× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

দুর্নীতি-অনিয়মের আখড়া আরবি বিশ্ববিদ্যালয়

সেলিম আহমেদ

প্রকাশ : ২১ এপ্রিল ২০২৪ ১১:৫৯ এএম

আপডেট : ২১ এপ্রিল ২০২৪ ১২:৪৮ পিএম

দুর্নীতি-অনিয়মের আখড়া আরবি বিশ্ববিদ্যালয়

দেশের মাদ্রাসা শিক্ষাব্যবস্থার আধুনিকায়ন ও যুগোপযোগী করতে ২০১৩ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়। কিন্তু আধুনিকায়ন ঘটানো দূরে থাক, যাত্রা শুরুর পর দুর্নীতি-অনিয়মের ভারে ডুবতে বসেছে এ প্রতিষ্ঠান। ইতোমধ্যে নিয়োগ জালিয়াতির দায়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ চূড়ান্তভাবে বরখাস্ত করেছে প্রতিষ্ঠানটির সহকারী রেজিস্ট্রার মো. জাকির হোসেন ও উপরেজিস্ট্রার আবু হানিফাকে। সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক আহসানউল্লাহর বিরুদ্ধেও নানা অনিয়ম অভিযোগ প্রমাণ হয়েছে ইউজিসির তদন্তে। প্রতিষ্ঠানটিতে সেশনজট ও ফলাফল প্রকাশে দীর্ঘসূত্রতার অভিযোগও দীর্ঘদিনের। 

সবশেষে নানা অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে বিশ্ববিদ্যালয়টির উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আব্দুর রশীদ ও উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আবুল কালাম আজাদের বিরুদ্ধে। তাদের বিরুদ্ধে অপকর্ম, চাঁদাবাজি, অর্থ আত্মসাৎসহ নানা অভিযোগ জমা পড়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন (ইউজিসি) ও দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক)। এসব অনিয়ম খতিয়ে দেখতে ইতোমধ্যে তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর তদারক প্রতিষ্ঠান ইউজিসি। কমিটি তদন্তকাজ শুরু করেছে বলে জানিয়েছেন ইউজিসি কর্মকর্তারা।

ভিসির বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ

অধ্যাপক ড. আব্দুর রশীদ বিশ্ববিদ্যালয়টির উপাচার্য হিসেবে যোগ দেন ২০২৩ সালের ৫ এপ্রিল। যোগ দিয়েই নানা অনিয়ম-দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতিতে জড়িয়ে পড়েন বলে অভিযোগ করেছেন প্রতিষ্ঠানটির বঙ্গবন্ধু পরিষদের কর্মী ইমরুল হাসান। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব বরাবর তার লিখিত অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ইউজিসিকে বিষয়টি তদন্তের নির্দেশনা দেয় মন্ত্রণালয়। এরপর ইউজিসির সদস্য অধ্যাপক ড. হাসিনা খানকে আহ্বায়ক ও পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ম্যানেজমেন্ট বিভাগের উপপরিচালক মোহাম্মদ ইউসুফ আলী খানকে সদস্য সচিব করে চার সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। 

অভিযোগ উঠেছে, উপাচার্য ইউজিসির নিয়োগ নিষেধাজ্ঞা আমলে না নিয়ে ৪০ লাখ টাকার বিনিময়ে বিশ্ববিদ্যালয়টির রেজিস্ট্রার হিসেবে নিয়োগ দেন পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের দুর্নীতির দায়ে অব্যাহতিপ্রাপ্ত উপরেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার) কামরুল ইসলামকে। 

বাসার কাজের মেয়ে রোজিনাকেও পরিচ্ছন্নতাকর্মী হিসেবে নিয়মবহির্ভূতভাবে নিয়োগ দেন আব্দুর রশীদ। ইউজিসির নিয়োগ নিষেধাজ্ঞা ও চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ নীতিমালাকে তোয়াক্কা না করে পিআরএল-এ যাওয়া একজন কর্মকর্তাকে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক হিসেবে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেন তিনি। পরিচালক (অর্থ ও হিসাব) পদেও নিয়োগ দেন আরেক কর্মকর্তাকে। সরকারি বিধি না মেনে উপাচার্য নিজের গাড়ি মেরামতের জন্য খরচ করেছেন ৬০ লাখ টাকা। অভিযোগ, বিভিন্ন কোম্পানির কাছ থেকে ফার্নিচার ও মালামাল ক্রয়ে তিনি কমিশন নিয়েছেন। 

আরও অভিযোগ উঠেছে, ভিসি হিসেবে যোগদানের পর তিনি তার দপ্তরসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ দপ্তর/অফিসসমূহে শুধু বরিশাল অঞ্চলের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পদায়ন করেছেন।

উপ-উপাচার্যের বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ

ইউজিসি ও শিক্ষা সচিবের কাছে ৯৭ পৃষ্ঠার অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ জমা পড়েছে বিশ্ববিদ্যালয়টির প্রোভিসি আবুল কালাম আজাদের বিরুদ্ধে। সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পক্ষে মো. আশ্রাফ উদ্দিন তামিম এ অভিযোগ জমা দিয়েছেন। দিয়েছেন নানা তথ্য-প্রমাণও। এই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ইউজিসির সদস্য ড. হাসিনা খানকে আহ্বায়ক করে ৪ সদস্যের তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। 

ইউজিসিতে দেওয়া অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, আবুল কালাম আজাদ মাদ্রাসায় পরিদর্শন, অধিভুক্তি, প্রাথমিক পাঠদান, নবায়ন, তদন্ত, নিয়োগ প্রতিনিধি হিসেবে অংশগ্রহণসহ নানা কাজে গেছেন। মাদ্রাসা অধিভুক্তি ও নবায়ন পরিদর্শনে গেলে তিনি প্রতিটি প্রতিষ্ঠান থেকে গড়ে ৫০ হাজার টাকা করে নিয়ে থাকেন। আর প্রাথমিক পাঠদানের অনুমোদনের জন্য গেলে নেন ১ লাখ থেকে ২ লাখ টাকা পর্যন্ত। মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল-ভাইস প্রিন্সিপাল নিয়োগে প্রতিনিধি হিসেবে গেলে তাকে দিতে হয় কমপক্ষে ১ লাখ টাকা। তিনি বিশ্ববিদ্যালয় থেকেও টিএ/ডিএ নেন। গত বছরের জুন মাসে শুধু টিএ/ডিএ খাতেই তিনি ২ লাখ ৫০ হাজার ১৬৮ টাকা নিয়েছেন।

অভিযোগে বলা হয়েছে, উপ-উপাচার্য নিয়ম অনুযায়ী প্রতি মাসে সর্বোচ্চ ২০০ লিটার পর্যন্ত জ্বালানি তেল ব্যবহার করতে পারেন। যদিও তিনি প্রায় প্রতি মাসেই ৩৫০ থেকে ৪০০ লিটার পর্যন্ত জ্বালানি তেল নেন। তার বাসা থেকে অফিসের দূরত্ব ১৫ কিলোমিটার হলেও তিনি দেখান ১৫০ কিলোমিটার। এ ব্যাপারে তার ড্রাইভারকে শোকজও করা হয়েছে। আবার তার জন্য আলাদা গাড়ি (ঢাকা মেট্রো-ঠ-১৩-৫৩১৬) বরাদ্দ থাকার পরও তিনি প্রায়ই বিশ্ববিদ্যালয়ের মাইক্রোবাস ব্যবহার করেন।

অভিযোগে আরও বলা হয়, বরিশালের বাঘিয়া আল আমিন কামিল মাদ্রাসায় প্রিন্সিপাল পদে নিয়োগে বড় দুর্নীতি করেছেন উপ-উপাচার্য। ঠাকুরগাঁওয়ের খোশবাজার ছালেহিয়া দারুচ্ছুন্নাত কামিল মাদ্রাসায় নিয়োগ প্রতিনিধি হিসেবে যাওয়ার কথা থাকলেও তিনি সংশ্লিষ্টদের কাগজপত্র নিয়ে ঢাকায় আসতে বলেন। সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে যোগসাজশে আর্থিক সুবিধার বিনিময়ে তিনি ওই মাদ্রাসার উপাধ্যক্ষ নিয়োগ দেন। পটুয়াখালীর দুমকী ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসার গভর্নিং বডি অনুমোদন নিয়ে মামলা থাকার পরও তিনি সেটির অনুমোদন দেন। রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলার পাইকান আকবরিয়া ফাজিল মাদ্রাসা ও ঝালকাঠি এন এস কামিল মাদ্রাসা পরিদর্শনে তিনি নিজেই নিজের চিঠি অনুমোদন করেন। এমনকি নিজেই নিজের টিএ/ডিএ বিলও অনুমোদন করেন।

অভিযোগ উঠেছে, অধ্যাপক আবুল কালাম আজাদ প্রায় দুই বছর আগে যোগদান করেছেন। যোগদানের পর ৭২০ দিনের মধ্যে ৪০০ দিন অফিস করেছেন। বাকি ৩২০ দিনে তিনি ৪০০-এর বেশি মাদ্রাসা পরিদর্শন, অধিভুক্তি, প্রাথমিক পাঠদান, নবায়ন, তদন্ত, নিয়োগ প্রতিনিধি হিসেবে অংশগ্রহণসহ নানা কাজে গেছেন। এমনকি বেশিরভাগ সময়ে শুক্র-শনিবারও তিনি বাদ দেননি।

মতানৈক্য ও বিরোধ দুজনের মধ্যে

নানা ইস্যুতে বিশ্ববিদ্যালয়টির ভিসি অধ্যাপক ড. মো. আব্দুর রশীদ ও প্রোভিসি অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আবুল কালাম আজাদের মতানৈক্য ও বিরোধ দীর্ঘদিনের। একাধিক কর্মকর্তার মতে, তাদের এ দ্বন্দ্ব-বিরোধ মূলত দুর্নীতি-অনিয়মকে ঘিরেই। অনুসন্ধানে জানা গেছে, উপ-উপাচার্য আবুল কালাম আজাদ বিশ্ববিদ্যালয়টির সাবেক উপাচার্য ড. আহসানউল্লাহর অনুসারী ও ঘনিষ্ঠজন। তার মেয়াদ শেষ হওয়ার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন উপাচার্য হিসেবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. আব্দুর রশীদকে তিনি মেনে নিতে পারেননি। 

আব্দুর রশীদ নিয়োগ পাওয়ার মাত্র দুই মাসের মাথায়ই তার বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম অভিযোগ জমা পড়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে। উপাচার্যের অনুসারী অনেক শিক্ষক-কর্মকর্তার ধারণা, এ অভিযোগ করিয়েছেন উপ-উপাচার্যের অনুসারীরা। 

এদিকে উপ-উপাচার্য আবুল কালাম আজাদের দাবি, উপাচার্য আব্দুর রশীদ যোগদানের পর থেকেই তাকে কোণঠাসা করে রেখেছেন। তাকে কোনো কাজ দিচ্ছেন না। পদাধিকারবলে কয়েকটি কমিটিতে থাকলেও তাকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে, উপেক্ষা করা হচ্ছে। কয়েক মাস আগে দায়িত্ব বণ্টন করে দেওয়ার জন্য উপাচার্যকে চিঠি দিয়েও কোনো ফল পাননি বলে দাবি করেছেন আবুল কালাম আজাদ। এছাড়া সম্প্রতি উপ-উপাচার্যের নানা অনিয়ম নিয়ে অভিযোগটি উপাচার্যের ইন্ধনেই হয়েছে বলে ধারণা করছেন উপ-উপাচার্যের অনুসারীরা। এ দুই শীর্ষ কর্মকর্তার অনিয়মের বিষয়টিও তদন্ত করছে ইউজিসি।

এর আগেও যত বিতর্ক

সিন্ডিকেটের অনুমোদন ছাড়াই একক ক্ষমতাবলে ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ে অস্থায়ীভাবে সহকারী রেজিস্ট্রার পদে জাকির হোসেনকে নিয়োগ দেন বিশ্ববিদ্যালয়টির সাবেক ও প্রথম উপাচার্য অধ্যাপক ড. আহসানউল্লাহ। অথচ বিশ্ববিদ্যালয়টির নিয়ম অনুযায়ী একক নিয়োগের কোনো ক্ষমতা নেই তার। তাছাড়া জাকির হোসেনের শিক্ষাগত যোগ্যতাও এই পদের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রে তার কোনো অভিজ্ঞতাও নেই। শিক্ষা কার্যক্রমের একটি পর্বেও রয়েছে তৃতীয় বিভাগ। তাই বেআইনিভাবে নিয়োগ দেওয়া জাকির হোসেনকে অব্যাহতি দেওয়ার সুপারিশ করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এসব অনিয়ম নিয়ে প্রতিদিনের বাংলাদেশে গত বছরের ২৮ আগস্ট ‘উপাচার্যের ইচ্ছাই যেখানে নিয়ম ছিল’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ হয়।

শুধু জাকির হোসেন নয়, নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করেই বিশ্ববিদ্যালয়টিতে উপরেজিস্ট্রার, সহকারী পরিচালক, সেকশন অফিসার, সহকারী প্রোগ্রামার, অডিট অফিসার, অফিস সহকারী, ডেটা এন্ট্রি অপারেটর, ফটোমেশিন অপারেটর, নিরাপত্তাপ্রহরীসহ একাধিক পদে নিয়োগ দিয়েছেন সাবেক উপাচার্য ড. আহসানউল্লাহ। সম্প্রতি ইউজিসির এক তদন্তে বিষয়গুলো প্রমাণ হয়েছে।

তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে সাবেক উপাচার্যের বিরুদ্ধে আর্থিক অনিয়ম, যৌন নিপীড়ন ও জামায়াতে ইসলামীর রুকন হিসেবে সাংগঠনিক তৎপরতা পরিচালনা ইত্যাদি অনুসন্ধানেরও সুপারিশ করা হয়েছে।

ইউজিসি বিশ্ববিদ্যালয়টিতে নিয়োগে নানা অনিয়ম অনুসন্ধান করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। এই কমিটির আহ্বায়ক ছিলেন ইউজিসির সদস্য অধ্যাপক ড. বিশ্বজিৎ চন্দ। এরপর গত ১৯ জুন অনিয়মের কারণে নিয়োগপ্রাপ্তদের অব্যাহতি ও অপসারণ এবং এ সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে শূন্য হওয়া পদগুলোতে নতুন নিয়োগের সুপারিশ করে বিশ্ববিদ্যালয়টিতে চিঠি পাঠিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এরপর সহকারী রেজিস্ট্রার মো. জাকির হোসেন এবং উপরেজিস্ট্রার আবু হানিফাকে চূড়ান্ত বরখাস্ত করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

যা বলছেন সংশ্লিষ্টরা 

বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক কর্মকর্তা জানান, শীর্ষ কর্মকর্তাদের এসব অনিয়ম-দুর্নীতি আর অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বের কারণে প্রতিষ্ঠানটি দাঁড়াতে পারছে না। তবে উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আব্দুর রশীদ বলেন, ‘এসব অভিযোগ মিথ্যা। ইউজিসি চিঠি দিয়েছে, আমরা সে চিঠির জবাব দিয়েছি। এখন তারা বিষয়টি খতিয়ে দেখে পরিষ্কার করবে। কেউ আইন লঙ্ঘন করলে তার শাস্তি হবে।’ রেজিস্ট্রারকে অবৈধ নিয়োগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘এটা উনাকে জিজ্ঞেস করেন। উনি আমাদের এখানে এখনও কর্মরত। এই অভিযোগের সত্যতার কোনো লেশ নেই। 

‘উপ-উপাচার্যের সঙ্গে আপনার কোনো বিরোধ আছে কি?’ Ñ এ প্রশ্নে উপাচার্য বলেন, ‘উপ-উপাচার্যের সঙ্গে আমার কোনো ঝামেলা নেই। তিনি তো আগে থেকেই ছিলেন, তার সঙ্গে ঝামেলা থাকবে কেন? প্রোভিসি অফিস থেকে কোনো মাদ্রাসা ভিজিটে গেলে একটা ট্যুর ডায়েরি লাগে। একটি নিয়মে চলতে হয়। এখন অফিস না মানলে, অফিস না করলে, অফিসের নিয়ম-শৃঙ্খলা না মানলে তো সমালোচনায় পড়তেই হবে।’ 

দুর্নীতি-অনিয়মের বিষয়ে উপ-উপাচার্য মুহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ নিজের বিরুদ্ধে আসা সব অভিযোগ ‘মিথ্যা’ দাবি করে বলেন, ‘আমাকে হয়রানি করার জন্য একটি পক্ষ উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে অভিযোগ জমা দিয়েছেন। আর মো. আশ্রাফ উদ্দিন তামিম নামের কোনো কর্মকর্তা আমাদের এখানে নেই। আমি ইউজিসিতে অভিযোগের বিষয়ে জবাব দিয়েছি।’

উপাচার্যের সঙ্গে দূরত্ব আছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘ভিসি যোগদানের পর থেকে কেন জানি আমাকে কোনো কাজ দিচ্ছেন না। তিনি এককভাবেই সব কাজ করছেন। প্রতিদিন অফিসে যাওয়া-আসা ছাড়া আমার কোনো কাজ নেই। এভাবে আমাকে রেখে একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থ খরচ করে কী লাভ?’

উভয় তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক ইউজিসির সদস্য অধ্যাপক ড. হাসিনা খান বলেন, ‘ভিসি ও প্রোভিসির অনিয়মের বিষয়ে তদন্ত চলমান। ইতোমধ্যে সবার জবাব নেওয়া হয়েছে। শিগগির বিষয়গুলো যাচাই করে প্রতিবেদন জমা দেওয়া হবে।’

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা