরা আন্দোলনের কর্মসূচি পালন করেছি। যেহেতু এখন চুয়েটের একাডেমিক কার্যক্রম বন্ধ, সেহেতু কঠোর কর্মসূচি পালন না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি আমরা। ১২ মে ক্লাস শুরু হলে আবারও আমরা ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করব।’