× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

উচ্চশিক্ষা

জিইডি কোর্সকে আবার বৈধতা দেবে ইউজিসি!

প্রবা প্রতিবেদক

প্রকাশ : ০৮ মার্চ ২০২৪ ১০:৫১ এএম

আপডেট : ০৮ মার্চ ২০২৪ ১১:১৫ এএম

জিইডি কোর্সকে আবার বৈধতা দেবে ইউজিসি!

চার মাস মেয়াদি নামসর্বস্ব জেনারেল এডুকেশন ডেভেলপমেন্ট (জিইডি) কোর্সকে একসময় দেওয়া হয়েছিল এইচএসসির সমমান। এসএসসি পাস করে এই কোর্সটি সম্পন্ন করলে এইচএসসি পরীক্ষা না দিয়েই বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের অনার্সে ভর্তি হওয়া যেত। কিন্তু নানা বিতর্কের কারণে গত বছর জিইডি কোর্স সম্পন্নকারীদের এইচএসসির সনদও দেওয়া হবে না বলে সিদ্ধান্ত নেয় ঢাকা শিক্ষা বোর্ড। তবে বিতর্কিত এই কোর্সকে ফের বৈধতা দিয়ে তোড়জোড় শুরু করেছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন (ইউজিসি)। এই কোর্সটি সম্পন্ন করলে অনার্সে ভর্তি হওয়া যাবে ফের এমন সিদ্ধান্ত দিতে যাচ্ছে ইউজিসি। তবে শিক্ষাবিদরা বলছেন, জিইডি পাস করা শিক্ষার্থীদের অনার্সে ভর্তির সুযোগ করে দেওয়া আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত। কারণ জিইডির সিলেবাসের কোনো বৈধতা নেই। আবার এইচএসসি কোর্স দুই বছর মেয়াদি আর জিইডি মাত্র চার মাসের। ফলে এটা নিয়ে নানা বিতর্ক রয়েছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, নানা আলোচনা-সমালোচনার কারণে ইউজিসি বিষয়টি অধিকতর যাচাই করে ২০১৮ সালের ৩১ জুলাই থেকে জিইডি ডিপ্লোমা ডিগ্রিধারী শিক্ষার্থীরা বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়সমূহে ভর্তিযোগ্য বিবেচিত হবেন না বলে নির্দেশ দেয়। তবে ঢাকা শিক্ষা বোর্ড ওই বছরের ১৩ ডিসেম্বর আরেক চিঠিতে জানায়, জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের মতামতের পরিপ্রেক্ষিতে জিইডি কোর্সের প্রতিটি বিষয়ে ন্যূনতম ১৪৫ নম্বর অর্জন করলে কোনো শিক্ষার্থী এইচএসসি সনদপ্রাপ্ত হবেন এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক বা সমপর্যায়ে ভর্তির ন্যূনতম যোগ্যতা অর্জন করবেন। এরপর ২০২৩ সালে এসে ফের এই আদেশটি বাতিল করে ঢাকা শিক্ষা বোর্ড। ওই আদেশে বলা হয়েছে, সমতুল্য সনদ সভার সিদ্ধান্ত মোতাবেক ঢাকা বোর্ড কর্তৃক ২০১৮ সালের ১৩ ডিসেম্বরের পত্রটি বাতিল করা হলো। এ ছাড়াও জিইডি কোর্স সম্পন্নকারী শিক্ষার্থীদের এইচএসসি সমমান সনদ দেওয়া হবে বলেও ওই সভায় সিদ্ধান্ত হয়েছে। 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ইউজিসির সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র বলেছে, ইউজিসির শীর্ষ বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা জিইডি কোর্স সম্পন্নকারীদের অনার্সে ভর্তির সুযোগ দেওয়ার পক্ষে। সম্প্রতি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় শাখা থেকে বিষয়টি অনুমোদনের জন্য নথি ওঠানো হয়েছে। তবে এই নথিতে গোপন রাখা হয়েছে ঢাকা বোর্ডের সর্বশেষ জিইডি কোর্স সম্পন্নকারী শিক্ষার্থীদের এইচএসসি সমমানের সনদ দেওয়া হবে না সংক্রান্ত চিঠিটি। আগের চিঠি দেখিয়ে ভর্তি অনুমতি দেওয়ার চিন্তা করছেন তারা। বর্তমানে নথিটি রয়েছে ইউসিজির চেয়ারম্যানের রুমে। এবার এই কোর্সটি ভিন্ন মোড়কে হাজির করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি। আবার অনেক বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ও এই কোর্স সম্পন্নকারীদের ভর্তি করা নিয়ে বেশ আগ্রহী। এতে শিক্ষার্থী বাড়বে বলে মনে করছেন অনেকেই। 

জিইডি কোর্স কী

মূলত ভিয়েতনামে যুদ্ধের কারণে সেখানকার হাজার হাজার মানুষ লেখাপড়া থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছিল। তাদের আবারও পড়ালেখার পথে ফিরিয়ে আনতে কোর্সটি চালু করা হয়। ওই যুদ্ধের সময়ই মূলত কোর্সটি আমেরিকায় চালু হয়। ২০১০ সালে ইউজিসির অনুমোদন নিয়ে বাংলাদেশে কোর্সটি চালু করে জিইডি সেন্টার। এই বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে ইন্টারনেটে আইএলটিএসের মতো পরীক্ষা দিয়ে জিইডি সার্টিফিকেট পাওয়া যেত।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, চার মাস মেয়াদি আন্তর্জাতিক মানের জেনারেল এডুকেশন ডেভেলপমেন্ট (জিইডি) কোর্সে চারটি বিষয় পড়ানো হয়Ñ ইংরেজি সাহিত্য, আমেরিকার ইতিহাস, সাধারণ বিজ্ঞান ও গণিত। এই কোর্সকে উচ্চ মাধ্যমিক সার্টিফিকেট পরীক্ষার সমমান হিসেবে গণ্য করা হতো। একজন শিক্ষার্থী এসএসসি পরীক্ষা দিয়ে এই কোর্স সম্পন্ন করে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে পারতেন। ডিগ্রিটি আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত হওয়ায় ইউরোপ, আমেরিকাসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এইচএসসি সমমান পাস হিসেবে গণ্য করা হয়ে থাকে। ফলে অনেক শিক্ষার্থী দেশের বেসরকারি কলেজগুলোতে ভর্তি হওয়ার পাশাপাশি বিদেশেও ভর্তি হয়েছেন।

সাধারণ এসএসসি পাসের পর এইচএসসি পরীক্ষা দিতে সময় লাগে দুই বছর। কিন্তু জিইডি পরীক্ষার মধ্যমে শর্টকাট পদ্ধতিতে এইচএসসি সমমানের সনদ পাওয়ায় সবার কাছে আকর্ষণীয় হয়ে ওঠে জিইডি পদ্ধতিটি। তবে নামমাত্র সিলেবাস আর সহজ প্রদ্ধতির কারণে শিক্ষার্থী-অভিভাবক আর শিক্ষাবিদরা এ নিয়ে আপত্তি তোলেন। এই আপত্তি আর নানা সমালোচনার মুখে তখন জিইডি কোর্স শেষ করে অনার্সে ভর্তির সিদ্ধান্তটি বাতিল করা হয়। 

সংশ্লিষ্টরা যা বলছেন

ইউজিসির সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক আব্দুল মান্নান বলেন, জিইডি কোনো বৈধ কারিকুলাম নয়। আর জিইডি পাসকে এইচএসসির সমমান ধরা হলেও তা নিয়ে অনেক বিতর্ক রয়েছে। এইচএসসি কোর্স দুই বছর মেয়াদি আর জিইডি মাত্র চার মাসের ডিপ্লোমা কোর্স। এ কারণে এটিকে সমমান বলা যাবে না। এখন যদি নতুন করে জিইডি পাস করলে অনার্সে ভর্তির সুযোগ দেওয়া হয় তা ঠিক হবে না। 

ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান ও আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটির সভাপতি তপন কুমার সরকার বলেন, এনসিটি ও ইউজিসির সুপারিশের পরিপ্রেক্ষিতে আমরা জিইডিকে এইচএসসির সমমান দিচ্ছি না। তাদের ওই ছয় মাসের কারিকুলাম আমাদের দুই বছরের কারিকুলামের সঙ্গে ম্যাচ করছে না। 

ইউজিসি ফের জিইডি উত্তীর্ণদের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ করে দিচ্ছে। আপনারা জানেন কি না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ইউজিসি আমাদের কোনো চিঠি দেয়নি। চিঠি দিলে যাচাই করে দেখব। 

ইউজিসির চেয়ারম্যান (চলতি দায়িত্বে) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আলমগীর বলেন, এটা একটা গুজব। আমরা কি জিইডির মালিক। আমরা ইউনিভার্সিটির আগের কোনো বিষয় নিয়ে চিন্তা করছি না। আমরা কাজ করি হায়ার এডুকেশন নিয়ে। জিইডি হায়ার এডুকেশনের কোনো পার্ট নয়।

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা