জাভেদ রায়হান, কুবি
প্রকাশ : ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ১২:১১ পিএম
আপডেট : ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ১২:১৬ পিএম
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়। প্রবা ফটো
পদোন্নতি বিষয়ে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও উপাচার্য মুখোমুখি অবস্থান নিয়েছেন। শিক্ষকদের অভিযোগ- নীতিমালার বাইরে গিয়ে অতিরিক্ত শর্ত আরোপ করে বেকায়দায় ফেলা হচ্ছে তাদের। তবে উপাচার্য এএফএম আবদুল মঈন বলছেন, শিক্ষকদের কোয়ালিটি বাড়ানোর জন্য নীতিমালার বাইরে অতিরিক্ত গবেষণার শর্ত আরোপ করা হচ্ছে।
শিক্ষকদের অভিযোগ- পদোন্নতির ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশাপাশি এককভাবে কিউ-ওয়ান মানের জার্নালে গবেষণা প্রকাশের অতিরিক্ত শর্ত আরোপ করা হচ্ছে। আগে এই অতিরিক্ত শর্ত ছিল না। কখনও কখনও দেখা যায়, সিনিয়র শিক্ষকদের আগে জুনিয়র শিক্ষকরা প্রমোশন পেয়ে যাচ্ছেন। এ ব্যাপারে উপাচার্য বলেন, একজন শিক্ষক যদি গবেষণা না করেন, তাহলে তার পদোন্নতি হবে না। একজন জুনিয়র শিক্ষকের যদি ভালো গবেষণা থাকে, তাহলে তাকে অবশ্যই পদোন্নতি দেওয়া হবে। যে আগে পাবলিশ করতে পারছেন, তার আগে পদোন্নতি হচ্ছে। এটি শুধু কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে না, সব জায়গায় একই নিয়ম।
নতুন অতিরিক্ত শর্তারোপের ব্যাপারে উপাচার্য বলেন, ‘আমি বিশ্ববিদ্যালয়কে এগিয়ে নিতে চাই। আগে আমাদের ভিশন ছিল না। এখন একটা ভিশন আছে। সেই ধারাবাহিকতায় আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়কে এগিয়ে নিতে এবং শিক্ষকদের মান বাড়াতে এই উদ্যোগ।’ তিনি বলেন, ‘শুধু নীতিমালা দেখেই যদি আমরা প্রমোশন দিই, তাহলে তো আমাদের বোর্ড বসাতে হয় না। বোর্ডের কাজ যাচাই-বাছাই করা। একজন শিক্ষক অধ্যাপক হিসেবে যোগ্য কি না বা সহযোগী অধ্যাপক হিসেবে যোগ্য কি না তা যাচাই-বাছাই করতে হবে।’
শিক্ষকদের অভিযোগ- বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক সংকট রয়েছে। একেকজন শিক্ষককে চার-পাঁচটা করে কোর্স নিতে হচ্ছে। ক্লাসে এত সময় দিয়ে, অন্য আনুষঙ্গিক কাজ করে, এক বছরের মধ্যে কিউ-ওয়ান জার্নালে গবেষণা প্রকাশ করা প্রায় অসম্ভব। তবে এ ব্যাপারে উপাচার্য বলছেন, ‘যারা বলছেন শিক্ষক সংকট, তারা বছরের পর বছর বিদেশ থাকছেন। বিদেশে উচ্চশিক্ষা নিয়ে কোনো শিক্ষক দেশে এলে বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্যই ভালো, কিন্তু দেখা যায় কেউ কেউ ফিরে আসেন না। আবার কেউ দুই বছরের জায়গায় চার বছর কাটান। তাহলে শিক্ষক সংকট হবে না কেন?’
পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. আবু তাহের বলেন, ‘আগে ছিল স্বীকৃত জার্নালে একটা পেপার পাবলিশের নিয়ম। উনি (উপাচার্য) ইউজিসির নিয়মে ভালো ইমপ্যাক্ট ফ্যাক্টর জার্নালের কথা বলতে পারেন। কিন্তু আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে কি এমন সুযোগ-সুবিধার ব্যবস্থা আছে যে, উনি কিউ-ওয়ান, কিউ-টু মানের জার্নালে পাবলিকেশন চান? গবেষণার পরিবেশ তৈরি না করেই এভাবে পুশ করলে তো হবে না।’
সার্বিক বিষয়ে উপাচার্য বলেন, ‘পদোন্নতির বেলায় বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের জন্য একটা কাঠামো আছে। তাদের আপগ্রেডেশন বোর্ড ও নীতিমালা আছে। বোর্ডে দেশসেরা অধ্যাপকরা থাকেন। তাদের দুজন আমাদের সিন্ডিকেট থেকে এবং তিনজন মহামান্য রাষ্ট্রপতি মনোনীত। আর আমি পদাধিকারবলে চেয়ারম্যান। এখানে ওই সদস্যরাই সব করেন। আমার কোনো প্রভাবই নেই।’