× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় চলছে প্রভাষক দিয়ে

সেলিম আহমেদ

প্রকাশ : ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ১০:০৯ এএম

প্রবা ফটো

প্রবা ফটো

দেশের নামকরা বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর একটি ‘ইনডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটি’। অথচ বিশ্ববিদ্যালয়টি চলছে খণ্ডকালীন শিক্ষকদের দিয়ে। বিশ্ববিদ্যালয়টিতে অধ্যাপক পদে স্থায়ী আছেন ২৭ জন, অস্থায়ী ৮২ জন; সহযোগী অধ্যাপক স্থায়ী ৩২ জন, অস্থায়ী ৪৬ জন; সহকারী অধ্যাপক পদে স্থায়ী ৩২ জন, অস্থায়ী ৫৪ জন আর প্রভাষকদের মধ্যে স্থায়ী ১২৮ জন, অস্থায়ী ১৩৪ জন। বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষক-শিক্ষার্থীর অনুপাত যদিও ১.১৮ জন। একই অবস্থা ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়েও। এই বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপকদের মধ্যে স্থায়ী আছেন ৪৮ জন, অস্থায়ী ৫৩ জন; সহযোগী অধ্যাপক পদে স্থায়ী ৪৬ জন, অস্থায়ী ৭০ জন; সহকারী অধ্যাপক পদে স্থায়ী ৮১ জন, অস্থায়ী ৪৮ জন আর প্রভাষকদের মধ্যে স্থায়ী ৪৩২ জন, অস্থায়ী ২৯৯ জন। শিক্ষক-শিক্ষার্থীর অনুপাত ১.১৫। আরেক নামকরা প্রতিষ্ঠান নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটিতেও একই চিত্র। শিক্ষকদের মধ্যে অধ্যাপক স্থায়ী আছেন ৪৮ জন, অস্থায়ী ৭৪ জন; সহযোগী অধ্যাপক পদে স্থায়ী ৬৭ জন, অস্থায়ী ২৩ জন; সহকারী অধ্যাপক পদে স্থায়ী ৭২ জন, অস্থায়ী ৭ জন আর প্রভাষকদের মধ্যে স্থায়ী ২৮৭ জন আর অস্থায়ী ৩২ জন। শিক্ষক-শিক্ষার্থীর অনুপাত ১ দশমিক ৩৭।

শুধু ইনডিপেনডেন্ট, ব্র্যাক কিংবা নর্থ সাউথ নয়, দেশের প্রায় প্রতিটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের চিত্র একই। দেশে পাঠদান চলমান রয়েছে এমন ১০০ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকাংশই চলছে খণ্ডকালীন শিক্ষকদের দিয়ে। এর মধ্যে যারা আছেন তাদের মধ্যে নেই প্রয়োজনীয়সংখ্যক অধ্যাপক। মূলত প্রভাষকদের দিয়েই খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলছে শিক্ষা কার্যক্রম। মোট ১৬ হাজার ৪৯৮ শিক্ষকের মধ্যে ৮ হাজার ৪২২ জনই প্রভাষক।

বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর তদারকি প্রতিষ্ঠান বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের (ইউজিসি) ৮৯তম বার্ষিক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে এসব চিত্র। প্রতিবেদনটি গত বৃহস্পতিবার দুপুরে হস্তান্তর করা হয়েছে রাষ্ট্রপতি ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর আচার্যের কাছে। 

২০২২ সালের তথ্যের আলোকে প্রস্তুতকৃত এই প্রতিবেদন বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, পূর্ণকালীন অধ্যাপকের বেশিরভাগই বড় বড় চার-পাঁচটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে। বাকি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো মূলত চলছে নামকাওয়াস্তে কয়েকজন অধ্যাপক দিয়ে। একজনও স্থায়ী অধ্যাপক নেই এমন বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা তিনটি। এগুলো হলোÑ কক্সবাজার ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, বাংলাদেশ আর্মি ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি (বিএআইইউএসটি), কুমিল্লা এবং জেডএইচ সিকদার বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়। আর এক থেকে দুজন করে স্থায়ী অধ্যাপক রয়েছেন ২২টি বিশ্ববিদ্যালয়ে। এ ছাড়া ১০ জনের কম অধ্যাপক রয়েছেন এমন বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা ৭২টি। তথ্য বিশ্লেষণ করে আরও দেখা যায়, দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে সর্বমোট শিক্ষকসংখ্যা ছিলেন ১৬ হাজার ৫০৮ জন। এর মধ্যে পূর্ণকালীন শিক্ষক ১২ হাজার ১৩ জন আর খণ্ডকালীন ৪ হাজার ৪৯৫ জন। এর আগে ২০২১ সালে পূর্ণকালীন শিক্ষক ছিলেন ১২ হাজার ৮২ জন, আর খণ্ডকালীন ছিলেন ৩ হাজার ৩১১ জন। সেই হিসেবে ২০২২ সালে ৬৯ জন পূর্ণকালীন শিক্ষক কমেছে আর ১ হাজার ১৮৪ জন খণ্ডকালীন শিক্ষক বেড়েছে। পূর্ণকালীন শিক্ষকের সংখ্যা হ্রাস এবং খণ্ডকালীন শিক্ষকের সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় অসন্তোষ প্রকাশ করা হয়েছে বার্ষিক প্রতিবেদনে।

২০২২ সালের পূর্ণকালীন শিক্ষকদের মধ্যে অধ্যাপক ৮৫৯, সহযোগী অধ্যাপক ৯৮৬, সহকারী অধ্যাপক ৩ হাজার ২৯৩, প্রভাষক ৬ হাজার ৮৪৫ ও অন্যান্য ২৪৭ জন এবং খণ্ডকালীন শিক্ষকদের মধ্যে অধ্যাপক ৯৯৯, সহযোগী অধ্যাপক ৫৪৫, সহকারী অধ্যাপক ৬৯৫, প্রভাষক ১,৫৭৭ ও অন্যান্য ৪৬২ জন। সেই হিসেবে মোট শিক্ষকের ৮ হাজার ৪২২ জন অর্থাৎ অর্ধেকই স্থায়ী কিংবা অস্থায়ী প্রভাষক।

ঠিক উল্টো চিত্র পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে। দেশের ৫০টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক সংখ্যা ১৬ হাজার ৩৯৯ জন। এর মধ্যে স্থায়ী অধ্যাপক ৪ হাজার ৬০৭ জন, খণ্ডকালীন ৬২০ জন, সহযোগী অধ্যাপক পদে স্থায়ী ২ হাজার ৮০৭ জন, খণ্ডকালীন ২৯১ জন, সহকারী অধ্যাপক পদে স্থায়ী ৫ হাজার ২০৯ জন, খণ্ডকালীন ৩২৯ জন, প্রভাষক পদে স্থায়ী ১ হাজার ৯০৮ জন, খণ্ডকালীন ২৪৭ জন।

পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় আর বেসকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে তুলনা করলে দেখা যায়, দেশের ৫০টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় চলছে যত শিক্ষক দিয়ে, প্রায় তত শিক্ষক দিয়ে চলছে দেশের ১০০টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়। 

পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে যেখানে মোট শিক্ষকের ৩১.৮৭ শতাংশ হচ্ছেন অধ্যাপক সেখানে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপক আছেন মাত্র ১১.২৫ শতাংশ। আর পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে যেখানে মোট শিক্ষকের ১৩ দশমিক ১৪ শতাংশ হচ্ছেন প্রভাষক সেখানে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রভাষক রয়েছেন ৫১ দশমিক ০১ শতাংশ।

পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে যেখানে খণ্ডকালীন শিক্ষক রয়েছেন মাত্র ৯ দশমিক ৩১ শতাংশ, সেখানে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে খণ্ডকালীন শিক্ষক রয়েছে ২৭ দশমিক ২২শতাংশ।

বিশ্বব্যাপী উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষক-শিক্ষার্থীর গড় অনুপাতের ন্যূনতম মানদণ্ড ধরা হয় ১:২০। অর্থাৎ প্রতি ২০ জন শিক্ষার্থীর জন্য একজন করে শিক্ষক থাকতে হবে। তবে দেশের ৫০টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় এই মানদণ্ড বজায় রাখতে পারেনি। মানারাত ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে শিক্ষক-শিক্ষার্থীর অনুপাত ১:৪০, যা মোটেও কাঙ্ক্ষিত নয় বলছে ইউজিসি। শিক্ষক-শিক্ষার্থীর অনুপাত ১:৩০-এর ওপরে ছিল ৭ বিশ্ববিদ্যালয়ে। এগুলো হলোÑ নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি (১:৩৭), মানারাত ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি (১:৪০), বিজিসি ট্রাস্ট ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ (১:৩২), প্রাইম ইউনিভার্সিটি (১:৩২), রয়েল ইউনিভার্সিটি অব ঢাকা (১:৩৩), ঈশাখা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, বাংলাদেশ (১:৩৫), এনপিআই ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ (১:৩৮), রবীন্দ্র সৃজনকলা বিশ্ববিদ্যালয় (১:৩৫) ও আরটিএম আল-কবির টেকনিক্যাল ইউনিভার্সিটি (১:৩৯)।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মানসম্পন্ন শিক্ষার জন্য শিক্ষক নিয়োগের দিকে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর উদ্যোক্তাদের মনোযোগ তেমন নেই। উপযুক্ত ও মানসম্পন্ন শিক্ষক নিয়োগের জন্য যে আর্থিক বিনিয়োগ প্রয়োজন তা তারা করতে চান না। ফলে দেশের মেধাবী চাকরিপ্রার্থীদের কাছে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকতার চাকরি আকর্ষণীয় হয়ে ওঠেনি। রাজধানীর বাইরে প্রতিষ্ঠিত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর অবস্থা বেশ নাজুক। সেগুলোতে চাহিদামতো খণ্ডকালীন শিক্ষকও পাওয়া যাচ্ছে না। ফলে শিক্ষক সংকট থাকছে। বিষয়টি স্বীকার করে ইউজিসির এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে খণ্ডকালীন শিক্ষক ভাড়া করার রেওয়াজ পুরোনো। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল কাজ লেখাপড়া ও গবেষণা হলেও ব্যয় সাশ্রয়ের জন্য তারা বিষয়টি উপেক্ষা করছেন। এ কারণে খুব কম বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ই প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে উঠেছে। বেশি প্রতিষ্ঠান সুনাম অর্জন করতে পারেনি। এতে শুধু শিক্ষার্থীরা নয়, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে উপযুক্ত শিক্ষক সংকটের বিষয়টি স্বীকার করেন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় সমিতির সহসভাপতি ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটির সাবেক ভিসি আব্দুল মান্নান চৌধুরীও। তিনি বলেন, ‘মানসম্মত শিক্ষার জন্য প্রথম শর্তই হচ্ছে শিক্ষক। শুধু শিক্ষক হলেই হবে না, শিক্ষককে হতে হবে ভালো, অভিজ্ঞতাসম্পন্ন ও নিবেদিত। ভালো শিক্ষকদের সংখ্যা বাড়াতে না পারলে মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের যতগুলো বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে সেগুলোকে উপযুক্ত প্রতিষ্ঠান হিসেবে দাঁড় করানোর জন্য পর্যাপ্ত শিক্ষক দেশে নেই। নতুন বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর অবস্থা আরও বেহাল। তারা এত কিছু অ্যাফোর্ড করতে পারছে না। সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো বেসরকারিতেও শিক্ষকদের সুযোগ-সুবিধা বাড়াতে হবে। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে পিএইচডি ও এমফিল ডিগ্রি অর্জনের সুযোগও দিতে হবে। এতে গবেষণা বাড়বে এবং মানসস্মত শিক্ষার সুযোগ তৈরি হবে।’ 

বাড়ছে বিশ্ববিদ্যালয়, কমেছে শিক্ষার্থী

দেশে প্রতিনিয়ত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা বাড়ছে, কমছে শিক্ষার্থীর সংখ্যা। ২০১৫ সালে দেশে পাঠদান চলা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ছিল ৮৩টি। তখন শিক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল ৩ লাখ ৫০ হাজার ১৩০টি। আর ২০২২ সালে পাঠদান চালু থাকা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১০০টি। তবে শিক্ষার্থীর সংখ্যা কমে দাঁড়িয়েছে ৩ লাখ ৪১ হাজার ৯৮ জনে।

তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে এই ৩ লাখ ৪১ হাজার ৯৮ শিক্ষার্থীর মধ্যে ছাত্রী ১ লাখ ৫৮৫ জন, ২ জন তৃতীয় লিঙ্গ এবং বিদেশি শিক্ষার্থী ১ হাজার ২৮৭ জন।

পরিসংখ্যান অনুযায়ী, সর্বোচ্চ নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটিতে ২২ হাজার ৭৫৪, দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি ১৯ হাজার ৬০৭, তৃতীয় সর্বোচ্চ ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি ১৬ হাজার ৩৭৫, চতুর্থ সর্বোচ্চ ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটি ১৩ হাজার ৩৯১ জন এবং সর্বনিম্ন ৪৩ শিক্ষার্থী রয়েছেন ইউনিভার্সিটি অব স্কিল এনরিচমেন্ট অ্যান্ড টেকনোলজিতে।

দেশের শিক্ষার্থী কমার পাশাপাশি বিদেশি শিক্ষার্থীও কমেছে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে। ২০১৩ সালে বিদেশি শিক্ষার্থী ছিল ১ হাজার ৬১২ জন, তা ২০২২ সালে কমে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ২৮৭ জন। তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, ২০১৭ সালে বিদেশি শিক্ষার্থী বেড়ে দাঁড়িয়েছিল ১ হাজার ৯৭৭ জনে। এরপর ধারাবাহিকভাবে তা কমতে থাকে।

গবেষণায় বরাদ্দ নেই ১৫ বিশ্ববিদ্যালয়ে

২০২২ সালে ৮৫টি বিশ্ববিদ্যালয় গবেষণা খাতে কমবেশি অর্থ ব্যয় করেছে। বাকি ১৫টি বিশ্ববিদ্যালয় কোনো ব্যয়ই করেনি গবেষণায়। এই খাতে সর্বমোট ব্যয় ছিল প্রায় ১৩৯৩১.৪৮ লাখ টাকা, যা গড় হিসাবে ১৬৫.৮৫ লাখ টাকা। এর আগে ২০২১ সালে ৭৮টি বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা খাতে সর্বমোট ব্যয় ছিল প্রায় ১১,৯৮৮.০০ লাখ টাকা, যা গড় হিসাবে ছিল ১৫৩.৬৯ লাখ টাকা।

ইউজিসি বলছে, ২০২২ সালে গবেষণা খাতে অর্থ বরাদ্দ গত বছরের তুলনায় বৃদ্ধি পেয়েছে। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রতিষ্ঠিত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০২১ সালের তুলনায় গবেষণা খাতে বরাদ্দ বৃদ্ধি পেয়েছে। গত কয়েক বছরের পরিসংখ্যান থেকে দেখা যায়, গবেষণা খাতে অর্থ বরাদ্দ রাখা বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি পাচ্ছে, যা ইতিবাচক। অপেক্ষাকৃত নতুন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয়ও বরাদ্দ রাখা হয়েছে। যেসকল বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় সম্প্রতি শিক্ষা কার্যক্রম শুরু করেছে সংগত কারণেই এসব বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণা খাতে বরাদ্দ দেওয়া সম্ভব হয়নি।

ইউজিসির এক কর্মকর্তা বলেন, আইন অনুযায়ী প্রত্যেকটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় তাদের নিজ নিজ বার্ষিক বাজেটের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ গবেষণার কাজে ব্যয় করার কথা। উচ্চ শিক্ষার গুণগত মানোন্নয়নের পাশাপাশি জাতীয় উন্নয়নের কথা বিবেচনায় রেখে পরবর্তী শিক্ষা বছর থেকে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় নিয়মিতভাবে গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনায় প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ ও ব্যয় করবে বলে আশাবাদী তারা।

বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে উপযুক্ত শিক্ষক নিয়োগ এবং গবেষণার দিকে মনোযোগ না দেওয়ার বিষয়টি সম্পর্কে ইউজিসির সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক আব্দুল মান্নান বলেন, ‘আমাদের দেশের প্রাইভেট ইউনিভার্সিটিগুলো হয়ে গেছে টিচিং ইউনিভার্সিটি। বেশিরভাগ ইউনিভার্সিটিতে গবেষণা হয় না, হয় শুধু পাঠদান। সেখানেও রয়েছে অভিজ্ঞ শিক্ষকের সংকট। খণ্ডকালীন প্রভাষকদের দিয়ে গুণগত শিক্ষা নিশ্চিত করা সম্ভব নয়।’

চেয়ারম্যানের অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকা ইউজিসির সদস্য অধ্যাপক মুহাম্মদ আলমগীর বলেন, ‘আমরা যদি মানসম্মত শিক্ষা দিতে চাই, তাহলে আমাদের সম্পদের প্রয়োজন। একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাথমিক সম্পদ শিক্ষক এবং শিক্ষার্থী। মানসম্মত শিক্ষা পেতে হলে মানসম্পন্ন শিক্ষকের বিকল্প নেই। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো মানসম্মসত শিক্ষক বাড়াতে আমরা আরও কঠোর হব।’

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা