× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

ইউজিসির তদন্ত প্রতিবেদন অমান্য করেই পদোন্নতি পাচ্ছেন পাবিপ্রবির সেই শিক্ষক

পাবনা প্রতিবেদক

প্রকাশ : ২৭ মার্চ ২০২৪ ১১:৫২ এএম

আপডেট : ২৭ মার্চ ২০২৪ ১২:৩৩ পিএম

পাবিপ্রবির ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. মুশফিকুর রহমান। প্রবা ফটো

পাবিপ্রবির ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. মুশফিকুর রহমান। প্রবা ফটো

পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (পাবিপ্রবির) ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. মুশফিকুর রহমানকে অবৈধভাবে নিয়োগ ও একাধিকবার পদোন্নতি পাওয়ার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আহবান জানিয়ে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছিল বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের (ইউজিসি) তদন্ত কমিটি। দীর্ঘ ৪ বছরেও তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা না নিয়েই উল্টো তাকে গ্রেড টু অধ্যাপক পদে পদোন্নতি দিচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

বুধবার (২৭ মার্চ) কর্মঘণ্টার যেকোনো সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক হাফিজা খাতুনের সভাপতিত্বে বিশ্ববিদ্যালয়ের আপগ্রেডেশন বোর্ডের সভা হওয়ার কথা রয়েছে। সভায় অধ্যাপক ড. মো. মুশফিকুর রহমানকে পদোন্নতি দেওয়া হতে পারে বলে জানা গেছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক শিক্ষক ও কর্মকর্তা প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, ২০১৮ সালে ইউজিসির তৎকালীন সদস্য প্রফেসর ড. এম শাহ নাওয়াজ আলির নেতৃত্ব গঠিত তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি পাবিপ্রবি শিক্ষক ড. মুশফিকুর রহমানের নিয়োগ থেকে শুরু করে পদোন্নতি ও পদ-পদবি গ্রহণ সবকিছুতেই অনিয়মের প্রমাণ পায়। ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম অনুযায়ী পাবিপ্রবি কর্তৃপক্ষকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করে। কিন্তু সেই সুপারিশ দীর্ঘ ৪ বছরেও বাস্তবায়ন হয়নি। 

অভিযোগ ওঠেছে, ইউজিসির তদন্ত প্রতিবেদনের সে সুপারিশ অমান্য করে ক্ষমতার অপব্যবহার করে উপাচার্য হাফিজা খাতুন অদৃশ্য কারণে মুশফিকুর রহমানকে গ্রেড টু অধ্যাপক পদে পদোন্নতি দিচ্ছেন।

অধ্যাপক মুশফিকুর রহমানের বিরুদ্ধে ওঠা অনিয়মের অভিযোগ, তার লিখিত বক্তব্য, পাবিপ্রবি কর্তৃপক্ষের বক্তব্য এবং ইউজিসির তদন্ত প্রতিবেদন সূত্রে জানা যায়, নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে স্নাতক (সম্মান), স্নাতকোত্তরসহ সকল পরীক্ষায় প্রথম শ্রেণি চাওয়া হলেও এ শিক্ষক রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত একটি কলেজ থেকে স্নাতক (সম্মান) ও স্নাতকোত্তর উভয় পরীক্ষায় দ্বিতীয় শ্রেণিতে উত্তীর্ণ হয়েও তদবিরের জোরে কয়েকজন প্রথম শ্রেণি পাওয়া প্রার্থীকে পেছনে ফেলে সহকারী অধ্যাপক পদে চাকরি বাগিয়ে নেন।

তদন্ত কমিটির পর্যবেক্ষণে বলা হয়েছে, ‘মুশফিকুর রহমানের আবেদনপত্রটিই বাতিল হওয়ার কথা ছিল। ১ম শ্রেণি প্রাপ্ত যোগ্য প্রার্থী থাকা সত্ত্বেও অযোগ্য প্রার্থীকে নির্বাচনী বোর্ডে ইন্টারভিউয়ের জন্য ডাকা এবং নিয়োগ প্রদান সম্পূর্ণ অবৈধ।’ এরপর মুশফিকুর রহমান অদৃশ্য কারণে সহকারী অধ্যাপক থেকে সহযোগী অধ্যাপক এবং সহযোগী অধ্যাপক থেকে অধ্যাপক পদে পদোন্নতি পেয়েছেন পাবিপ্রবি পদোন্নতির নীতমালার শর্ত পূরণ না করেই। পাবিপ্রবি নীতিমালায় সহকারী অধ্যাপক পদে সক্রিয় চাকরি ছয় বছর থাকলে তবেই সহযোগী অধ্যাপক পদে পদোন্নতি পাওয়ার বিধান রয়েছে।

কিন্তু তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে ‘তার (মুশফিকুর রহমানের) এ বিশ্ববিদ্যালয়ে সক্রিয় চাকরিকাল ছিল ১ বছর ৭ মাস ২৪ দিন। তাই তার সহযোগী অধ্যাপক পদে আপগ্রেডেশন সম্পূর্ণ নিয়ম বহির্ভূত।’ 

অধ্যাপক পদে আপগ্রেডেশনের ক্ষেত্রেও তিনি নিয়মের ব্যত্যয় ঘটিয়েছেন বলে তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। এখানেই শেষ নয়, তারই বিভাগের শিক্ষক হাসিবুর রহমানের গবেষণাপত্র নিজ নামে প্রকাশ করার অভিযোগও ওঠে মুশফিকুর রহমানের বিরুদ্ধে। এ ছাড়া আরও একাধিক গবেষণাপত্রে চৌর্যবৃত্তির অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে বলে তার বিভাগের একাধিক শিক্ষক জানান।

পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনে সহযোগী অধ্যাপকের নিচে ডিন হওয়ার নিয়ম না থাকলেও সহকারী অধ্যাপক হয়েও তিনি ডিন হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। 

তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয় ‘ডিন পদে তার নিয়োগ বিশ্ববিদ্যালয় আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।’ এসব কারণে তদন্ত কমিটি মুশফিকুর রহমান সম্পর্কে উত্থাপিত বিভিন্ন অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তার বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করে। কিন্তু সে সুপারিশ অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ না করে অতীতের উপাচার্যদের অনিয়মের ধারাবাহিকতায় বর্তমান উপাচার্য হাফিজা খাতুনও ক্ষমতার অপব্যবহার করে মো. মুশফিকুর রহমানকে গ্রেড টু অধ্যাপক পদে পদোন্নতির সব আয়োজন সম্পন্ন করেছে।

এ বিষয়ে অধ্যাপক ড. মুশফিকুর রহমান প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, ‘এটা কোনো পদন্নোতি নয়। বরং অর্থনৈতিক লাভজনক একটা বিষয়, অন্য কোনো বিষয় নয়। ২০১৮ সালে ইউজিসির দেওয়া আমার বিরুদ্ধে সেই সব অভিযোগ নিষ্পত্তি হয়েছে বলেই আমি অধ্যাপক পদে পদোন্নত পেয়েছি। কেউ হয়তো ব্যক্তিগতভাবে অভিযোগ দিয়েছিলেন আমার বিরুদ্ধে সেই সব অভিযোগের নিষ্পত্তি হয়েছে।’

তদন্ত কমিটি তো আপনার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেছিল, কোনো ব্যবস্থা নিয়েছিল কি না- এমন প্রশ্নের সঠিক উত্তর দিতে পারেননি তিনি।

এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে বিশ্ববিদ্যালয়টির উপাচার্য অধ্যাপক হাফিজা খাতুন বলেন, ‘আপনার কাছে এ নিউজটা কে দিয়েছে? ইউজিসির তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন তো শুধু আমার কাছে থাকবে! কিন্তু আমাদের ফাইলে তো নাই সেটা (তদন্ত প্রতিবেদন), থাকলেও হয়তো ওটা উনার ওভারকাম হয়েছে। কেউ হয়তো আপনাকে রিকুয়েস্ট করেছে তাই শুধু তার ব্যাপারই (নিউজ) দেখছেন আপনারা! শুধু একজনের বিরুদ্ধে নিউজ করা কি আপনাদের সাংবাদিকতার মধ্যে পড়ে ভাই? সেটা আগে জানতে চাই। কিন্তু এখন আমার মিটিং চলছে এখন কথা বলতে পারব না।

পাবিপ্রবি অফিসার সমিতির সভাপতি হারুনার রশিদ ডন বলেন, ‘উপাচার্য হাফিজা খাতুনের হাতে পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় জিম্মি হয়ে পড়েছে। তিনি ক্ষমতার অপব্যবহার করে যা খুশি তাই করছেন। কোনো নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা করছে না। তার পছন্দের কিছু চাটুকার শিক্ষক-কর্মকর্তাকে যখন যেভাবে ইচ্ছা পদোন্নতি দিচ্ছেন।’

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা