বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক, ঢাবি
প্রকাশ : ৩১ মার্চ ২০২৪ ১৩:৪৬ পিএম
আপডেট : ৩১ মার্চ ২০২৪ ১৫:৩৭ পিএম
শনিবার বুয়েট শহীদ মিনারের পাদদেশে ক্যাম্পাসে ছাত্র রাজনীতিবিরোধী শিক্ষার্থীরা অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেন। প্রবা ফটো
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) ক্যাম্পাসে গভীর রাতে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের প্রবেশের ঘটনার প্রতিবাদে আজ রবিবার তৃতীয় দিনের মতো বিক্ষোভ ও অবস্থান কর্মসূচির ডাক দিয়েছিল প্রতিষ্ঠানটির ছাত্র রাজনীতিবিরোধী আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। কিন্তু রবিবার (৩১ মার্চ) পূর্বঘোষিত কর্মসূচি স্থগিত করে সংবাদ সম্মেলনের ডাক দিয়েছেন তারা।
সংবাদ সম্মেলনটি কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অনুষ্ঠিত হবে বলে জানা গেছে। কিন্তু সেখানে রবিবার সকাল থেকে বুয়েট ক্যাম্পাসে ছাত্র রাজনীতি ফেরানোর দাবিতে সমাবেশ শুরু করেছে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ।
এ পরিস্থিতিতে রাজনীতিবিরোধী আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সংবাদ সম্মেলন ঠিক কখন শুরু হবে তা নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না। তবে আশা করা হচ্ছে ছাত্রলীগের সমাবেশ শেষ হলেই তা শুরু হবে। আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বেলা ৩-৪টার দিকে সংবাদ সম্মেলন শুরু হতে পারে।
এদিকে রবিবার সকাল ৭টা থেকে পূর্বঘোষিত বিক্ষোভ ও অবস্থান কর্মসূচি হঠাৎ কেন স্থগিত করা হয়েছে, সে বিষয়ে তাৎক্ষণিকভাবে কিছু জানা যায়নি। ধারণা করা হচ্ছে, ছাত্রলীগের সমাবেশের কারণে সাংঘর্ষিক পরিস্থিতি ঠেকাতে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আন্দোলনকারী কয়েকজন শিক্ষার্থীরা জানান, তারা ছাত্রলীগের সমাবেশ নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছেন।
এর আগে ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের প্রবেশ ও রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড চালানোর প্রতিবাদে শুক্রবার ও শনিবার দুদিন টানা বিক্ষোভ করেন বুয়েটের সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
শনিবার সকাল ৭টায় শুরু করে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত চলে অবস্থান ও বিক্ষোভ। এদিন দাবি বাস্তবায়নে ইতিবাচক সাড়া না পাওয়ায় কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন তারা। কিন্তু রবিবার ভোরে তা স্থগিত করে সংবাদ সম্মেলনের ডাক দেওয়া হয়।
২০১৯ সালের অক্টোবরে আবরার ফাহাদ হত্যার পর শিক্ষার্থীদের দাবির মুখে বুয়েট ক্যাম্পাসে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ করে কর্তৃপক্ষ। তবে গত বছর বুয়েট শিক্ষার্থীদের পদ দিয়ে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটি ঘোষণা করা হলে বিষয়টি নিয়ে ফের আলোচনা তৈরি হয়। তখন ক্যাম্পাসে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধের পুরোনো বিজ্ঞপ্তিটি আবার বিশ্ববিদ্যালয় ওয়েবসাইটে প্রচার করা হয়।
এ পরিস্থিতিতে বুধবার (২৭ মার্চ) রাত ১টার দিকে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা বুয়েট ক্যাম্পাসে প্রবেশ করেন বলে অভিযোগ শিক্ষার্থীদের। তাদের অভিযোগ, ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ থাকার পরও বুধবার মধ্যরাতে ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতাকর্মী বুয়েট ক্যাম্পাসে প্রবেশ করে রাজনৈতিক কার্যক্রম শুরু করেছে।
এ ঘটনায় ক্ষোভ জানিয়ে শনিবার বিকালে বুয়েট প্রশাসনের কাছে শিক্ষার্থীরা লিখিত আকারে ৬ দফা দাবি জানান।
লিখিত বক্তব্যে অভিযোগ করা হয়, বুধবার মধ্যরাতের পর ক্যাম্পাসে ‘বহিরাগতদের’ প্রবেশ ও রাজনৈতিক সমাগমের মূল সংগঠক হলেন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য পুরকৌশল বিভাগের ছাত্র ইমতিয়াজ হোসেন।
তাই আন্দোলনকারীদের দাবি, ইমতিয়াজকে বুয়েট থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার, হলের সিট বাতিলসহ তার সহযোগীদেরও বিভিন্ন মেয়াদে বহিষ্কার করতে হবে।
অন্যদিকে, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কেন ক্যাম্পাসে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড চালাতে দিচ্ছে তার ব্যাখ্যাও চেয়েছেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। পাশাপাশি ছাত্রকল্যাণ পরিচালকের (ডিএসডব্লিউ) পদত্যাগ দাবি করেছেন তারা। এসব দাবি আদায়ে শনি ও রবিবারের পরীক্ষাসহ সব অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন তারা।