× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

কী হচ্ছে জাপানিজ স্টাডিজ বিভাগে!

শোয়াইব আহমেদ

প্রকাশ : ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ১৬:০০ পিএম

আপডেট : ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ২১:৫৩ পিএম

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জাপানিজ স্টাডিজ বিভাগ। ছবি : সংগৃহীত

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জাপানিজ স্টাডিজ বিভাগ। ছবি : সংগৃহীত

অনিয়মিত (প্রফেশনাল) মাস্টার্স কোর্সে শিক্ষার্থী ভর্তি নিয়ে পত্রিকার শিরোনাম হয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জাপানিজ স্টাডিজ বিভাগ। এই বিভাগের চেয়ারম্যানের দাবি, আসন ফাঁকা থাকায় তারা দুই দফায় পরীক্ষা নিয়েছেন। এক্ষেত্রে নিয়মের কোনো ব্যত্যয় হয়নি। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বলছেন, কোনো বিভাগ চাইলেই একাধিকবার পরীক্ষা নিতে পারে না। বিধিবহির্ভূত ওই কাজের জন্য জাপানিজ স্টাডিজের কাছে লিখিত ব্যাখ্যা চাওয়া হয়েছে।

যা নিয়ে আলোচনা

চলতি মাসের ১০ তারিখে বিভাগের অনিয়মিত স্নাতকোত্তর কোর্স ‘প্রফেশনাল মাস্টার্স ইন জাপানিজ স্টাডিজে (পিএমজেএস) শিক্ষার্থী ভর্তি নিয়ে ‘জাপানিজ স্টাডিজে পরীক্ষা দেন ২৬ জন, পাস করেন ২৭ জন’ শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশ করে একটি জাতীয় দৈনিক। এ ঘটনাকে বিস্ময়কর উল্লেখ করা হয় প্রতিবেদনটিতে। এতে বলা হয়, ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেন ২৬ জন শিক্ষার্থী। কিন্তু রেজিস্ট্রার ভবনে ফলাফলের যে তালিকা পাঠানো হয়, তাতে দেখা যায় পাস করেছেন ২৭ জন। 

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে পিএমজেএসের ভর্তিপ্রক্রিয়া শেষ হওয়ার কথা ছিল। ৩ ফেব্রুয়ারি পিএমজেএসে ভর্তি-ইচ্ছুক শিক্ষার্থী পরিচয়ে প্রতিবেদক জাপানিজ স্টাডিজ বিভাগের জ্যেষ্ঠ প্রশাসনিক কর্মকর্তা শেখ সাইদুর রহমানের কাছে জানতে চান এ বছর আর ভর্তির সুযোগ আছে কি না। জবাবে তিনি বলেন, ‘কালকে অফিসে আসেন। চেয়ারম্যান স্যারের সাথে কথা বলে দেখি। কয়েকটা সিট খালি আছে।’ 

এরপর ৬ ফেব্রুয়ারি পত্রিকার প্রতিবেদক পরিচয় দিয়ে আবার যোগাযোগ করা হলে সাইদুর রহমান বলেন, ‘ভর্তিপ্রক্রিয়া সমাপ্ত হয়ে গেছে।’ এরপর প্রশ্ন ছিল, লিখিত পরীক্ষায় অংশ নিল ২৬ জন; মৌখিক পরীক্ষায় কীভাবে ২৭ জন অংশ নেয় বা পাস করে? জবাবে তিনি বলেন, ভর্তিপ্রক্রিয়া যখন চলছিল, তখন অসুস্থ থাকায় বিষয়টি তার ভালোভাবে জানা নেই।

কিন্তু ২৬ জন লিখিত পরীক্ষা দিলেও ২৭ জন কীভাবে পাস করল জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিষয়টি তিনি ঠিক মনে করতে পারছেন না।

একই প্রশ্নের জবাবে জাপানিজ স্টাডিজ বিভাগের চেয়ারম্যান এবং ভর্তি কমিটির প্রধান মো. জাহাঙ্গীর আলম ৬ ফেব্রুয়ারি প্রতিবেদককে বলেন, বিষয়টি তিনি ঠিক মনে করতে পারছেন না।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, পরদিন ৭ ফেব্রুয়ারি সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ ভবনে তার কার্যালয়ে গিয়ে প্রতিবেদক বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে বিভাগীয় চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম দাবি করেন, ২২ ডিসেম্বর বেলা আড়াইটায় লিখিত পরীক্ষার ফল প্রকাশের পর মৌখিক পরীক্ষা নেন তারা। মিঠু চন্দ্র শীল (পরীক্ষার্থী) অসুস্থ ছিলেন, তাই তার পরীক্ষা ২২ ডিসেম্বর মৌখিক পরীক্ষার পরপর নেওয়া হয়। এ ছাড়া আরও যারা অসুস্থ ছিলেন, তাদের পরীক্ষা এক সপ্তাহ পর নেওয়া হয়। পরীক্ষা কমিটির সিদ্ধান্তেই এটি করা হয়েছে। 

জাপানিজ স্টাডিজ বিভাগের চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম

তবে সংশ্লিষ্ট অপর একটি সূত্র জানায়, ভর্তিতে অনিয়ম নিয়ে প্রতিবেদক খোঁজখবর শুরু করার পর পরীক্ষা ছাড়া ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীদের সম্প্রতি পরীক্ষা নিয়ে কাগজপত্রে আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করার চেষ্টা করা হয়। 

বহুল প্রকাশিত পত্রিকাটির এই প্রতিবেদন প্রকাশের পাঁচ দিন পর গত বৃহস্পতিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) বিভাগ থেকে ওই সংবাদের প্রতিবাদ জানানোর কথা বলা হয়েছে। বিভাগের চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম স্বাক্ষরিত প্রতিবাদলিপিতে বলা হয়, ‘জাপানিজ স্টাডিজ বিভাগের প্রফেশনাল মাস্টার্স প্রোগ্রামের আসন সংখ্যা ৪০টি। বিভাগ গত ২২ ডিসেম্বর ২৭ জনের (একজন অসুস্থ থাকায় সেই দিনই বিকালে পরীক্ষা গ্রহণ করা হয়) পরীক্ষা গ্রহণ করে এবং এই পরীক্ষায় সবাই উত্তীর্ণ হন। ৪০টি আসন পূর্ণ না হওয়ায় বিভাগীয় প্রোগ্রাম পরিচালনা কমিটি বিভাগে ভর্তি হতে আগ্রহীদের পুনরায় পরীক্ষা গ্রহণ করে। এখানে উল্লেখ্য যে, বিভাগে দুই দফায় সর্বমোট ২৯ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন, যার মধ্যে ২১ জন বিভাগে ভর্তি হন। কেউই ভর্তি পরীক্ষা ছাড়া ভর্তি হননি। এই প্রক্রিয়ায় জাপানিজ স্টাডিজ বিভাগ মনে করে বিশ্ববিদ্যালয়ের নীতিমালার কোনো ব্যত্যয় ঘটেনি এবং এখানে কোনো অস্পষ্টতাও নেই।’

যা বলছে প্রশাসন

বিশ্ববিদ্যালয়ের নীতিমালার নিয়ম মেনেই ভর্তি পরীক্ষা নেওয়া হয়েছে বলে পরীক্ষা কমিটির প্রধান ও জাপানিজ স্টাডিজ বিভাগের চেয়ারম্যান দাবি করলেও বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল বলছেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মে এটা নেই। কোনো বিভাগ চাইলেই একাধিকবার পরীক্ষা নিতে পারে না। এ বিষয়ে বিভাগের ব্যাখ্যা চেয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।’ 

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল

তিনি প্রতিদিনের বাংলাদেশকে গত রবিবার সকালে বলেন, ‘জাপানিজ স্টাডিজ বিভাগের ঘটনায় আমরা ব্যাখ্যা চেয়েছি। তাদের লিখিতভাবে এ বিষয়ে জানাতে বলা হয়েছে।’ 

তিনি আরও বলেন, ‘এরপরে আর কোনো বিভাগ যাতে দ্বিতীয়বার পরীক্ষা না নেয় সেজন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারকে একটি প্রজ্ঞাপন প্রদানের জন্য বলা হয়েছে।’ 

বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার প্রবীর কুমার সরকার প্রতিদিনের বাংলাদেশকে জানিয়েছেন, গত কয়েক দিন আগে জাপানিজ স্টাডিজ বিভাগের প্রফেশনাল মাস্টার্স পরীক্ষার বিষয়টি সামনে এলে উপাচার্য এ বিষয়ে একটি স্পষ্ট বিজ্ঞপ্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভাগগুলোতে প্রেরণের আদেশ দেন। সে অনুযায়ী আমরা এ বিষয়ে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছি। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, অনিয়মিত মাস্টার্সে ভর্তির ক্ষেত্রে দ্বিতীয়বার কোনো ভর্তি পরীক্ষা গ্রহণযোগ্য নয়। তবে যদি বিশেষ প্রয়োজন হয় দ্বিতীয়বার পরীক্ষা নেওয়ার সেক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে অনুমতি চাইতে পারবে।’

গত বছরের জুলাইয়ে চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব নেন ড. জাহাঙ্গীর আলম। আর নতুন বিধি অনুযায়ী এ বছর অনিয়মিত স্নাতকোত্তর কোর্স পিএমজেএসে প্রথম ব্যাচে শিক্ষার্থী ভর্তি করেছে জাপানিজ স্টাডিজ বিভাগ।

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা