চট্টগ্রাম অফিস
প্রকাশ : ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ২০:৪৬ পিএম
আপডেট : ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ২১:০৯ পিএম
বৃহস্পতিবার চুয়েটে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। ছবি : সংগৃহীত
চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) একাডেমিক কার্যক্রম ৯ মে পর্যন্ত বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কর্তৃপক্ষ। শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কাউন্সিলের জরুরি বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এদিকে বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) রাতে শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে আন্দোলন স্থগিতের ঘোষণার কথা বলা হলেও এখন সেই অবস্থান থেকে সড়ে এসেছেন তারা। জানিয়েছেন, শনিবার থেকে আবার আন্দোলন চলবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কাউন্সিলের জরুরি বৈঠক শেষে চুয়েটের সহকারী রেজিস্ট্রার রাশেদুল ইসলাম প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, ‘৯ মে পর্যন্ত সকল একাডেমিক কার্যক্রম বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে। ১২ মে থেকে আবার একাডেমিক কার্যক্রম শুরু হবে। তবে এই সময়ের মধ্যে শিক্ষার্থীদের হল ত্যাগ করার প্রয়োজন নেই। তারা হলে থাকতে পারবেন।’
এর আগে বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৮টা থেকে প্রায় ১১টা পর্যন্ত আন্দোলনকারী ২০ শিক্ষার্থীর সঙ্গে বৈঠক করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। বৈঠক শেষে আন্দোলন স্থগিতের ঘোষণা দেয় শিক্ষার্থীরা। এরপর কাপ্তাই সড়কে যান চলাচল শুরু হয়।
সেসময় শিক্ষার্থীরা জানান, চালককে গ্রেপ্তারের দাবি পূরণ হয়েছে। ক্ষতিপূরণের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তহবিল গঠন করবে। যেখানে বর্তমান ও সাবেক শিক্ষার্থী, সব শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারী সহযোগিতা করবেন। এ ছাড়া চট্টগ্রাম-কাপ্তাই সড়ক প্রশস্ত করার কাজ দ্রুত শুরু হবে। এ বিষয়ে দুই সপ্তাহের মধ্যে জেলা প্রশাসকের সঙ্গে বৈঠকের আয়োজন করা হবে। ফলে আন্দোলন স্থগিতের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
তবে শুক্রবার রাতে শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, শনিবার থেকে আন্দোলন চলবে। আন্দোলন স্থগিত করা হয়নি। পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে একটা ভুল বোঝাবুঝির সৃষ্টি হয়েছিল। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাবেন তারা।
আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী তড়িৎ ও ইলেকট্রনিকস ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র তালহা জুবায়ের প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, ‘আন্দোলন স্থগিত এমন কথা আমরা বলিনি। শনিবার থেকে যথারীতি আন্দোলন চলবে।’
শুক্রবার রাতে শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে আন্দোলন বন্ধ করার কথা জানানোর বিষয়ে বলা হলে তিনি বলেন, ‘সেখানে এমন কিছু বলা হয়নি। একটা পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে একটা ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে। আজকের দিনটা আমরা বিরতি দিয়েছি। কাল থেকে আন্দোলন চলবে এটাই শিক্ষার্থীদের সিদ্ধান্ত।’
দুই সহপাঠীর সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যুর পর তিন দিন ধরে কাপ্তাই সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করছিলেন শিক্ষার্থীরা। বৃহস্পতিবার একাডেমিক কাউন্সিলের জরুরি সভার মাধ্যমে অনির্দিষ্টকালের জন্য ক্যাম্পাস বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় প্রশাসন। শিক্ষার্থীদের সন্ধ্যার মধ্যে হল ছাড়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। বেলা দেড়টা থেকে বিকাল সাড়ে ৩টা পর্যন্ত একাডেমিক কাউন্সিলের ১৫১তম জরুরি সভা চলে। এরপর রেজিস্ট্রার শেখ মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে ক্যাম্পাস বন্ধের সিদ্ধান্ত জানানো হয়। হল ছাড়ার নির্দেশনা পেয়ে শিক্ষার্থীরা আরও ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। ক্যাম্পাসের স্বাধীনতা চত্বর এলাকায় থাকা ও মূল ফটকে রাখা শাহ আমানত পরিবহনের দুটি বাসে আগুন ধরিয়ে দেন। তিন ঘণ্টা অবরুদ্ধ করে রাখেন উপাচার্যকে। এর পরই দুই পক্ষের সমঝোতা বৈঠকে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।