সেন্ট যোসেফ স্কুলে বিজ্ঞান উৎসব
প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ২০:২০ পিএম
আপডেট : ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ২৩:৩৯ পিএম
সেন্ট যোসেফ স্কুলের অষ্টম শ্রেণির তিন শিক্ষার্থী ঋদ্ধ তানজিম, শৈশব রোদ্দুর শুদ্ধ, সৌম্যদীপ বিশ্বাস উদ্ভাবিত রোবট গাড়ি। প্রবা ফটো
প্রকৃতিকে বাঁচাবে গাছ, তাই সবার আগে গাছকে বাঁচাতে হবে। এ তীব্র তাপদাহে গাছই একমাত্র ভরসা। সে উদ্যোগেই তিন শিক্ষার্থী তৈরি করেছে অভিনব রোবট গাড়ি। অসুস্থ হয়ে যাওয়া গাছ চিহ্নিত করে খুব সহজেই দুর্ঘটনা কমাতে কাজ করবে এ রোবট। সেন্ট যোসেফ স্কুলের অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী ঋদ্ধ তানজিম, শৈশব রোদ্দুর শুদ্ধ, সৌম্যদীপ বিশ্বাস এ রোবট গাড়ি তৈরি করেছে।
বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) রাজধানীর সেন্ট যোসেফ হায়ার সেকেন্ডারি স্কুলে তিন দিনব্যাপী শুরু হওয়া ৬৭তম বিজ্ঞান উৎসবের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়। উদ্বোধনের পর মেলা দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত করা হয়। শনিবার (২৭ এপ্রিল) বিকাল পর্যন্ত চলবে এই মেলা। তাপদাহের কারণে বিকাল ৫টায় মেলা শেষ হওয়া কথা থাকলেও দুপুর ২টায় শেষ করা হয়।
৬৭তম বিজ্ঞান উৎসবে রাজধানী ঢাকার খ্যাতনামা ৬৭টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ৬ শতাধিক শিক্ষার্থী ৩ শতাধিক প্রজেক্ট নিয়ে অংশগ্রহণ করে। ইভেন্টের মধ্যে রয়েছে সায়েন্স প্রজেক্ট ডিসপ্লে, সায়েন্টিফিক আইডিয়া প্রেজেন্টেশন এবং রোবটিক এক্সিবিশন।
নিজেদের প্রজেক্ট নিয়ে উদ্ভাবক শিক্ষার্থী ঋদ্ধ তানজিম বলে, একটি গাছ কোনো রোগ হলে শিগগিরই মারা যাবে, আবার এমন রোগও আছে যার ফলে সেই গাছ থেকে অন্যান্য গাছে ছড়াবে অথবা ক্ষয় হয়ে গেলে ধসে পড়বে। গাছের এসব অসুস্থতা চিহ্নিত করে দুর্ঘটনা কমানো ও গাছকে বাঁচানোই আমাদের এই রোবট গাড়ি তৈরি করার উদ্দেশ্য। আর্টিফিসিয়াল ইন্টিলিজেন্স ব্যবহার করে অসুস্থ গাছ চিহ্নিত করতে হবে। এ রোবট গাড়ি পথ ধরে এগোনোর সময় গাছের ছবি তুলবে সেখান থেকে চিহ্নিত করা হবে অসুস্থ গাছগুলো। তারপর সেই তথ্য আমাদের সার্ভারে পাঠিয়ে দেবে। এ প্রজেক্টের আরেক শিক্ষার্থী শৈশব রোদ্দুর শুদ্ধ বলে, তীব্র তাপদাহে পরিবেশের ভারসাম্য বজায় রাখছে গাছ। উপকারী এ বন্ধুকে সুরক্ষা দিতেই এমন উদ্যোগ। আমরা গাছ থেকে অক্সিজেন পাই। সবার আগে পৃথিবীকে বাঁচাতে হবে। তাকে বাঁচিয়ে রাখার উৎস হলো গাছ। মূলত এ কারণেই তিনজন মিলে এ উদ্যোগ নিয়েছি।
মেলায় ঘুরে দেখা যায় বিজ্ঞান মেলায় সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অষ্টম থেকে দ্বাদশ পর্যায়ের শিক্ষার্থীরা নিজেদের উদ্ভাবন তুলে ধরছে। কেউ বানিয়েছে সৌর প্রজেক্ট, আবার কোনো দল বানিয়েছে রোবট গাড়ি।
অভিভাবকরাও সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন এ মেলা নিয়ে। তারা বলেন, সন্তানদের মেধা বিকাশে বিজ্ঞান উৎসব কার্যকরী ভূমিকা রাখবে। কথা হয় ফারহানা ইয়াসমিনের সঙ্গে। তিনি মেলায় একজন অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীর অভিভাবক। তিনি বলেন, এমন আয়োজন শিশুদের মেধা বিকাশে সহায়তা করবে। শিক্ষার্থীদের বাইরের দুনিয়ার সঙ্গে যুক্ত করতেও ভূমিকা রাখবে।
শিক্ষার্থীরা শুধু পাঠ্যবইয়ে সীমাবদ্ধ থাকবে না, বাইরের জগৎ সম্পর্কেও তারা সমানতালে জ্ঞান রাখবে, এই চিন্তা মাথায় রেখে সেন্ট যোসেফ হায়ার সেকেন্ডারি স্কুল প্রতি বছর এই আয়োজন করে বলে জানান প্রতিষ্ঠানটির অধ্যক্ষ ব্রাদার ড. লিও জেমস পেরেরা। তিনি বলেন, আমরা দেশ ও সমাজ নিয়ে চিন্তা করতে শেখাই শিক্ষার্থীদের। তাদের কাজে তার প্রতিফলন দেখি। তাদের যে উপলব্ধি সেটি আমাকে অনুপ্রেরণা দেয়।