× ই-পেপার প্রচ্ছদ সর্বশেষ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি শিক্ষা ধর্ম ফিচার ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়

ধারাবাহিক বিচারহীনতায় বেড়েছে যৌন নিপীড়ন

ইউছুব ওসমান, জবি

প্রকাশ : ২০ মার্চ ২০২৪ ১০:৩৩ এএম

আপডেট : ২০ মার্চ ২০২৪ ১০:৫৪ এএম

গতকাল মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাস্কর্য চত্বরে আয়োজিত প্রতীকী সমাবেশে লাল কার্ড প্রদর্শন করেন শিক্ষার্থীরা। প্রবা ফটো

গতকাল মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাস্কর্য চত্বরে আয়োজিত প্রতীকী সমাবেশে লাল কার্ড প্রদর্শন করেন শিক্ষার্থীরা। প্রবা ফটো

সম্প্রতি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) আইন বিভাগের শিক্ষার্থী ফাইরুজ সাদাফ অবন্তিকা শিক্ষক ও সহপাঠীকে দায়ী করে ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে আত্মহত্যা করেন।

ফাইরুজ তার ফেসবুক পোস্টে উল্লেখ করেন, সহপাঠীদের হয়রানির বিরুদ্ধে প্রক্টর অফিসে অভিযোগ দিয়েও বিচার পাননি তিনি। অভিযোগ দিয়ে বিচার না পাওয়ার বিষয়টি এবারই প্রথম নয়। দীর্ঘদিন ধরেই এই বিচারহীনতার সংস্কৃতি এবং দীর্ঘসূত্রতার ফলে অনেক অভিযোগেরই সমাধান হচ্ছে না। অনেকে অভিযোগ দেওয়ার পর হয়রানি ও পেশিশক্তির মুখোমুখি হচ্ছেন। অভিযোগ উঠেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌন নিপীড়ন প্রতিরোধ কমিটির কার্যকারিতা নিয়েও। প্রক্টরিয়াল বডির ভূমিকা নিয়েও অভিযোগ আছে।

অবন্তিকার আত্মহত্যার ঘটনার পর সামনে আসতে শুরু করেছে অনেক অভিযোগ। ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন বিভাগের শিক্ষার্থী কাজী ফারজানা মীম নিজ বিভাগের শিক্ষক আবু সাহেদ ইমনের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে বিচার চাইলেও দীর্ঘদিন ধরেই তা তদন্ত কমিটিতেই আটকে আছে। ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর দাবি, বিভাগের শিক্ষক আবু সাহেদ ইমন তাকে দিনের পর দিন কুপ্রস্তাব দিয়ে আসছিলেন। তার কথায় সাড়া না দেওয়ায় তাকে একাধিকবার পরীক্ষায় ফেল করানো হয়। অভিযোগ দেওয়ার পর তাকে নানাভাবে হুমকি-ধমকি ও হয়রানি করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ তার। এ ঘটনায় ডিবি অফিসে অভিযোগও দিয়েছেন তিনি।

এদিকে গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপনের অভিযোগ ওঠে বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক এবিএম মানিকের বিরুদ্ধে। এ ঘটনা তদন্তে একটি কমিটিও গঠন করা হয়। পাশাপাশি শিক্ষক মানিককে বিভাগের সব কার্যক্রম থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। এ ঘটনার তদন্ত প্রতিবেদন গত ২৪ জানুয়ারি জমা দিয়েছে কমিটি। আগামী সিন্ডিকেট সভায় এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে বলে জানা গেছে।

গত বছরের নভেম্বর মাসে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিকল্পনা, উন্নয়ন ও ওয়ার্কস দপ্তরের উপপরিচালক হিমাদ্রী শেখর মণ্ডলের বিরুদ্ধে নারী সহকর্মীকে হেনস্থার অভিযোগ ওঠে। শারীরিকভাবে হেনস্থার চেষ্টাসহ হিমাদ্রী শেখর অভিযোগকারী মাসুদা আক্তারের সঙ্গে ফোনে অরুচিকর কথাবার্তা বলেন বলেও অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী নারী। এই ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করা হলেও এখনও তার রিপোর্ট জমা দেওয়া হয়নি।

শিক্ষার্থী ও সংশ্লিষ্টরা বলছেন, একটি বা দুটি নয়, এমন নিপীড়নের অসংখ্য ঘটনা ঘটছে। অনেক শিক্ষার্থী লোকলজ্জার ভয়ে কিংবা একাডেমিক ক্যারিয়ার বাঁচাতে নীরবে সহ্য করে যাচ্ছেন। কেউ কেউ প্রতিবাদ করলেও কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না। উল্টো হয়রানির মাত্রা বাড়ে। 

২০১৭ সালে জবির নাট্যকলা বিভাগের শিক্ষক আব্দুল হালিম প্রামাণিকের বিরুদ্ধে যৌন নিপীড়নের অভিযোগ আনেন দুই শিক্ষার্থী। এ ঘটনায় দুই দফা তদন্তের পর ২০১৮ সালে ৭৭তম সিন্ডিকেট সভায় তাকে তিরস্কার ও দুই বছরের জন্য পদোন্নতি পিছিয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু ভুক্তভোগী ছাত্রী এমন শাস্তিতে অসন্তুষ্ট জানিয়ে উপাচার্য বরাবর চিঠি দিলে ফের উচ্চতর তদন্ত কমিটি গঠন করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। ২০২০ সালের ৭ সেপ্টেম্বর ৮২তম সিন্ডিকেটে তাকে লঘু শাস্তি দেওয়া হয়।

ওই ঘটনায় ভুক্তভোগী এক শিক্ষার্থী বলেন, ঘটনা প্রমাণ হওয়ার পরও তাকে চাকরিতে বহাল রাখা হয়েছে লঘু দণ্ড দিয়ে। অভিযোগ দেওয়ার পর ৩ থেকে ৪টা কমিটির মুখোমুখি হতে হয়েছে আমাকে। কমিটির সদস্যরা অভিযুক্ত শিক্ষককে ক্ষমা করার অনুরোধও করেন আমাকে।

এ বিষয়ে নাট্যকলা বিভাগের শিক্ষার্থী ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সংগঠক কিশোর সাম্য বলেন, বিচার না হওয়ার যে অনুশীলন তাতে গা-ছাড়া দেওয়ার একটা সংস্কৃতি তৈরি হয়েছে। চাইলেই সব ভুক্তভোগী বিচার চাইতে পারেন না, কারণ বিচার চাইলে তার চরিত্র নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়। যৌন নিপীড়ন সেলে রিপোর্টের পর রিপোর্ট তৈরি হয়, সিন্ডিকেট মিটিংয়ের নামে দীর্ঘসূত্রতা হয়। আমাদের কিছু শক্তিশালী নিয়ম ও নীতি তৈরি করতে হবে। যাতে কেউ রাষ্ট্রীয় আইনকে এড়িয়ে যেতে না পারে।

এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌন হয়রানি প্রতিরোধ কমিটির কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন ভুক্তভোগী ও সাধারণ শিক্ষার্থীরা। ২০০৯ সালে হাইকোর্টের নির্দেশনার পর বিশ্ববিদ্যালয়ে যৌন হয়রানি প্রতিরোধ কমিটি গঠন করা হলেও সেখানে নেই শিক্ষার্থী প্রতিনিধি কিংবা বিশেষজ্ঞদের উপস্থিতি। স্পষ্ট কোনো নীতিমালা না থাকায় এর কার্যক্রমেও তৈরি হচ্ছে দীর্ঘসূত্রতা। এতে অনেক ভুক্তভোগীই বারবার তদন্ত কমিটির সম্মুখীন হয়ে ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। ফলে বিচারে যেমন সময় লাগে, তেমনই প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে বিচারও। তবে নীতিমালার বাইরে গিয়ে কাজ করার সুযোগ না থাকায় সদস্যদেরও কাজ করতে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। এতে হতাশ হয়ে ভুক্তভোগীরা এই সেলে অভিযোগ দিতেও অনীহা দেখাচ্ছেন। 

এদিকে নিপীড়নের ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডির ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, অভিযোগ দেওয়ার পর প্রক্টরিয়াল বডির তদন্ত প্রক্রিয়ায় বিভিন্ন শক্তির হস্তক্ষেপ, অভিযোগ গায়েব এবং লুকিয়ে রাখার ঘটনাও ঘটছে। সম্প্রতি অবন্তিকার ঘটনায় অভিযোগ পাওয়ার পরও ব্যবস্থা না নেওয়ায় প্রক্টরিয়াল বডির ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই প্রক্টর অফিসে অভিযোগ গেলে রাজনৈতিক কিংবা অন্য কোনো কারণে ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা হয়। তদন্ত প্রক্রিয়া শুরু হলে অনেক ক্ষেত্রেই বারবার ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করায় অভিযোগকারীকে আরও হয়রানির শিকার হতে হয়। প্রক্টরিয়াল বডির হস্তক্ষেপে উভয়পক্ষকে ডেকে মীমাংসার ঘটনা বেশি ঘটায় অনেক গুরুতর অভিযোগেরও লঘু শাস্তি হচ্ছে। 

সাইফ হাসান নামের এক শিক্ষার্থী বলেন, অনেক ক্ষেত্রে প্রক্টর অফিসেই গুরুতর অভিযোগের রফাদফা হয়ে যায়। অভিযুক্তের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয় না। প্রক্টরিয়াল বডির কোনো সদস্যের স্নেহভাজন হলে কিংবা অন্য অনেক কারণে অভিযুক্তরা ছাড় পেয়ে যান। ফলে নিপীড়নকারীরা আরও বেপরোয়া হয়ে ওঠে।

ছাত্র ইউনিয়নের জবি শাখার কোষাধ্যক্ষ শাহ সাকিব সোবাহান বলেন, যৌন নিপীড়ন সেলের নীতিমালাতেই ভুল আছে। দীর্ঘসূত্রতার সুযোগ রাখা হয়েছে তদন্তের নামে, সেখানে ভুক্তভোগীকে হয়রানি হতে হয়। এটা পরিবর্তন করতে হবে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও সাংস্কৃতিক কর্মী সিদরাতুল মুনতাহা বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে নারী শিক্ষার্থীরা শিক্ষক ও সহপাঠী উভয়ের দ্বারা হেনস্থার সম্মুখীন হন। কিন্তু নানা কারণে তারা তা প্রকাশ করেন না। কেউ বিচার চাওয়ার পরও হয়রানির স্বীকার হলে অন্য শিক্ষার্থীরা সাহস হারান।’

বাংলাদেশ মহিলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট সালমা আলী বলেন, ‘কমিটি কীভাবে আছে, কমিটির সক্রিয়তা কেমন, ঠিকভাবে কাজ করে কি না, তার ওপর অনেক কিছু নির্ভর করে। কারণ বিচারহীনতার একটা সংস্কৃতি গড়ে উঠছে আমাদের। রাজনৈতিক চাপ থাকে এসব বিচারের জন্য। কমিটিতে যারা থাকেন, তাদের কাজ করাও কঠিন হয়ে যায়। অভিযোগ তুলে নিতে ভুক্তভোগীর ওপরও চাপ তৈরি করা হয়। শিক্ষক অভিযুক্ত হলে সহকর্মীরা তাদের সাহায্য করেন। এছাড়া ভুক্তভোগীর চরিত্র নিয়েও প্রশ্ন তোলা হয়। সংবিধানের ১১ ধারা অনুযায়ী এগুলো অপরাধ। যারা দায়িত্বে থাকবেন, তাদের চাপগুলো মোকাবিলা করতে হবে।

বিচারহীনতা বা বিচারে দীর্ঘসূত্রতার বিষয়ে জানতে চাইলে লোকপ্রশাসন বিভাগের শিক্ষক লুবনা জেবিন বলেন, অনেক অভিযোগেরই কোনো শাস্তি হয় না। নিপীড়নের তদন্ত প্রক্রিয়াও বিভিন্ন আইনগত কারণে দীর্ঘ হয়। ফলে প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন পর্যায়ে বারবার যোগাযোগের মাধ্যমে আনুকূল্য লাভের সুযোগ থাকে অভিযুক্তের। নিপীড়নের ঘটনা পুরোনো হয়ে গেলে অনেক সহকর্মীই অপরাধটা ‘হালকা’ করে দেখতে শুরু করেন। এছাড়া অনেক শিক্ষকই তার অভিযুক্ত সহকর্মীর প্রতি ‘দুর্বলতা’ প্রকাশ করেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌন নিপীড়ন সেলের আহ্বায়ক প্রাণ রসায়ন ও অনুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক লাইসা আহমদ লিসা বলেন, চাইলেই এক কিংবা দুই দিনে তদন্ত করে রিপোর্ট দেওয়া সম্ভব হয় না। বিষয়গুলো স্পর্শকাতর। ফলে সুষ্ঠু তদন্তের জন্য আমাদের নানা পারিপার্শ্বিকতা মোকাবিলা করতে হয়। তারপরও আমরা ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশনের প্রভাষক আবু সাহেদ ইমনের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ তদন্ত করে রিপোর্ট দিয়েছি। আমাদের কাজ শুধু তদন্ত করে রিপোর্ট দেওয়া, কিন্তু আমাদের কাছে তেমন অভিযোগই আসে না।

বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক ড. আইনুল ইসলাম বলেন, নিপীড়নের অভিযোগগুলো অনেক স্পর্শকাতর। ফলে সময় নিয়ে বিশ্লেষণ করে তদন্ত করতে হয়। আবার অভিযুক্ত যদি অসন্তুষ্টি প্রকাশ করে আপিল করেন তখন নতুন করে কমিটি করে তদন্ত করতে হয়। এ কারণে দেরি হয়ে যায়। এতে অনেক অভিযোগকারীই দৌড়াদৌড়ির ভয়ে মাঝপথে অভিযোগ তুলে নেয় বা অনেকেই হয়তো মিটমাট করে নেয়। এসব কারণে দ্রুত আগানো যায় না। তবে আগে যে অভিযোগগুলো এসেছে, সেগুলো আগামী সিন্ডিকেটের আগেই রিপোর্ট প্রস্তুত করে সিন্ডিকেটে উত্থাপনের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। নতুন যে বিষয়গুলো সামনে এসেছে বা আসবে, সেগুলোর ক্ষেত্রেও প্রশাসন তৎপর ভূমিকা পালন করবে।

প্রশাসনকে লাল কার্ড দেখালেন শিক্ষার্থীরা 

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) আইন বিভাগের শিক্ষার্থী ফাইরুজ সাদাফ অবন্তিকার মৃত্যুর ঘটনার বিচার এবং যৌন নিপীড়নবিরোধী সেল কার্যকর করার দাবিতে প্রশাসনকে লাল কার্ড দেখিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাস্কর্য চত্বরে ‘নিপীড়নের বিরুদ্ধে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়’ ব্যানারে আয়োজিত প্রতীকী সমাবেশে প্রশাসনকে লাল কার্ড প্রদর্শন করেন শিক্ষার্থীরা।

গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী ইভান তাহসীব বলেন, জগন্নাথে যেকোনো নিপীড়নের বিরুদ্ধে আমরা অবস্থান নেব। এখানে যৌন নিপীড়নবিরোধী সেল থাকলেও তার কার্যক্রম নেই। এটি কার্যকর করতে হবে। এটিকে স্বাধীনভাবে কাজ করার সুযোগ দিতে হবে। সেখানে শিক্ষার্থী প্রতিনিধি যুক্ত করতে হবে। যৌন নিপীড়নের বিরুদ্ধে একটি সাংস্কৃতিক আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।

সুষ্ঠু তদন্তের আশ্বাস উপাচার্যের

‘প্রক্টরের কাছে অবন্তিকার দেওয়া অভিযোগটি কারা কারা অবহেলা করেছে, সেটার তদন্ত হবে বলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. সাদেকা হালিম। তিনি বলেন, আশা করি তদন্ত কমিটি এটা বের করে আনবে। কেন অবন্তিকার ওই চিঠি অবহেলা করা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের আয়োজনে অবন্তিকার স্মরণে শোকসভায় গণমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে উপাচার্য এসব কথা বলেন।

উপাচার্য সাদেকা হালিম বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ তদন্ত কমিটির রিপোর্ট সাত কার্যদিবসের মধ্যে দেওয়ার চেষ্টা করবে, তবে তদন্ত কমিটির রিপোর্ট যাতে সুষ্ঠু হয়, সেদিকে লক্ষ রাখা হবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রকল্যাণ প্রতিনিধির সংখ্যা বাড়াব, শুধু একজন পুরুষ পরিচালক থাকবে না, একজন নারীও থাকবে।’

দ্রুত প্রশাসনিক সিদ্ধান্তের বিষয়ে উপাচার্য বলেন, ‘সাময়িক বহিষ্কার না করলে এত দ্রুত বিচার করা যায় না। আমাদের যে তদন্ত কমিটি তা বিশ্ববিদ্যালয় আইন দ্বারা পরিচালিত হবে। একটি তদন্ত দ্রুত করা যায় না। আগের প্রক্টর টিমকেও আনা হবে, বস্তুনিষ্ঠ কাজ করতে হবে তদন্ত কমিটির। তবে অবন্তিকার বিষয়ে কাউকে রাজনৈতিক খেলা খেলতে দেওয়া হবে না। 

রিমান্ডে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছেন জবির সহকারী প্রক্টর

এদিকে সাদাফ অবন্তিকার আত্মহত্যার প্ররোচনার মামলায় এক দিনের রিমান্ড শেষে সহকারী প্রক্টর দ্বীন ইসলামকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

গতকাল মঙ্গলবার কুমিল্লার জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিমের ১ নম্বর আমলি আদালতে হাজির করা হয়। তখন বিচারক আবু বক্কর সিদ্দিক তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন বলে জানান কুমিল্লা কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি ফিরোজ হোসেন।

একই মামলার আসামি অবন্তিকার সহপাঠী রায়হান সিদ্দিকী আম্মানের দুই দিনের রিমান্ড চলছে। আজ বুধবার রিমান্ড শেষে তাকেও আদালতে হাজির করবে পুলিশ। 

কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফিরোজ হোসেন বলেন, ‘জিজ্ঞাসাবাদে দ্বীন ইসলাম কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছেন। আমরা সেগুলো যাচাই-বাছাই করে দেখছি। প্রয়োজনে আরও রিমান্ড চাওয়া হতে পারে।’

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : মোরছালীন বাবলা

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা