× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

অবন্তিকার ‘আত্মহত্যা’

স্বাধীন ও শক্তিশালী ‘যৌন নিপীড়ন বিরোধী সেল’ গঠনের দাবি আন্দোলনকারীদের

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক

প্রকাশ : ২০ মার্চ ২০২৪ ১৫:১২ পিএম

আপডেট : ২০ মার্চ ২০২৪ ১৫:১৯ পিএম

বুধবার দুপুর দেড়টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাফেটেরিয়ায় সামনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন। প্রবা ফটো

বুধবার দুপুর দেড়টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাফেটেরিয়ায় সামনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন। প্রবা ফটো

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) আইন বিভাগের শিক্ষার্থী অবন্তিকার আত্মহত্যার ঘটনায় বিচারের দাবিতে চলমান আন্দোলনে বিশ্ববিদ্যালয়ে যৌন নিপীড়নসহ সব ধরণের নিপীড়ন রোধে স্বাধীন ও শক্তিশালী ‘যৌন নিপীড়ন বিরোধী সেল’ গঠনের দাবি জানিয়েছেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা।  

বুধবার (২০ মার্চ) দুপুর দেড়টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাফেটেরিয়ায় সামনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ‘নিপীড়নের বিরুদ্ধে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়’এর ব্যানারে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা এই দাবি জানান।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ‘নিপীড়নের বিরুদ্ধে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়’এর সংগঠক এবং ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন বিভাগের শিক্ষার্থী শাহ সাকিব সোবহান।

লিখিত বক্তব্যে সাকিব সোবহান বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে যে যৌন নিপীড়ন বিরোধী অভিযোগ সেল আছে সেখানে অভিযোগ জমা দিতে শিক্ষার্থীরা ভয় পায়। ২০১৯ সাল থেকে এপর্যন্ত মাত্র ৩টি অভিযোগ জমা পড়েছে। এই সেলের কার্যকারিতা ও স্বচ্ছতা কতটুকু? এবং জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কতটা শিক্ষার্থী বান্ধব যে, তারা নিপীড়নের শিকার হওয়া একজন শিক্ষার্থীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারে না বা করছে না সেটা প্রশ্নবিদ্ধ। একটি বিষয় আমাদের সামনে পরিস্কার যে, বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘যৌন নিপীড়ন বিরোধী সেল’ স্বাধীনভাবে এবং সর্বোচ্চ ক্ষমতা নিয়ে তার কার্যক্রম ও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিশ্চিত করতে ব্যর্থ হয়েছে। এছাড়া ডিপার্টমেন্টের শিক্ষক, প্রক্টরিয়াল বডি ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের দ্বারা শিক্ষার্থীরা যে ধরণের সামাজিক ও মানসিক নিপীড়নের শিকার হয়েছে তা মোটেই গ্রহণযোগ্য নয়।

লিখিত বক্তব্যে  ‘নিপীড়নের বিরুদ্ধে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়’ এর ব্যানারে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা একটি স্বাধীন, শিক্ষার্থী বান্ধব ও প্রাথমিক পর্যায়ে সর্বোচ্চ ক্ষমতার অধিকারী যৌন ও সব ধরনের নিপীড়ন বিরোধী সেল গঠন করে সক্রিয় ও কার্যকর করার দাবি জানান তারা।

যৌন নিপীড়ন বিরোধী সেলের গঠনপ্রণালীতে আন্দোলনকারীরা নয় দফা দাবি উত্থাপন করেন। দাবিগুলো হচ্ছে—

১. বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেটের বাইরে এই সেল স্বাধীনভাবে তার কার্যক্রম পরিচালনা করবে।

২. প্রক্টরিয়াল বডির প্রভাবমুক্ত সেল গঠন করতে হবে।

৩. এই সেল সরাসরি উপাচার্য মহোদয় কর্তৃক পরিচালিত হবে।

৪. সেলের কমিটিতে রাজনৈতিক ও অন্যান্য প্রভাবমুক্ত নিরপেক্ষ শিক্ষার্থী প্রতিনিধি থাকবে।

৫. এই সেলে বহিঃসদস্য হিসেবে কমপক্ষে একজন আইনজীবী ও একজন মানবাধিকার কর্মী নিয়োগ করতে হবে।

৬. এই সেল শিক্ষার্থীদের অভিযোগের ভিত্তিতে প্রাথমিক সত্যতা যাচাই করে, সিন্ডিকেট মিটিংয়ের অপেক্ষা না করে, দ্রুততম সময়ের মধ্যে অভিযুক্তকে সাময়িক বহিষ্কার করবে।

৭. এই নিপীড়ন বিরোধী সেল অভিযোগকারী বা ভিক্টিমের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বাধ্য থাকবে।

৮. যৌন নিপীড়নের পাশাপাশি সকল প্রকার নিপীড়নের বিচার নিশ্চিত করতে এই সেল বাধ্য থাকবে।

৯. প্রত্যেক মাসে কমপক্ষে একবার এই সেল সাধারণ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ‘মত বিনিময় ও জবাবদিহি’ সভার আয়োজন করবে।

সংবাদ সম্মেলনে আন্দোলনরারী শিক্ষার্থীরা আরও বলেন, গত ১৫ মার্চ আইন বিভাগের শিক্ষার্থী ফাইরুজ অবন্তিকা এবং ২০২২ সালের ৮ মে ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী অংকন বিশ্বাস নিপীড়নের শিকার হয়ে আত্মহত্যা করেছে। প্রশাসনকে আমরা বলতে চাই, আপনারা শিক্ষার্থীদেরকে আত্মহননের মতো সিদ্ধান্তের দিকে ঠেলে দিয়েছেন। এটা যে টেকনিক্যালি মার্ডার সেটা অবন্তিকা ও অংকন আমাদের চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়ে গেছেন। এর বাইরেও লোক চক্ষুর অন্তরালে প্রতিনিয়ত শিক্ষার্থীরা নিপীড়নের শিকার হয়ে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ছে।

বিশ্ববিদ্যালয় অঙ্গনে একটি গণতান্ত্রিক পরিবেশ, শিক্ষক-শিক্ষার্থীর মধ্যে যথার্থ মানবিক সম্পর্ক, শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়ার সংস্কার ছাড়া সামগ্রিকভাবে একটি বিকল্প সুস্থ পরিবেশ তৈরি করা সম্ভব নয় বলেও সংবাদ সম্মেলনে উল্লেখ করেন আন্দোলনকারীরা।

আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ৫ দফা দাবির মধ্যে প্রথম দুইটি দাবি দীন ইসলাম-আম্মানের অব্যহতি এবং তাদেরকে গ্রেপ্তারের দাবি আন্দোলনে নামার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে পূরণ হয়েছে জানিয়ে ৫ দফা দাবি সংশোধন করে নতুন করে আরও ৫ দফা দাবি উত্থাপন করেন তারা। সংবাদ সম্মেলন শেষে উপাচার্যের কাছে স্মারক লিপিতে এই ৫ দফা দাবি উত্থাপন করেন তারা।

১. ফাইরুজ সাদাফ অবন্তিকা হত্যার সমস্ত প্রমাণ আমলে নিয়ে দ্রুততম সময়ে বিচার বিভাগীয় তদন্তের মাধ্যমে দোষীদের বিশ্ববিদ্যালয় আইনে এবং রাষ্ট্রীয় আইনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।

২. দ্রুততম সময়ে সম্পূর্ণ প্রভাবমুক্ত যৌন নিপীড়ন বিরোধী সেল কার্যকর করতে হবে। শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভয়মুক্ত গণতান্ত্রিক পরিবেশ নির্মাণ করতে হবে।

৩. অংকন বিশ্বাসসহ পূর্বে দায়েরকৃত সব অভিযোগের দ্রুত তদন্ত ও সুষ্ঠু বিচার নিশ্চিত করতে

৪. পূর্বতন প্রক্টরিয়াল বডির বিরুদ্ধে গ্রহণযোগ্য তদন্ত করতে হবে এবং দোষীদের শাস্তির আওতায় আনতে হবে।

৫. ফাইরুজ অবন্তিকা এবং অংকন বিশ্বাসের স্মৃতিতে ক্যাম্পাসে দুটি স্থায়ী ফলক নির্মাণ করতে হবে।

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা