বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ২০:২৩ পিএম
আপডেট : ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ২০:৫৭ পিএম
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়। ফাইল ফটো
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) স্নাতক প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষায় দায়িত্ব পালন করলেও সম্মানী না নেওয়ার আল্টিমেটাম দিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। পাশাপাশি পরবর্তী ভর্তি পরীক্ষায় যুক্তিযুক্ত ও যথোপযুক্ত সম্মানী না দিলে ২০২৪-২৫ ও তৎপরবর্তী সেশনের ভর্তি পরীক্ষায় নিজেদের যাবতীয় কার্যক্রম থেকে বিরত রাখার আল্টিমেটামও দিয়েছেন তারা।
২২ ফেব্রুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির জরুরি সাধারণ সভায় এসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মুস্তাফিজুর রহমান ছিদ্দিকী ও সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক আবদুল হক স্বাক্ষরিত সমিতির জরুরি সাধারণ সভার কার্যবিবরণী থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
সাধারণ সভার সিদ্ধান্ত (ঙ) অনুযায়ী, শিক্ষক সমিতির কার্যনির্বাহী পরিষদের সঙ্গে ভর্তি পরীক্ষার আয়-ব্যয়ের হিসাব প্রণয়ন ও সম্মানী নির্ধারণসংক্রান্ত কমিটির যৌথ সভার মাধ্যমে ২৯ ফেব্রুয়ারির মধ্যে স্বচ্ছতার সঙ্গে ব্যয়ের সম্ভাব্য খাতওয়ারি হিসাব প্রস্তুত করে তা প্রকাশের দাবি জানানো হয়েছে।
বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন (ইউজিসি) ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় এতসংশ্লিষ্ট নীতিমালা অনুসরণ করে শিক্ষা ও গবেষণার উন্নয়নে নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ অর্থসংশ্লিষ্ট তহবিলসমূহে জমা দেওয়ার পর অবশিষ্ট অর্থ থেকে যৌক্তিক পরিমাণ অর্থ ভর্তি পরীক্ষায় দায়িত্ব পালনকারী শিক্ষকদের মধ্যে বণ্টন করার দাবি জানানো হয়েছে। দাবি পূরণ না হলে ভর্তিসংক্রান্ত আয়ের অর্থ থেকে শিক্ষকদের সম্মানী/পারিশ্রমিক না নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এ ছাড়া সাধারণ সভার সিদ্ধান্ত (ক)-এ বলা হয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার আয়কৃত বিপুল অর্থ উপাচার্য, উপউপাচার্য ও শিক্ষকরা মিলে ভাগবাটোয়ারা করেছেন বলে ১৮ ফেব্রুয়ারি জাতীয় সংসদে বক্তব্য দেন সংসদ সদস্য মুজিবুল হক চুন্নু। উল্লিখিত অনিয়মের সঙ্গে শিক্ষকরা কোনোভাবে যুক্ত না থাকা সত্ত্বেও শিক্ষকদের যুক্ত করে এমন বক্তব্য অত্যন্ত অনভিপ্রেত। যা নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করা সাধারণ শিক্ষকদের মান ক্ষুণ্ন করেছে।
ভর্তি পরীক্ষার অর্থ শিক্ষকরা ভাগাভাগি করে নিচ্ছেন মর্মে প্রকাশিত সংবাদ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি প্রত্যাখ্যান করেছে এবং সংসদ সদস্যের দেওয়া বক্তব্যের যে অংশে ‘শিক্ষকগণ কর্তৃক’ ভর্তি পরীক্ষার বিপুল অর্থ ভাগাভাগি করার বিষয়টি প্রকাশ পেয়েছে, তা সংসদের কার্যবিবরণী থেকে প্রত্যাহার করার অনুরোধ জানিয়ে সংসদের স্পিকারকে পত্র পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
কার্যবিবরণীতে আরও বলা হয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার আয়-ব্যয়ের যাবতীয় পরিকল্পনা ও হিসাব উপাচার্যের নেতৃত্বাধীন ১০ সদস্যের ‘ভর্তি কার্যক্রম পরিচালনা কমিটি’ নির্ধারণ ও চূড়ান্ত করে থাকে। যার কোনো বিবরণী বা হিসাব শিক্ষকগণ কিংবা শিক্ষক সমিতিকে প্রশাসনের পক্ষ থেকে কখনও দেওয়া হয় না।
পরবর্তী ভর্তি পরীক্ষা (২০২৪-২৫ ও তৎপরবর্তী সেশন) আয় ও ব্যয় খাত নির্ধারণ এবং দায়িত্ব পালনকারী ব্যক্তি ও শিক্ষকের সম্মানী নির্ধারণ সভায় সমিতির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে অন্তর্ভুক্ত করে স্বচ্ছ, যুক্তিযুক্ত ও যথোপযুক্ত সম্মানী নির্ধারণ করা না হলে শিক্ষকগণ নিজেদের ভর্তি পরীক্ষার যাবতীয় কার্যক্রম থেকে বিরত থাকবে বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক আবদুল হক বলেন, ‘এইবারের ভর্তি পরীক্ষায় আমরা সম্মানী নেব না, তবে ভর্তি পরীক্ষায় দায়িত্ব পালন করব। এই অল্প টাকা নিয়ে আমাদের কোটি কোটি টাকা ভাগাভাগির অংশীদার বানানো হচ্ছে। শিক্ষকরা এই দায়ভার নিতে চান না।’
এ বিষয়ে জানতে চবির ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার কেএমনুর আহমদ ও উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতারকে বারবার কল দিলেও তারা সাড়া দেননি।