ইউছুব ওসমান, জবি
প্রকাশ : ২৯ মার্চ ২০২৪ ১৭:০২ পিএম
আপডেট : ২৯ মার্চ ২০২৪ ১৭:০৮ পিএম
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়। ফাইল ফটো
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) একমাত্র আবাসিক হল বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব হল। প্রায় দেড় হাজার শিক্ষার্থীর এই হলে মেডিকেল সেন্টার আটকে আছে শুধুই সাইনবোর্ডে। নামমাত্র এই মেডিকেল সেন্টার উদ্বোধন করা হলেও চলে না চিকিৎসা কার্যক্রম। শুধু লোকদেখানো মেডিকেল সেন্টার করা হয়েছে বলে অভিযোগ হলের ছাত্রীদের।
জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি মাত্র ছাত্রী হলে থাকেন প্রায় দেড় হাজার ছাত্রী। সামান্য অসুস্থতা কিংবা প্রেশার মাপতেও ছাত্রীদের ভরসা নিকটস্থ সুমনা হাসপাতাল কিংবা ন্যাশনাল মেডিকেল। বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারটি সকাল ৯টা থেকে ৪টা পর্যন্ত খোলা থাকায় বিকাল কিংবা সন্ধ্যায় কোনো শিক্ষার্থী অসুস্থ হলে তাকে নিয়ে যেতে হয় আশপাশের হাসপাতালগুলোয়। এতে ভোগান্তি পোহাতে হয় শিক্ষার্থীদের। পাশাপাশি অতিরিক্ত ব্যয়ও হয় তাদের। জবির ছাত্রী হলে মেডিকেলের জন্য হলের তৃতীয় তলায় কক্ষ থাকলেও সেটি কখন খোলে তা জানেন না আবাসিক হলের ছাত্রীরা।
অনুসন্ধানে দেখা গেছে, সার্বক্ষণিক তালাবদ্ধ থাকে ছাত্রী হলের মেডিকেল সেন্টারটি। সাইনবোর্ড শুধু নামের সাক্ষী। নেই কোনো চিকিৎসক বা মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্ট।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগÑ এই মেডিকেল শুধু লোক দেখাতেই করা। এর অস্তিত্ব থাকলেও নেই ভূমিকা। নেই ওষুধপত্র কিংবা যন্ত্রপাতি।
শিক্ষার্থীদের দাবি, আবাসিক হলের মেডিকেল সেন্টারটি বন্ধ না রেখে দ্রুত কার্যক্রম চালু করা হোক। একই সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারটি সকাল ৯টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত খোলা রাখার দাবিও তাদের। যাতে সাধারণ শিক্ষার্থীরা যেকোনো সমস্যায় প্রাথমিক সেবা নিতে পারেন।
সুমাইয়া নামের এক ছাত্রী বলেন, আমাদের হলের শিক্ষার্থীরা এমনিতেই অনেক সুবিধা থেকে বঞ্চিত। মেডিকেল সেন্টারও ঠিক নেই। সবসময় বন্ধ থাকে। কোনো ডাক্তার নেই, কার্যক্রম নেই। প্রশাসন চাইলেই এটিকে দ্রুত চালু করতে পারে। সামান্য সমস্যায় আমাদের আশপাশের হাসপাতালে যেতে হচ্ছে। রাতে কেউ অসুস্থ হলে তাকে নিয়ে বাইরে যাওয়াও সমস্যা।
আয়েশা নামের আরেক আবাসিক ছাত্রী বলেন, রাতে কেউ গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে প্রাথমিক চিকিৎসাও দেওয়া যায় না। ১৪ তলা থেকে কোনো অসুস্থ সহপাঠীকে নামিয়ে হাসপাতালে ছুটতে হয়। এতে রোগী আরও অসুস্থ হয়ে পড়ে। মেডিকেল সেন্টারটি চালু থাকলে অন্তত প্রাথমিক চিকিৎসা পাওয়া যেত।
জানতে চাইলে ছাত্রী হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. দীপিকা রাণী সরকার বলেন, প্রশাসন থেকে নির্দেশনা দেওয়া আছে বিকাল ৪টা পর্যন্ত ক্যাম্পাসে মেডিকেল সেন্টার ব্যবহার করার জন্য। পরবর্তী সময়ে ছাত্রীরা চাইলে হলের মেডিকেল সেন্টার ব্যবহার করতে পারবে। দুজনকে মেডিকেল সেন্টারের চাবি দেওয়া আছে, কিন্তু তারা কেউই ডাক্তার নয়। তবে মেয়েরা চাইলে নিজেদের প্রয়োজনে স্যালাইনসহ বিভিন্ন ওষুধ তাদের কাছ থেকে চেয়ে নিতে পারবে। কয়েকদিনের মধ্যে হলে ভিসি ম্যাডামকে আমন্ত্রণ জানাব এবং ওনাকে আমাদের হলের যাবতীয় সমস্যা তুলে ধরব। মেডিকেল সেন্টারে ডাক্তার নিয়োগের ব্যাপারেও কথা হবে। আশা করি, উনি কিছুদিনের মধ্যে ডাক্তার নিয়োগ দেবেন।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. সাদেকা হালিম বলেন, আমি কিছুদিনের মধ্যেই হলে যাব, কী কী সমস্যা আছে তালিকা করে কাজ শুরু করব।